কথিত প্রিন্স মুসার বিরুদ্ধে মামলার সুপারিশ

বিতর্কিত ধনকুবের কথিত প্রিন্স মুসা বিন শসসের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) মামলার সুপারিশ করেছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। বিলাসবহুল রেঞ্জ রোভার গাড়িতে শুল্ক ফাঁকির মাধ্যমে দুর্নীতির আলামত পাওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

একইসঙ্গে গাড়িটিতে শুল্কফাঁকি থেকে অর্থ বিভিন্নভাবে রূপান্তরিত হওয়ায় প্রিন্স মুসার বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) অনুমতি চেয়েছে।

বৃহস্পতিবার ০৮ জুন শুল্ক গোয়েন্দা থেকে দুদক ও এনবিআরে এ সংক্রান্ত দুইটি চিঠি দেওয়া হয়েছে। শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

চিঠিতে বলা হয়েছে, ২১ মার্চ প্রিন্স মুসার ব্যবহৃত একটি ‘রেঞ্জ রোভার ভোগ’ মডেলের গাড়ি আটক করা হয়। এ গাড়িটি ভোলা বিআরটিএ থেকে শুল্ক পরিশোধের ভূয়া বিল অব এন্ট্রি দেখিয়ে রেজিস্ট্রেশন করান। তিনি এতে ১৭ লাখ টাকা শুল্ক দিয়েছেন মর্মে দাবি করেন।

কিন্তু চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের সাথে যোগাযোগ করে দেখা যায় এই বিল অব এন্ট্রি দাখিল হয়নি। ফলে সরকারের প্রায় ২ কোটি ১৫ লাখ টাকা ফাঁকির সাথে জড়িত ছিলেন প্রিন্স  মুসা। ভোলা বিআরটি এর কর্মকর্তার যোগসাজসে তিনি এই দুর্নীতি করেছেন মর্মে অনুসন্ধানে উদঘাটন হয়েছে।

চিঠিতে আরও বলা হয়, শুল্ক ফাঁকি ও মানিলন্ডারিং সংক্রান্ত অপরাধের তদন্তের জন্য জিজ্ঞাসাবাদ ও শুনানির প্রয়োজনে প্রিন্স মুসাকে ৭ মে শুল্ক গোয়েন্দা সদর দপ্তরে তলব করা হলে তিনি স্বশরীরে হাজির হয়ে বক্তব্য প্রদান করেন।

শুনানিতে প্রিন্স মুসা বিন শমসের তার বার্ষিক টার্নওভারের বিষয়ে লিখিত বক্তব্যে সুইস ব্যাংকে রক্ষিত ১২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার- ৯৬,০০০ কোটি টাকা জব্দ আছে বলে উল্লেখ করেন। কিন্তু এই বিপুল পরিমাণ অর্থসম্পদ এর স্বপক্ষে কোনো ব্যাংক স্টেটমেন্ট কিংবা অন্য কোন প্রামাণিক দলিলাদি তিনি দাখিল করেননি।

প্রিন্স মুসার ব্যবহৃত বিলাসবহুল রেঞ্জ রোভার গাড়িটি কারনেট ডি প্যাসেজ সুবিধায় ২০১০ সালে শুল্কমুক্তভাবে আমদানি করা হয়েছে। যা কোনভাবেই প্রযোজ্য শুল্ক-করাদি পরিশোধ ব্যতিরেকে বাংলাদেশে ব্যবহার বা রেজিস্ট্রেশন করার সুযোগ নেই।

অথচ ২০১৫ সালে ভোলা বিআরটিএ অফিসের কতিপয় কর্মকর্তার যোগসাজশে ভূয়া কাগজপত্রাদি দাখিলের মাধ্যমে গাড়িটির রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে, যা দুর্নীতি দমন কমিশনের শিডিউলভুক্ত অপরাধ। দুর্নীতির এই অপরাধটি আমলে নিয়ে মামলা দায়ের ও তদন্ত করার জন্য শুল্ক গোয়েন্দা আজ এনবিআর চেয়ারম্যানের মাধ্যমে দুদকে চিঠি দেওয়া হয়।

প্রসঙ্গত, গত ২১ মার্চ গুলশান-২ এর ১০৪ নম্বর রোডের ৮ নং বাড়িতে অভিযান চালিয়ে মুসার শুল্ক ফাঁকি দিয়ে আমদানি করা রেঞ্জ রোভার গাড়ি জব্দ করে শুল্ক গোয়েন্দা কর্মকর্তরা। পরে মামলার তদন্তের স্বার্থে গত ১৯ এপ্রিল তাকে গোয়েন্দা কার্যালয়ে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।

আজকের বাজার: আরআর/ ০৮ জুন ২০১৭