ষোড়শ সংশোধনী:৪অ্যামিকাস কিউরির লিখিত বক্তব্য জমা

উচ্চ আদালতের বিচারপতিদের অপসারণ ক্ষমতা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল থেকে সংসদের হাতে প্রদান করে আনা সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল বিষয়ে আপিল শুনানিতে লিখিত মতামত জমা দিয়েছেন চার অ্যামিকাস কিউরি। তারা হলেন- সংবিধানের অন্যতম প্রণেতা ড. কামাল হোসেন, ব্যারিস্টার এম. আমীর-উল ইসলাম, এম আই ফারুকী ও আবদুল ওয়াদুদ ভূইয়া।

মঙ্গলবার,৯ মে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চে লিখিত মতামত জমা দেন তারা। বেঞ্চের অন্য সদস্যরা হলেন- বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা, বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার। এরপর আদালত মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ২১ মে দিন নির্ধারণ করেন। সেদিন সাড়ে ১১টায় আদালতের কার্যক্রম শুনানি হবে। ওইদিনই রাষ্ট্রপক্ষ ও বাকি অ্যামিকাস কিউরিদের বক্তব্য জমা দিতে বলেন আদালত।

এর আগে মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে দ্বিতীয় দিনের মতো আপিল শুনানি শুরু হয়। সোমবার অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা পেপারবুক থেকে হাইকোর্টের রায় যেখানে পড়া শেষ করেছিলেন মঙ্গলবার সেখান থেকে আবার পড়া শুরু করেন। দুপুর একটার দিকে সেই রায় পুরোপুরি শেষ হয়। তারপর আদালত অ্যামিকাস কিউরিদের কাছে লিখিত বক্তব্য চান। তখন চারজন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী তাদের মতামত লিখিত আকারে দাখিল করেন। পরে এই মামলার শুনানি আগামী ২১ মে পর্যন্ত স্থগিত করা হয়। ৮ ফেব্রুয়ারি এই মামলায় আপিল শুনানিতে সহায়তার জন্য ১২ জন আইনজীবীকে অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে নিয়োগ দেন আপিল বিভাগ।

অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত ১২ আইনজীবীরা হলেন- বিচারপতি টিএইচ খান, ড. কামাল হোসেন, ব্যারিস্টার রফিক-উল হক, ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম, এ এফ হাসান আরিফ, ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ, এ জে মোহাম্মদ আলী, ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ, ফিদা এম কামাল, ব্যারিস্টার আজমালুল কিউসি, আবদুল ওয়াদুদ ভূইয়া, এম আই ফারুকী।

বিচারপতি অপসারণের ক্ষমতা পুনরায় সংসদের কাছে ফিরিয়ে নিতে ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী পাস করা হয়। এরপর তা ওই বছরের ২২ সেপ্টেম্বর গেজেট আকারে প্রকাশ পায়। এ অবস্থায় সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ওই বছরের ৫ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের নয়জন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন।

এ আবেদনের ওপর প্রাথমিক শুনানি শেষে হাইকোর্ট ওই সংশোধনী কেন অবৈধ, বাতিল ও সংবিধান পরিপন্থি ঘোষণা করা হবে না-তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন। এ রুলের ওপর শুনানি শেষে গত ৫মে আদালত সংখ্যাগরিষ্ঠ বিচারকের মতামতের ভিত্তিতে ১৬তম সংশোধনী অবৈধ বলে রায় দেন। তিন বিচারকের মধ্যে একজন রিট আবেদনটি খারিজ করেন।

এর মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠদের রায় প্রকাশিত হয় গত ১১ আগস্ট এবং রিট খারিজ করে দেওয়া বিচারকের রায় প্রকাশিত হয় ৮ সেপ্টেম্বর। দুটি মিলে মোট ২৯০ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে পরে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করে।

আজকের বাজার:এলকে/এলকে/ ৯ মে ২০১৭