জাতীয় সবজি মেলা ২০২২ এ এসিআই সীডের প্রথম স্থান অর্জন

“নিরাপদ সবজি চাষ, স্বাস্থ্য পুষ্টি বারো মাস” এ স্লোগানকে সামনে রেখে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের কৃষি মন্ত্রণালয় এর উদ্যোগে কৃষিবিদ ইনষ্টিটিউশন বাংলাদেশ চত্বর, ফার্মগেট, ঢাকায় অনুষ্ঠিত হলো জাতীয় সবজি মেলা ২০২২। মাননীয় কৃষিমন্ত্রী ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক এমপি গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২ তারিখ এ সরকারি ও বেসরকারি মোট ৫৩টি প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণে তিন দিনব্যাপী এ মেলার উদ্বোধন করেন।

মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে এ প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন জনাব মো: সায়েদুল ইসলাম, সচিব, কৃষি মন্ত্রণালয়। মেলায় উপস্থিত বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান তাদের উদ্ভাবিত বিভিন্ন প্রযুক্তি ও প্রযুক্তির উৎকর্ষতা উপস্থাপনের জন্য মেলায় অংশগ্রহনকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে পুরষ্কৃত করা হয়। এতে প্যাভিলিয়ন পর্যায়ে প্রথম পুরষ্কার লাভ করে এসিআই সীড।

এসিআই সীড ভ্যালু চেইন অর্থাৎ সবজির জাত উন্নয়ন গবেষণা থেকে শুরু করে বাজারজাতকরণ পর্যন্ত বিভিন্ন পর্যায়ের কার্যক্রম জাতীয় সবজি মেলায় আগত বিভিন্ন সরকারী ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাবৃন্দ, পরিকল্পনা প্রণয়নকারী, বীজ ব্যবসায়ী, সবজি ব্যবসায়ী, সবজি রপ্তানীকারক, কৃষক ও সাধারণ দর্শনার্থীদের মাঝে অত্যন্ত সুন্দরভাবে তুলে ধরে, যা সকলের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনা সৃষ্টি করে।

এসিআই সীড, নিজস্ব গবেষণা থেকে উদ্ভাবিতও ১২টি সবজি ফসলের ৩৭টি জাত সহ মোট ৩৯টি সবজি ফসলের ১১০টি জাত বাজারজাত করছে, যা ইতিমধ্যে কৃষকদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলছে। এসিআই সীড কৃষকদের পরিপূর্নভাবে বীজের সমাধান দেওয়ার লক্ষ্যে নিয়ে কাজ করে এবং সবজি ফসলের বিভিন্ন উচ্ছফলনশীল হাইব্রিড ও ওপি জাতের প্রদর্শন করে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য এসিআই সীডের হাইব্রিড লাউ – ময়না, মার্শাল সুপার, হাইব্রিড করলা – পাপিয়া সুপার, পাপিয়া সুপার গোল্ড, হাইব্রিড মিষ্টি কুমড়া – মোহনা, সুইট বয়, সুইট বেবি, হাইব্রিড ঢ়েড়ঁশ – বুলেট, গ্রীনসুপার, হাইব্রিড ফুলকপি – স্নো হোয়াইট, হাইব্রিড শসা – মেসি, হাইব্রিড বেগুন – পার্পল লং প্রভৃতি। এছাড়া টমেটো, ঝিঙ্গা, চিচিঙ্গা, ধুন্দল, ঢেঁড়স, মরিচ, ক্যাপসিকাম, গাজর সহ বিভিন্ন ফসলের হাইব্রিড জাত প্রদর্শন করা হয়।

এসিআই সীড বর্তমান বাজারজাতকৃত ও পরবর্তী প্রজন্মের বিভিন্ন জাতসহ মোট ২১টি আলুর জাত প্রদর্শনের ব্যবস্থা করে, যাতে অত্যন্ত সম্ভাবনাময় খাবার আলুর জাতসহ, শিল্পজাত ও রপ্তানিযোগ্য আলুর জাত রয়েছে। রোগ প্রতিরোধী এ জাতগুলো প্রচলিত জাতের তুলনায় অধিক ফলনশীল, প্রসেসিং লস গড়ে ১-১.৫% ও ড্রাই মেটার ২২% এর উপর। কোম্পানি প্রত্যাশা করছে যে, পরবর্তী প্রজন্মের জাতগুলো বাংলাদেশে আলু উৎপাদনে বৈপ্লবিক পরিবর্তন নিয়ে আসবে।

এসিআই সীড “বিপ্লব” নামে অত্যন্ত সম্ভাবনাময় গ্রীষ্মকালীন একটি পেঁয়াজের জাত মেলায় প্রদর্শন করে, যার হেক্টর প্রতি ফলন ৩০-৩২ মেট্রিক টন। “বিপ্লব” উচ্চ তাপমাত্রা ও অধিক বৃষ্টি সহনশীল জাত, যা এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত চাষ করা যায়। জাতটি চারা লাগানোর ১০০-১১০ দিনের মধ্যে উত্তোলন করা যায়। দেশে বর্তমানে পেঁয়াজের বার্ষিক চাহিদা প্রায় ৩৫ লক্ষ মেটিক টন। সেখানে আমাদের দেশে পেঁয়াজের মোট উৎপাদন ২৫-২৬ লক্ষ মেট্রিক টন। ফলে প্রতি বছর প্রায় ১০ লক্ষ মেট্রিক টন পেঁয়াজ বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করতে হয়। পেঁয়াজ উৎপাদনে স্ব-নির্ভর হওয়ার ক্ষেত্রে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষ একটি গুরুত্বপূর্ন ভ‚মিকা পালন করতে পারে। উচ্চ ফলনশীল “বিপ্লব” চাষ করলে একদিকে কৃষক যেমন লাভবান হবে, তেমনি দেশে পেঁয়াজের ঘাটতি মেটানোও সম্ভব হবে।