শীর্ষ ২০ ফার্মার ১৫টিই পুঁজিবাজারে নেই

পুঁজিবাজারে দেশের সবচেয়ে সম্ভাবনাময় খাত ওষুধ শিল্পের উপস্থিতি তেমন জোরালো নয়। ওষুধ বিক্রির দিক থেকে শীর্ষ ২০ কোম্পানির মধ্যে মাত্র পাঁচটি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়েছে। বাকী ১৫ কোম্পানির মধ্যে একটি পুঁজিবাজারে আসার প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে। অন্য কোম্পানিগুলো পুঁজিবাজারে আসবে কি-না, এলে কখন আসবে তা মোটেও স্পষ্ট নয়। ওষুধ শিল্প খাতের বিভিন্ন সূত্রের সাথে আলোচনা করে এ তথ্য জানা গেছে।

ওষুধ ও স্বাস্থ্য খাতে বিশ্বের সবচেয়ে বড় তথ্যসেবা ও প্রযুক্তি গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইএমএস এর তথ্য অনুসারে, দেশের শীর্ষ পাঁচ ওষুধ কোম্পানির মধ্যে তিনটি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত। কোম্পানি তিনটি হচ্ছে-স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস ও রেনাটা লিমিটেড। পুঁজিবাজারের বাইরে থাকা কোম্পানি দুটি হচ্ছে ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস ও অপসোনিন ফার্মা।

আইএমএসের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে সবচেয়ে বেশি ওষুধ বিক্রি করেছে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড; বিক্রির পরিমাণ ৮১৩ কোটি ১০ লাখ টাকা। দেশের ওষুধের বাজারে স্কয়ারের অংশ ছিল  ১৭ দশমিক ৯৯ শতাংশ।  আলোচ্য সময়ে স্কয়ার ফার্মার প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৭ দশমিক ৩২ শতাংশ।

দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ইনসেপটা ফার্মসিটিউক্যালস লিমিটেডের বিক্রির পরিমাণ ছিল ৪৬৯ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। যা এখাতের মোট বিক্রির ১০ দশমিক ১৮ শতাংশ। এ সময়ে কোম্পানিটির প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪৬ দশমিক শূণ্য ৬ শতাংশ। বাজার শেয়ারের দিক থেকে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির বিক্রির পরিমাণ ৩৭৪ কোটি ৫ লাখ টাকা। যা এ খাতের ৮ দশমিক ২৪ শতাংশ শেয়ার। আলোচ্য সময়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩১ দশমিক ৪৪ শতাংশ।

বাজার শেয়ারের দিক থেকে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে অপসোনিন ফার্মা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪৭ দশমিক ৯১ শতাংশ। এ সময়ে কোম্পানিটির বিক্রির পরিমাণ ছিল ২৬৪ কোটি ২১ লাখ টাকা। যা বাজারের মোট বিক্রির ৫ দশমিক ৮৫ শতাংশ। পঞ্চম অবস্থানে থাকা রেনেটা লিমিটেডের ওষুধ বিক্রির পরিমাণ ছিল ২১৯ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। যা মোট শেয়ারের ৪ দশমিক ৮৭ শতাংশ। এ সময়ে কোম্পানির প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৩ দশমিক ৪৭ শতাংশ।

অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে এসকেঅ্যন্ডএফের শেয়ার রয়েছে ৪ দশমিক ৫২ শতাংশ, এরিস্টো ফার্মার ৪ দশমিক ৩৮ শতাংশ, হেলথকেয়ার ফার্মার ৪ দশমিক ৩৫ শতাংশ, এসিআই লিমিটেডের ৪ দশমিক ২৯ শতাংশ, একমি ল্যাবরেটরিজের ৪ দশমিক ১৪ শতাংশ, জেনারেল ফার্মাসিউটিক্যালসের ২ দশমিক ৪৮ শতাংশ, সনোফি-এভেন্টিস বাংলাদেশ লিমিটেডের ২ দশমিক ১৩ শতাংশ, রেডিয়েন্ট ফার্মার ১ দশমিক ৯৮ শতাংশ, পপুলার ফার্মার ১ দশমিক ৮৯ শতাংশ, নভোনরডিস্কের ১ দশমিক ৭৩ শতাংশ, ড্রাগ ইন্টারন্যাশনালের ১ দশমিক ৬৮ শতাংশ, ইউনিমেড অ্যান্ড ইউনিহেল্থের ১ দশমিক ৫৮ শতাংশ, নুভিস্তা ফার্মার ১ দশমিক ৩৪ শতাংশ, নোভারটিস ফার্মার ১ দশমিক ২৮ শতাংশ, সান ফার্মার ১ দশমিক ২২ শতাংশ।

শীর্ষ ২০ ওষুধ কোম্পানির প্রতিটিরই রয়েছে ভালো প্রবৃদ্ধি। এর ছোঁয়া লাগছে না পুঁজিবাজারে। কোম্পানিগুলো তালিকাভুক্ত হলে বাজারে ভালো শেয়ারের সরবরাহ বাড়তো। বাজার আরও গভীর হতো। বিনিয়োগকারীরা ওষুধ খাতের উচ্চ প্রবৃদ্ধির ভাগ পেতে পারতো। অন্যদিকে কোম্পানিগুলোও পুঁজিবাজার থেকে সাশ্রয়ী মূলধন সংগ্রহ করে ব্যবসা সম্প্রসারণ করতে পারতো।

সুত্র: অর্থসূচক