‘যাবজ্জীবন’মানে আমৃত্যু কারাভোগ

আজকের বাজার ডেস্ক: এখন থেকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড অর্থ আমৃত্যু কারাবাস। কোনো মামলায় যদি আপিল বিভাগ বা হাইকোর্ট বিভাগ মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়, তবে সেক্ষেত্রে আসামীর স্বাভাবিক মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত কারাভোগ করতে হবে।

সোমবার,২৪এপ্রিল ১৫ বছর আগে সাভারে সংঘটিত জামান হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়ে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায়ে এ কথা বলা হয়েছে।

আদালত বলেছে, দণ্ডবিধির ৫৩ ধারা ও ৪৫ ধারায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হবে আমৃত্যু কারাবাস।

আদালতের এ রায়ের কপি পাওয়ার পর যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত অপরাপর আসামীর ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্র সচিব ও কারা মহাপরিদর্শককে বলা হয়েছে।

ফৌজদারি কার্যবিধিতে বলা হয়েছে, দণ্ডের মেয়াদসমূহের ভগ্নাংশসমূহ হিসাব করার ক্ষেত্রে যাবজ্জীবন কারাবাস, ৩০ বছর মেয়াদী কারাবাসের সমতুল্য বলে গণ্য হবে।

চার বিচারপতির স্বাক্ষরের পর অবকাশকালীন সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে ৯২ পৃষ্ঠার রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ করা হয়।

আপিল বিভাগ থেকে প্রকাশ করা পূর্ণাঙ্গ রায়ে বলা হয়েছে, দণ্ডবিধির ৩০২ ধারা অনুযায়ী দোষী ব্যক্তি মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হবে এটাই বিধান। এক্ষেত্রে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডটা হচ্ছে ব্যতিক্রম। যখন এ ধরনের পরিস্থিতিতে কাউকে মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়, তখন অবশ্যই এর কারণ উল্লেখ করতে হয়।

রায়ে বলা হয়, যদি হাইকোর্ট বিভাগ বা এই আদালত (আপিল বিভাগ) মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন করেন তখন এবং নির্দেশ দেন যে, তার স্বাভাবিক মৃত্যু পর্যন্ত এই কারাদণ্ড ভোগ করবে, তখন এ ধরনের মামলায় সাজা কমানোর আবেদন গ্রাহ্য হবে না। দণ্ডবিধির ৫৭ ধারা সেখানেই প্রযোজ্য হবে, যেখানে সর্বোচ্চ দণ্ড হিসেবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ ধরনের বিধান যদি করা হয়, তখন সাজার ভগ্নাংশ গণনা করাটা অসম্ভব হয়ে পড়বে।

সাজা কমানোর ক্ষেত্রে কারাবিধি প্রশাসনিক আদেশ হিসেবে বিবেচিত। মৃত্যুদণ্ড অথবা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের মামলায় কোনো আদালত বিচারের প্রাথমিক পর্যায়ে আসামি যদি দোষ স্বীকার করেন, সেক্ষেত্রে সাজা দেয়ার ক্ষেত্রে আদালত বা ট্রাইব্যুনাল নমনীয় দৃষ্টিতে দেখতে পারেন। কিন্তু এ ধরনের মামলায় আদালতকে নিশ্চিত হতে হবে আসামি জেনে বা বুঝে দোষ স্বীকার করেছেন কি না।

আজকের বাজার:এলকে/এলকে/২৫এপ্রিল,২০১৭