রডে ১.৫% ভ্যাট চায় রিহ্যাব

নতুন ভ্যাট আইনে আবাসন শিল্পের অন্যতম কাচামাল রডের উপর মূল্যসংযোজন কর (ভ্যাট) ১.৫ শতাংশ করার দাবি জানিয়েছে রিয়েল এস্টেট হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব)। একই সঙ্গে ফ্ল্যাটের রেজিষ্টেশন ব্যয় কমিয়ে আনা, অপ্রদর্শিত আয় শর্তবিহীন বিনিয়োগের সুযোগ চেয়েছে সংগঠনটি। ১৩ মে শনিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে আগামী ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেট সামনে রেখে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান সংগঠনের নেতারা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন রিহ্যাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি লিয়াকত আলী ভূইয়া। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন রিহ্যাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী, রিহ্যাবের পরিচালক জহির আহমেদ এবং রিহ্যাবের কো-চেয়ারম্যান কামাল মাহমুদ। লিখিত বক্তব্যে লিয়াকত বলেন, বর্তমানে আবাসন খাতে যথাযথ অর্থ প্রবাহ না থাকা ও নির্মাণ ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় এ খাতের ক্রেতারা কোনো বিনিয়োগে যাচ্ছে না। ফলে নতুন করে আবাসন খাত আরও সংকটের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, ২০০৮-০৯ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের আওতায় আবাসন খাতে সিঙ্গেল ডিজিট সুদে দীর্ঘমেয়াদী ঋণ ব্যবস্থার প্রচলন ছিল। যা এ খাতে ক্রেতাদের জন্য অনেক ফলপ্রসূ ভুমিকা রেখেছিল। অনেকে নিজের কিছু মূলধন নিয়ে প্রায় ভাড়ার টাকায় ফ্ল্যাটের মালিক হয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ করে এই ঋণ সুবিধা বন্ধ হয়ে যায়, যার ফলে এই খাত সংকটের মধ্যে পড়ে।

লিয়াকত আরও বলেন, সিঙ্গেল ডিজিট সুদে ৩০ বছরের কিস্তিতে ঋণ দিলে ক্রেতা সাধারণ ভাড়া সমান কিস্তিতে ঋণ পরিশোধ করতে পারবে। এক্ষেত্রে সরকার বাংলাদেশ বিল্ডিং ফিন্যান্স করপোরেশনকে তহবিল প্রদানের মাধ্যমে আবাসন খাতে ঋণ বৃদ্ধি করতে পারে। এ অবস্থায় আবাসন খাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিঙ্গেল ডিজিট সুদে ৩০ বছর মেয়াদে দীর্ঘমেয়াদী রি-ফাইন্যান্সিং চালুকরণ জরুরি, যাতে মাসিক কিস্তি বাসা বাড়ার সমান হয়।

ভারপ্রাপ্ত এই সভাপতি আরও বলেন, সেকেন্ডারি বাজার ব্যবস্থার প্রচলন একদিকে যেমন এই শিল্পকে এগিয়ে নেবে, বাজারে অর্থের লেনদেন বাড়বে, অন্যদিকে সরকারও তার রাজস্ব আয় বৃদ্ধি করতে সক্ষম হবে। যে সকল ফ্ল্যাট প্রথম বিক্রয়ের পর ৫ বছরের মধ্যে পুনরায় বিক্রয় হবে, কেবল সেক্ষেত্রে রেজিষ্ট্রেশনে ১ শতাংশ হারে বিক্রয়ের জন্য সেকেন্ডারি মার্কেট চালু করা আবশ্যক। ৫ বছরের বেশি সময়ের ক্ষেত্রে ২ শতাংশ করা দরকার। ফলে নামমাত্র রেজিষ্ট্রেশন ব্যয় নির্ধারণ করে সেকেন্ডারি বাজার ব্যবসা প্রচলন করা জরুরি।

লিয়াকত আলী ভূইয়া বলেন, প্রতিটি নির্মাণ সামগ্রীর প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি ভ্যাট সরকার পাচ্ছে ফ্যাক্টরী ও পাইকারী বিক্রেতা থেকে। ভবন নির্মাণকালে অধিকাংশ ডেভেলপার সরাসরি নগদ অর্থে বিভিন্ন প্রকার নির্মাণ সামগ্রী ও সেবা ক্রয় করে থাকে। ফলে ভ্যাট ও উৎস কর সংগ্রহের দায়িত্ব পালন সম্ভবপর হয় না। এছাড়া অনেক নির্মাণ আইটেমের সরবরাহকারী প্রাতিষ্ঠানিকভাবে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে না; তাই এসব ভেন্ডরের কাছ থেকে কাগজপত্র সংগ্রহ করা যায় না। ফলে ডেভেলপাররা মারাত্মককভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এ অবস্থায় সাপ্লায়ার ভ্যাট ও উৎস কর সংগ্রহের দায়িত্ব থেকে ডেভেলপারকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

আজকের বাজার:এলকে/এলকে/১৩ মে,২০১৭