ছোট ব্যবসায়ীদের কাছে জনপ্রিয় হচ্ছে এজেন্ট ব্যাংকিং

বর্তমানে ছোট ব্যবসায়ীদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এজেন্ট ব্যাংকিং। এই ব্যাংকিং এর সর্বোচ্চ ২৯ শতাংশ গ্রাহক ছোট ব্যবসায়ী। এর পরেই আছে গৃহিনীদের অবস্থান; যা ১৮ শতাংশ।

আজ রোববার,১৪ মে মিরপুরে বিআইবিএম অডিটোরিয়ামে ‘এজেন্ট ব্যাংকিং: আর্থিক অন্তর্ভুক্তির কার্যকারিতা’বিষয়ক গোলটেবিল বৈঠকে প্রতিষ্ঠানটির এক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে আসে। গবেষণা প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন বিআইবিএমের পরিচালক ও অধ্যাপক ড. প্রশান্ত কুমার ব্যানার্জি। বৈঠকে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী।

যেখানে ব্যাংকের শাখা নেই ওইসব এলাকার ব্যাংকিং সুবিধা বঞ্চিতদের ব্যাংকিং সেবার আওতায় আনতে চালু হয় এজেন্ট ব্যাংকিং। বাংলাদেশ ব্যাংক ২০১৪ সালের জুনে ব্যাংকিং খাতে এজেন্ট ব্যাংকিং এর কার্যক্রম শুরুর অনুমোদন দেয়। সর্বশেষ হিসেবে ১২টি ব্যাংক আড়াই হাজার এজেন্টের মাধ্যমে এ ধরনের ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

বিআবিএমের প্রতিবেদনে বলা হয়, এজেন্ট ব্যাংকিং এর ১৫ শতাংশ গ্রাহক সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবী, ৭ শতাংশ গ্রাহক শিক্ষার্থী। প্রত্যন্ত অঞ্চলেও এজেন্ট ব্যাংকিং এর সেবা দেয়ায় কৃষকদের মধ্যেও এজেন্ট ব্যাংকিং জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। বর্তমানে মোট গ্রাহকের ৭ শতাংশ কৃষক। এমনকি ৩ শতাংশ দিনমজুরও এজেন্ট ব্যাংকিং এর মাধ্যমে ব্যাংকে তাদের হিসেব খুলেছে।

অঞ্চলভিত্তিক জনপ্রিয়তা সম্পর্কে প্রতিবেদনে বলা হয়, এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছে ঢাকা বিভাগ। মোট গ্রাহকের ২৪ শতাংশ এ অঞ্চলের বাসিন্দা। এর পরেই রয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগ। ১৮ শতাংশ গ্রাহক চট্টগ্রামের বাসিন্দা। জনপ্রিয়তার দিক দিয়ে তৃতীয় অবস্থানে রাজশাহী। এছাড়া সবচেয়ে কম জনপ্রিয় সিলেট বিভাগ; যেখানে মোট গ্রাহকের মাত্র ৫ শতাংশ এ অঞ্চলে বসবাস করে।

গোলটেবিল বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ, বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধুরী প্রমুখ।

খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, এজেন্ট ব্যাংকিং দিন দিন জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। এটা আমাদের জন্য ইতিবাচক। তবে এখানে এখন এক ধরনের গোপনীয় ব্যাংকিং শুরু হয়েছে। যা নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন। তিনি বলেন, গোপনীয় এজেন্টরা এর মাধ্যমে হুন্ডি ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। ক্রমেই এদের সংখ্যা বাড়ছে। দেশের স্বার্থে যা নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন। এসব গোপন এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।

এস কে সুর চৌধুরী বলেন, বেশ কয়েকটি ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং এর লাইসেন্স নিলেও হাতে গোনা দু-তিনটি ব্যাংক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এ সংখ্যা আরও বাড়ানো প্রয়োজন।

বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধুরী বলেন, বিপুল সংখ্যক জনগোষ্ঠী এখনও ব্যাংকিং সেবা পায় না। টেকসই উন্নয়নের জন্য এসব লোককে ব্যাংকিং সেবার আওতায় আনতে হবে। তিনি বলেন, মোবাইল ব্যাংকিং , এজেন্ট ব্যাংকিং এবং স্কুল ব্যাংকিং সবই মূলত ব্যাংক জাল বাড়ানোর জন্য। এ কারণে এ ধরণের ব্যাংকিং এর জন্য একটি সমন্বিত নীতিমালা জরুরি।

আর্থিক শিক্ষা দিতে না পারলে এজেন্ট ব্যাংকিং টিকবে না বলে মন্তব্য করেন তিনি। একই সঙ্গে ব্যাংকগুলোকে একই স্থানে অতিরিক্ত শাখা না খোলার আহ্বান জানান বিআইবিএমের মহাপরিচালক।

আজকের বাজার:এলকে/এলকে/ ১৪ মে ২০১৭