হাওরে এনজিও ক্ষুদ্র ঋণ আদায় স্থগিত

বন্যাকবলিত হাওর অঞ্চলের ৬ জেলায় বাংলাদেশ ব্যাংকের কৃষি ঋণ আদায় স্থগিতের পর বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের (এনজিও) ক্ষুদ্র ঋণ আদায়েও স্থগিতাদেশ দিয়েছে সরকার।

মঙ্গলবার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জেল হোসেন চৌধুরী মায়া সাংবাদিকদের এ কথা জানান। তিনি আরও জানান, বন্যাকবলিত ৬ জেলার কর্মরত দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের ছুটিও অনির্দিষ্টকালের জন্য বাতিল করা হয়েছে।

চলতি মাসের শুরুর দিকে পাহাড়ি ঢল এবং ভারী বৃষ্টিপাতে সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজারের হাওর অঞ্চলের বেশিরভাগ কৃষি জমি তলিয়ে গেছে। আগাম এ বন্যা হওয়ায় হাওরের ধানের প্রায় সব ধ্বংস হয়েছে। ধান পাকার আগেই তলিয়ে গেছে ফসল। এতে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে সেখানকার কৃষকরা।

এ পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের কৃষি ঋণ আদায় স্থগিতকরণের আদেশ দিয়ে গত সোমবার একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এছাড়া হাওর অঞ্চলের বন্যাদূর্গতদের মাঝে করর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতার (সিএসআর) আওতায় ত্রাণ সামগ্রী ও সাহায্য প্রদানে তফসিলভুক্ত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

অন্যদিকে বন্যাকবলিত ৬ জেলায় চাল ও নগদ সাহায্য দেওয়ার জন্য ১০০ দিনের কর্মসূচি হাতে নিয়েছে সরকার। এসময়  ভিজিএফ কার্ডের কার্ডের মাধ্যম চাল ও নগদ অর্থ বিতরণের পাশাপাশি খোলা বাজারে বিক্রি (ওএমএস) কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। গত রোববার সচিবালয়ে ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের এক আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া।

মন্ত্রী বলেছিলেন, দেশের বন্যা কবলিত সিলেট, সুনামগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনাসহ ৬ জেলায় ৩ লাখ ৩০ হাজার  পরিবারের মধ্যে প্রতি মাসে ৩০ কেজি চাল ও নগদ ৫০০ করে টাকা সাহায্য দেওয়া হবে। সাহায্য নিতে অনিচ্ছুক ব্যক্তিদের জন্য ওএমএস এর চাল বিক্রি সেবা অব্যাহত থাকবে।

তিনি জানান, সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগুস্ত জেলা সুনামগঞ্জ; সেখানে ৮৬ শতাংশ মানুষের ফসল নষ্ট হয়েছে। ওই এলাকার মানুষ যত দিন স্বাভাবিক জীবনে ফিরবে না বা পরবর্তী ফসল পাবে না- তত দিন সহায়তা দেওয়া হবে। এছাড়া ওএমএস ও ভিজিএফের মাধ্যমে ১০ টাকা, ১৫ টাকায় চাল দেওয়ার কর্মসূচিও অব্যাহত থাকবে। হাওর এলাকার সব ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ এর সুবিধা পাবে।

গত রোববার সচিবালয়ে এক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছিল, হাওরে বন্যায় ধান নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি মোট এক হাজার ২৭৬ মেট্রিক টন মাছ নষ্ট হয়েছে এবং তিন হাজার ৮৪৪টি হাঁস মারা গেছে।

আজকের বাজার:এলকে/এলকে/২৬এপ্রিল,২০১৭