স্বেচ্ছাসেবার স্বীকৃতি দিতে জাতীয় নীতিমালা তৈরি করা হবে : স্থানীয় সরকার মন্ত্রী

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, স্বেচ্ছাসেবার স্বীকৃতি দিতে ও কাঠামোর মধ্যে আনতে একটি জাতীয় স্বেচ্ছাসেবক নীতিমালা তৈরি করা হবে।
তিনি আজ রাজধানীর একটি হোটেলে ‘আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবক দিবস-২০২০’ উপলক্ষে আয়োজিত এক পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
মো. তাজুল ইসলাম বলেন, দেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ, বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও দু:সময়ে স্বেচ্ছাসেবকরা স্বত:স্ফূর্তভাবে অনেক জনকল্যাণমূলক কাজে অংশ নেন।
তিনি বলেন, জাতীয় স্বেচ্ছাসেবক নীতিমালা প্রণয়ন করা হলে তা সরকারী প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বেসরকারী খাত এবং উন্নয়ন অংশীদারদের স্বেচ্ছাসেবা কার্যক্রমকে মূলধারায় আনা ও স্বেচ্ছাসেবাকে সরকারী স্বীকৃতি প্রদানে সহায়ক হবে।
তিনি বলেন, এই লক্ষ্যে একটি ন্যাশনাল টেকনিক্যাল ওয়ার্কিং কমিটি গঠন ও কমিটির কার্যপরিধি চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে কাজ চলছে।
মন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘ ১৯৮৫ সালে স্বেচ্ছাসেবাকে স্বীকৃতি দেয়। আর স্বাধীনতার পরপরই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে ১৯৭৩ সালের ১ জুলাই দুর্যোগ মোকাবেলার প্রস্তুতি কর্মসূচী চালু হয় এবং তখনই তিনি তার চিন্তা-চেতনায় স্বেচ্ছাসেবীদের বিষয়ে ভেবেছেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর হত্যাকান্ডের পর পরবর্তীতে জাতীয়ভাবে স্বেচ্ছাসেবী নীতিমালা তৈরি হয়নি।
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের মহামারী আতঙ্কের মধ্যেও ছাত্র-শিক্ষক, জনপ্রতিনিধি, মসজিদের ইমাম, এনজিও কর্মী ও সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিসহ অনেকেই স্বেচ্ছাসেবী কর্মকান্ডে অংশ গ্রহণ করেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, যে কোন দুর্যোগে, বিপদে-আপদে দেশের মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ায়। এটিই এদেশের মানুষের প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য।
তিনি আরো বলেন, স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে যারা মহৎ কাজ করেন তাদের স্বীকৃতি দেওয়ার মতো কোন প্লাটফর্ম নেই। তাই একটি জাতীয় নীতিমালা তৈরির পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, দেশে বিএনসিসি, গার্লস গাইড ও স্কাউটস সহ স্বেচ্ছাসেবী অনেক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অসংখ্য ছেলে-মেয়ে জড়িত রয়েছে। আর তাদের সঙ্গে স্থানীয় সরকার বিভাগের অধীনে থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোর জনপ্রতিনিধিদের যুক্ত করা গেলে তা একটি বিশাল প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে এবং বিশাল পরিসরে কাজ করার সুযোগ তৈরি হবে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের উন্নত দেশ বিনির্মাণে যে মিশন ও ভিশন ঠিক করেছেন এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) নির্ধারণ করা হয়েছে সাধারণ মানুষের অংশ গ্রহণ ছাড়া তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না।
যুব ও ক্রীড়া সচিব মো. আকতার হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব আমিনুল ইসলাম খান ও জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক মিয়া সেপ্পো।
পরে স্বেচ্ছাসেবায় অবদান রাখার জন্য ১৮ স্বেচ্ছাসেবকের হাতে পুরস্কার তুলে দেন মন্ত্রী।