প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে তিস্তা নিয়ে আলোচনা হবে

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন ভারত সফরের সময় তিস্তা চুক্তি সই ও গঙ্গা ব্যারাজ ইস্যুকে সমভাবে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে পানি সম্পদ মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর এ সফরে তিস্তাসহ ৮ নদী নিয়ে আলোচনা হবে। এছাড়া গঙ্গা ব্যারাজ তৈরি হলে বাংলাদেশের কোনো ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়বে কি না, তা আবার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

রবিবার (৫ মার্চ) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ)সাগর-রুনী মিলনায়তনে ‘মিট দ্য রিপোর্টার্স’ অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। ডিআরইউ সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশার সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মুরসালীন নোমানীর সঞ্চালনায় এসময় সংগঠনের সহ-সভাপতি আবু দারদা জোবায়ের, যুগ্ম-সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক জিলানী মিল্টনসহ কার্যনির্বাহী কমিটির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, ফারাক্কা ব্যারাজ নির্মাণের পর থেকে বাংলাদেশ গঙ্গায় পানি কম পাচ্ছে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অনেক নদী মরে গেছে। ব্যারেজ নির্মাণের আগে গঙ্গায় প্রবাহ ৫৪-৫৫ হাজার কিউসেক পানি পেত বাংলাদেশ। এখন শুষ্ক মওসুমে তা কমে দাঁড়িয়েছে ২০-২২ হাজার কিউসেকে। পানি প্রবাহ কমে যাওয়ায় বাংলাদেশের অনেক নদী মরে গেছে, যাচ্ছে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তিস্তা চুক্তি সইয়ের ব্যাপারে ভারতের এখানকার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং বাংলাদেশকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। আশা করি, সেটা থেকে তারা বিচ্যুত হবেন না।

আগামী এপ্রিল মাসের প্রথম দিকে প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের কথা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর এ সফরে তিস্তা চুক্তিতে অগ্রগতি হবে কি না, জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, তিস্তা নিয়ে দুই দেশের মধ্যে কথা হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত আসলে কী ঘটতে যাচ্ছে, তা বলা যাচ্ছে না। এটি নিয়ে তাদের (ভারত) অভ্যন্তরীণ সমস্যা রয়েছে।

তিস্তা চুক্তি সইয়ের সম্ভাবনা কম, এজন্য বাংলাদেশ এখন গঙ্গা ব্যারাজের ওপর বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে কিনা-জানতে চাইলে মন্ত্রী জানান, আমরা দুটো বিষয়ই গুরুত্ব দিচ্ছি। দুটোই আমাদের প্রয়োজন এবং সেভাবেই চেষ্টা চলেছ। এই বিষয়গুলো নিয়ে যখন আমরা কাজ করি, তখন কিছুটা বাস্তববাদী হতে হয়। কাজেই এসব সমস্যা মাথায় রেখেই এগুতে হয়।

গঙ্গা ব্যারাজ নির্মাণ প্রসঙ্গে পানি সম্পদ মন্ত্রী বলেন, গঙ্গা ব্যারাজ যে এলাকায় হবে, তার এক-চতুর্থাংশ ভারতে পড়েছে।তাই ভারতের কনসার্ন প্রয়োজন আছে। এছাড়া এই প্রকল্পের ব্যাপারে তাদের কিছু প্রশ্ন ছিল। বিশেষ করে পানির উল্টো প্রবাহ, পলি জমে ওঠার ব্যাপারে তাদের প্রশ্ন ছিল। এ বিষয়গুলো নিয়ে আমরা তাদের প্রশ্নের জবাব দিয়েছি। কাজেই দুই দেশের বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি কমিটি হয়েছে। আশা করি, এই কমিটি তাদের সমীক্ষা প্রতিবেদন দেবে। ফারাক্কা ব্যারাজের ব্যাপারে ভারতের রাজনৈতিক মহলে বিতর্ক চলেছে। বিশেষ করে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার সম্প্রতি জোরালোভাবে ফারাক্কা ব্যারেজের নেতিবাচক বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন। তাই গঙ্গা ব্যারাজ তৈরি হলে আমাদের দেশে কোনো ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়বে কি না, তা আমরা আবার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখছি।

সুত্র: দ্য রিপোর্ট