ঢাদসিকের অভিযানে ১৪ মামলায় ৮৮ হাজার টাকা জরিমানা

সরকার ঘোষিত সর্বাত্মক লকডাউনের আওতায় আরোপিত বিধিনিষেধ তদারকিতে আজ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ঢাদসিক) আওতাধীন এলাকায় একযোগে ৯ ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান পরিচালনা করেছে।
ঢাদসিক এর অঞ্চল ১-৬ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাদের (আনিক) পাশাপাশি করপোরেশনের সম্পত্তি বিভাগের তিনজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ভ্রাম্যমাণ আদালতসমূহের নেতৃত্ব দেন।
অভিযানে সরকারি বিধিনিষেধ অমান্য করা, স্বাস্থ্যবিধি ভঙ্গ করা, অনুমোদনবিহীন দোকানপাট খোলা রাখা ও মশার লার্ভা পাওয়ায় বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মোট ১৪টি মামলা দায়ের করা হয়। এসব মামলায় সর্বমোট ৮৮ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
অঞ্চল-২ এর আনিক সুয়ে মেন জো এর নেতৃত্বে ১২ নং ওয়ার্ডের মালিবাগ বাজার, সিপাহীবাগ বাজার, শাহজাহানপুর বাজার সংলগ্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় মাস্ক না পরায় ১০ ব্যক্তিকে সাময়িক আটকে রেখে পরবর্তীতে তাদেরকে মাস্ক পরিধান করিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। এ সময় যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চলা এবং অননুমোদিতভাবে দোকান খোলা রাখায় প্রায় ৩০ ব্যক্তি ও দোকানকে সতর্ক করা হয়।
অঞ্চল-৩ এর আনিক বাবর আলী মীর চকবাজার এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। এ সময় ১৫টির অধিক অননুমোদিত দোকান বন্ধ করে দেওয়া হয়।
অঞ্চল -৪ এর আনিক মো. হায়দর আলী বাবুবাজার, লক্ষীবাজার, বংশাল এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় অনুনোমোদিত ১২টি দোকান বন্ধ করে দেওয়া হয়।
অঞ্চল -৫ এর আনিক মো. শাহীনুর আলম ৫০ নং ওয়ার্ডের পশ্চিম যাত্রাবাড়ী পঞ্চায়েত বাজার ও ওয়ার্ড-৪৮ নংং ওয়ার্ডের সায়েদাবাদ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানে অননুমোদিত ২০টির অধিক দোকান বন্ধ করে দেওয়া হয়।
অঞ্চল-৬ এর আনিক মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন সরকার ৭০নং ওয়ার্ডের ধীৎতপুর বাজার হতে ইটাখোলা পর্যন্ত এবং ৭৫ নং ওয়ার্ডের গৌড়নগর, নাসিরাবাদ এলাকায় লকডাউন সংক্রান্ত বিধিনিষেধ মেনে চলতে সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করেন। অভিযানে অনুনোমোদিতভাবে খোলা রাখা ১০টি দোকান বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং অপ্রয়োজনে ঘুরাফেরা করা প্রায় ৫০ ব্যক্তিকে সতর্ক করা হয়।
এদিকে ঢাদসিক এর সম্পত্তি কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মুনিরুজ্জামানের নেতৃতত্বাধীন ভ্রাম্যমাণ আদালত আজ ৮ নং অঞ্চলের ৬৬ নং ওয়ার্ডের বামৈল বাজারে অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় সরকারি নির্দেশনা না মানায় ৭টি মামলার মাধ্যমে ৪ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এ এইচ ইরফান উদ্দিন আহমেদ আজ মানিকনগর, ধলপুর, কমলাপুর স্টেডিয়াম, আর কে মিশন রোড এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। এ সময় সরকারি বিধিনিষেধ অমান্য করে খাবার পরিবেশনসহ স্বাস্থ্যবিধি ভঙ্গ করার অপরাধে ৫টি মামলা দায়ের ও ৯ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তানজিলা কবীর ত্রপার নেতৃত্বাধীন আদালত আজ এডিস মশার লার্ভা নিয়ন্ত্রণের লক্ষে ১৯ নং ওয়ার্ডের সিদ্ধেশ্বরী এলাকার ১৮টি স্থাপনায় অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানে নির্মাণাধীন ২টি বাড়িতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়ায় ২টি মামলা দায়ের ও নগদ ৭৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
জরুরি প্রয়োজনে বের হওয়া মাস্কবিহীন লোকজন, রিক্সাচালক ও দোকানীদের মাঝে করপোরেশনের পক্ষ হতে অঞ্চল-২ এর আদালত ৫০টি, অঞ্চল-৩ এর আদালত ১০০টি, অঞ্চল-৬ এর আদালত ৫০টি, সম্পত্তি কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মুনিরুজ্জামান ৫০টি এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এ এইচ ইরফান উদ্দিন আহমেদ ৫০টি মাস্ক বিতরণ করেন।
অভিযান প্রসঙ্গে অঞ্চল-৬ এর আনিক মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন সরকার বলেন, ‘প্রতিদিনই আমরা লকডাউনে আরোপিত স্বাস্থ্যবিধিসহ অন্যান্য বিধিনিষেধ তদারকি ও কার্যকর করতে অভিযান পরিচালনা করছি। পাশাপাশি প্রতিদিনই জনগণকে উদ্বুদ্ধ ও সচেতন করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। শুধু অভিযান দিয়েই লকডাউন দৃশ্যমানভাবে কার্যকর করতে হলে আমাদেরকে আরও বোশি কঠোরতা প্রদর্শন করতে হবে, জেল-জরিমানা বাড়াতে হবে। কিন্তু আমরা জেল-জরিমানায় না গিয়ে জনগণের সহযোগিতা চাই। লকডাউন কার্যকরে জনগণের আরো বেশি সচেতন হতে হবে এবং দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।’
অভিযানকালে আনিক-২ এর সাথে স্থানীয় কাউন্সিলর মামুনুর রশীদ, আনিক-৬ এর সাথে ৭০ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. আতিকুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
অভিযানকালে সব ক’টি আদালতই লকডাউনের নির্দেশনা মেনে চলতে জনসাধারণকে উদ্বুদ্ধ করার লক্ষে মাইকিং করেন। এছাড়াও বিনা প্রয়োজনে অযথা বাড়ির বাইরে বের না হওয়া, মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করা এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার ওপর জোর দেন।