শ্রমিকদের উন্নয়নে নিশ্চুপ বিদেশি ক্রেতারা

পোশাক শ্রমিকদের উন্নয়নে সব সময়ই নিশ্চুপ ভূমিকায় রয়েছে বিদেশি বায়াররা (ক্রেতা)। রানা প্লাজার মতো ভয়াবহ দুর্ঘটনার পরও শ্রমিকদের উন্নয়নে বড় ধরনের কোনো পদপে নেয়নি তারা। এমনকি তৈরি পোশাকের দামও বাড়ায়নি।
রানা প্লাজা দুর্ঘটনার ৪ বছর পূর্তি উপলে রোববার ২৩ এপ্রিল গুলশানের গার্ডেনিয়া গ্রান্ড হলে আয়োজিত সামাজিক সংলাপে বক্তারা এসব অভিযোগ তুলে ধরেন। বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) ও আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) যৌথভাবে এই সংলাপের আয়োজন করে।
সভাপতির বক্তব্যে সিপিডির চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেন, বাংলাদেশ থেকে ৫ মার্কিন ডলারে পণ্য কিনে তা ২৫ ডলারে বিক্রি করা হচ্ছে। আমরা ৫ ডলার নিয়ে আলোচনা করছি; কিন্তু বাকি ২০ ডলার কোথায় যায়- তা নিয়ে কারো কোনো কথা নেই। দেশের মালিক-শ্রমিকের মধ্যে সম্পর্ক ও সমন্বয় থাকলে রানা প্লাজার মতো এমন বড় দুর্ঘটনা ঘটতো না। ওই দুর্ঘটনার পর সামাজিক জবাবদিহিতার চরম অভাবের বিষয়টিও ফুটে উঠেছে। জনপ্রতিনিধিরাও এ ঘটনার পর্যালোচনা করেননি।
তিনি আরও বলেন, গত ৪ বছরে সংস্কারে প্রচুর ঘাটতি ছিল। শুধু নীতিকথা বললেই হবে না, সংস্কার করতে হবে। ক্রেতা, উদ্যোক্তা ও সরকারের মধ্যে সম্পর্কের সমতা দরকার। সরকারের সুশাসনে (গর্ভনেন্স সিস্টেম) দুর্বলতা রয়েছে।
সিপিডির সম্মানীত ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, দেশে ট্রেড ইউনিয়নের সংখ্যা বেড়েছে, কিন্তু কার্যকারিতা কম। রানা প্লাজা ধসের পরে বেশকিছু উদ্যোক্তা ব্যবসা ছেড়েছেন। এই ঘটনার পর ট্রেড ইউনিয়ন, শিা, প্রশিণ ও নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিয়ে যে পরিমাণ অগ্রগতি হওয়ার কথা ছিল- তা হয়নি।
শ্রম সচিব মিকাইল সিপার বলেন, রানা প্লাজা ট্রাজেডির পর সরকার যথেষ্ট সচেতন হয়েছে। ভবিষ্যতে শ্রমিকদের উন্নয়নে উদ্যোগ নিতে সচেষ্ট সরকার।
বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের দাম নিয়ে অনৈতিক বাণিজ্যের অভিযোগ তুলে শ্রমিক নেতা মাহমুদ হাসান বলেন, বিদেশে ক্রেতারা তাদের ব্যবসা দেখবে; দাম বাড়ানোর চাপ দিলে তারা ইথিওপিয়া বা পার্শবর্তী দেশ ভারতে চলে যাবে। গার্মেন্টস খাতকে এগিয়ে নিতে ব্যাপক উদ্যোগ নিয়েছে ভারত- বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে।
এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।

 

আজকেরবাজার: আরআর/২৩ এপ্রিল ২০১৭