প্রতি ঈদেই তো সব চ্যানেলজুড়ে বসে যায় নাটকের মেলা। বেশিরভাগ দর্শকদের মতে এবারের ঈদের সেরা তিন নাটক কী কী? চলুন একটু বিশ্লেষণ করা যাক।
‘কথা হবে তো?’
পরিচালনাঃ সৈয়দ আহমেদ শাওকী
কাহিনীঃ গাউসুল আলম শাওন
অভিনয়েঃ মনোজ কুমার প্রামানিক, মাসুমা রহমান নাবিলা
আহসান হাবীবের “দোতলার ল্যান্ডিং মুখোমুখি দু’জন” কবিতা অবলম্বনে “অস্থির সময় স্বস্তির গল্প” সিরিজে গাউসুল আলম শাওনের গল্পে এই ঈদে “কথা হবে তো?” নাটক দিয়ে সকলের হৃদয়ে সত্যিকারের স্বস্তির পরশ দিয়ে গেলেন তরুণ নির্মাতা সৈয়দ আহমেদ শাওকী। কী এমন ছিলো এতে? তেমন বিশেষ কিছু নয়। তবু কীভাবে যেন এই নাটকটির প্রতিটি চরিত্র মিশে গেছে দরজায় বব ডিলানের পোস্টার, জয় গোস্বামীর কবিতা, পাশের বাড়ির মায়াময় মুখ, একটি ছোট্ট বাগান, অজান্তে আউড়ে ওঠা বুদ্ধদেবের কবিতার চরণ, মনের এক সাগর কথার ভিড়ে কথা খুঁজে না পাওয়া, ব্যাচেলর জীবনের যুদ্ধ, হঠাৎ কিছু পাওয়া রাত ৮টায় ওই একই জায়গায় আমাদের মাঝে।
মধ্যবিত্ত পরিবারের লাজুক কিন্তু সাহসী এক তরুণীর ভূমিকায় নাবিলা এবং স্বপ্ন ভরা দু’চোখে মনোজ কুমার প্রামানিক ছিলেন অনন্য সাধারণ। সমাজের নানা নোংরা দিক পিছে ফেলে, হিন্দি সিরিয়ালের দিকে ঝুঁকে পড়ার এই অস্থির সময়ে, ভালো নাটক যে আমাদের এখনো ভালোবাসার আহ্বান জানাতে পারে, দিতে পারে একমুঠো রোদ্দুর বা প্রাণের অথবা স্বস্তির স্পর্শ এই নাটকটি ছিলো তারই প্রমাণ।
দেখবো দেখবো করেও যাদের এখনো দেখা হয়ে ওঠেনি, এই নাটকটি তারা দেখে নিতে পারেন যেকোনো প্রান্তে বসে যেকোনো সময় এই লিংক থেকে- http://www.bioscopelive.com/en/watch?v=0buZl72q55M। জীবনের এই অস্থির সময়ে ছড়িয়ে পড়ুক এক ফোঁটা ভালোবাসা স্বস্তির পরশ হয়ে আমাদের হৃদয়ে।
হোটেল আলবাট্রোস
চিত্রনাট্য ও পরিচালনাঃ নুহাশ হুমায়ূন
অভিনয়ঃ আসাদুজ্জামান নূর, অ্যালেন শুভ্র, শান রহমান
একটি হোটেল, একজন বিখ্যাত শেফ। হঠাৎ ঘটে গেলো সেই ঘটনা। অন্ধকার, নির্জন, নিশুতি সেই রাতে। একটি রান্নাঘর। বন্দী চারজন। একটি কাটা হাত। লিখতে না পারা, রাঁধতে না পারার আক্ষেপ। একটি জীবননাশ আর…
গল্পের বাকিটুকু জানতে হলে দেখতে হবে “অস্থির সময় স্বস্তির গল্প” সিরিজের প্রথম নাটক। হুমায়ূন আহমেদের পুত্র নুহাশ হুমায়ূন এলেন এই প্রথমবার ছোটপর্দায় আর এসেই জানিয়ে দিলেন তিনি হারাতে নয়, বরং থাকতে এসেছেন। বাবার নাম মান তিনি ঠিকই রাখতে পেরেছেন ‘হোটেল আলবাট্রোস’-এ। নিজের মুনশিয়ানা, আসাদুজ্জামান নূরের মতো বাঘা অভিনেতার প্রশংসা কুড়ানো এবং নিজের উপর সম্পূর্ণ বিশ্বাস। ভিন্নধরণের এক গল্পে, এক ধোঁয়াটে সমাপ্তিতে নুহাশের আগমনী ধ্বনি আসুক এক শূন্যতা পূরণেরবার্তানিয়ে।
দেখবো দেখবো করেও যাদের এখনো দেখা হয়ে ওঠেনি, এই নাটকটি তারা দেখে নিতে পারেন যেকোনো প্রান্তে বসে যেকোনো সময় এই লিংক থেকে- http://www.bioscopelive.com/en/watch?v=6Iej8E4Isab
বড় ছেলে
পরিচালনাঃ মিজানুর রহমান আরিয়ান
অভিনয়ঃ জিয়াউল ফারুক অপূর্ব, মেহজাবিন চৌধুরী
একটি মধ্যবিত্ত পরিবারের গল্প। গল্প পরিবারের বড় ছেলের যার দিন কেটে যায় জুতোর তলা ক্ষয়ে বা বাসে বাসে ঢাকা শহরে এই অফিস হতে সে অফিসে আর বিকেল-সন্ধ্যা-রাত কেটে যায় টিউশনিতে। বাবার সময় ফুরিয়ে চলেছে। ধরতে হবে হাল এবার সংসারের। আর স্বপ্ন? সে তো এক মরীচিকা। এ জীবন বাঁধা পড়েছে দায়িত্ব ও কর্তব্যের বেড়াজালে।
ঠিক এমনই একটি গল্প নিয়ে এবারের ঈদে মানুষকে কাঁদিয়ে মনে জায়গা দখল করে নিলেন বড় ছেলে চরিত্রে রূপদানকারী জিয়াউল ফারুক অপূর্ব। এ যেন জীবন থেকে উঠে আসা কোনো এক চিত্রনাট্যের সাথে। নাটকের সাথে নিজের জীবনের মিল খুঁজে পাওয়া অনেকেই মেহজাবিনের মাঝে বহুকাল আগে বা সদ্য সাবেক হওয়া বা জীবনের ঘূর্ণিপাকে জড়িয়ে যাওয়া ভালোবাসার মানুষটিকে পেয়েছেন। যদি হালকা মিল খুঁজে পান নিজের সাথে আর দেখবো দেখবো করেও যাদের এখনো দেখা হয়ে ওঠেনি, এই নাটকটি তারা দেখে নিতে পারেন এই লিংক থেকে- https://www.youtube.com/watch?v=eb6mCg1dB0Y
আজকের বাজার: সালি / ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭
https://www.youtube.com/watch?v=eb6mCg1dB0Y&t=2489s