রমনা বটমূলে বোমা হামলার চূড়ান্ত শুনানি ১৪ মার্চ

রমনার বটমূলে পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানে বোমা হামলার ঘটনায় করা হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের হাইকোর্টে আপিল শুনানি শেষ হচ্ছে আগামী ১৪ মার্চ। ওইদিন রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম চূড়ান্ত শুনানি করবেন। বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) শুনানির নতুন এই তারিখ নির্ধারণ করেন।

এদিন আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ফরহাদ আহমেদ। আসামিদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এস এম শাহজাহান ও মোহাম্মদ আলী।

পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ফরহাদ আহমেদ উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ‘এই মামলায় উভয়পক্ষের শুনানি আগেই শেষ হয়েছে। বুধবার অ্যাটর্নি জেনারেল মহোদয়ের চূড়ান্ত শুনানি করার জন্য দিন ধার্য ছিল। কিন্তু অন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মামলায় ব্যস্ত থাকায় তার পক্ষে আমি আদালতে দুই সপ্তাহের সময় আবেদন করি। আদালত ১৪ মার্চ শুনানির দিন নির্ধারণ করেছেন। আশা করছি, ওই দিন শুনানি শেষে আদালত রায়ের দিন ঠিক করে দিবেন।’

গত ৮ জানুয়ারি পেপারবুক (মামলার বৃত্তান্ত) উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে এই আপিল শুনানি শুরু হয়। এরপর আসামিদের ডেথ রেফারেন্সের সঙ্গে সাত জনের করা পৃথক ছয়টি আপিলেরও শুনানি শেষ হয়েছে। মুফতি হান্নান, আকবর হোসেন, সুমন, শাহদাতউল্লাহ ও আবু তাহের পৃথক আপিল করেছেন। শেখ ফরিদ ও মো. ইয়াহিয়া মিলে করেছিলেন একটি আপিল। এর সঙ্গে রয়েছে মুফতি হান্নান, আকবর হোসেন ও সুমনের জেল আপিল।

২০০১ সালে রমনা বটমূলে পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানে বোমা মেরে হত্যা করা হয় ১০ জনকে। এ ঘটনায় নীলক্ষেত পুলিশ ফাঁড়ির তৎকালীন সার্জেন্ট অমল চন্দ্র চন্দ রমনা থানায় হত্যা ও বিস্ফোরকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দুটি মামলা করেন। ঘটনার প্রায় আট বছর পর দুই মামলায় ১৪ জনকে আসামি করে মামলার অষ্টম তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক আবু হেনা মো. ইউসুফ ২০০৮ সালের ৩০ নভেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

হামলার ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলায় ২০১৪ সালের ২৩ জুন ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ রুহুল আমিন রায় দেন। রায়ে মুফতি হান্নানসহ আটজনের মৃত্যুদণ্ড এবং ছয়জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়।

মুফতি হান্নান ছাড়া মৃত্যুদণ্ড পাওয়া অন্যরা হলেন-আকবর হোসেন, আরিফ হাসান সুমন, সাবেক উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুর ভাই মো. তাজউদ্দিন, হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর, আবু বকর ওরফে হাফেজ সেলিম হাওলাদার, আবদুল হাই ও শফিকুর রহমান। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পান শাহাদাত উল্লাহ জুয়েল, সাব্বির, শেখ ফরিদ, আব্দুর রউফ, ইয়াহিয়া ও আবু তাহের।

রাষ্ট্রপক্ষ জানায়, পেপারবুকের তথ্য অনুসারে ১৪ আসামির মধ্যে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া পাঁচ আসামি এখনো পলাতক। তাঁরা হলেন-তাজউদ্দিন, জাহাঙ্গীর আলম, আবু বকর, শফিকুর ও আবদুল হাই।

একই ঘটনায় বিচারিক আদালতে হত্যা মামলায় রায় হলেও বিস্ফোরক আইনে হওয়া মামলাটি এখনো বিচারাধীন।

সুত্র: দ্য রিপোর্ট