গ্রামীণ কল্যাণের কাছে ৬৬৬ কোটি টাকা কর দাবীর রায় প্রত্যাহার : ফের নতুন বেঞ্চে হবে শুনানি

গ্রামীণ কল্যাণের কাছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ৬৬৬ কোটি টাকা কর দাবি সংক্রান্ত রায়টি প্রত্যাহার (রিকল) করেছেন হাইকোর্ট।
সেই রায় স্ব-প্রণোদিতভাবে প্রত্যাহার করে নিয়েছেন উচ্চ আদালত। রায় প্রদানকারী ডিভিশন বেঞ্চের একজন বিচারক আইনজীবী থাকাকালীন এ মামলায় সম্পৃক্ত ছিলেন বিধায় রায়টি প্রত্যাহার করে নেন। এখন মামলাটি প্রধান বিচারপতির কাছে প্রেরণ করা হচ্ছে। নতুন বেঞ্চ নির্ধারণ করে দেবেন প্রধান বিচারপতি। সেখানেই ফের শুনানি হবে মামলাটির।
সরকার পতনের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ওই রায়টি হাইকোর্ট প্রত্যাহার (রিকল) করেন জানিয়ে গ্রামীণ কল্যাণের আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ-আল-মামুন আজ সাংবাদিকদের বলেন, ‘রায় প্রদানকারী বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি রায় রিকল করার (গ্রাউন্ডে) যুক্তিতে বলেছেন যে, বেঞ্চের অপর বিচারপতি এই কোর্টেই রাষ্ট্র পক্ষে ডেপুটি এটর্নি জেনারেল ছিলেন। সরকার পক্ষে একসময় তিনি এই মামলাটির প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। সুতরাং তিনি (বিচারপতি) যেহেতু এই মামলা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন তাই তিনি বিচারক থেকে রায়টি দিলে ডিফেক্টিভ হবে। তাই রায়টি প্রত্যাহার (রিকল) করে তিনি প্রধান বিচারপতির কাছে মামলাটি পাঠান অন্য কোর্ট নির্ধারণের জন্য।’
তবে ছয় মাস ধরে এই মামলাটি শুনানি করার সময় কেন এই বিষয়টি সামনে আনা হলো না? সে প্রশ্ন রেখে আবদুল্লাহ-আল-মামুন বলেন, এটা আমাদের বিব্রতকর অবস্থায় ফেলেছে। জনগণের কাছে একটা ভুল মেসেজ যাবে যে, প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রধান উপদেষ্টা হওয়ার কারণে এটা হয়তো করেছেন।
কর দাবি বিষয়ে কর কমিশনারের সিদ্ধান্তের বৈধতা নিয়ে গ্রামীণ কল্যাণের করা পৃথক রিটের রুল ডিসচার্জ করে গত ৪ আগস্ট রায় দেন বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকার ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ। এই রায়ের ফলে আয়কর বাবদ গ্রামীণ কল্যাণের কাছ থেকে দাবীকৃত অর্থ এনবিআর আদায় করতে পারবে বলে ওইদিন জানান রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী। অন্যদিকে গ্রামীণ কল্যাণের আইনজীবী একইদিন বলেন হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করা হবে।
প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস চেয়ারম্যান থাকা গ্রামীণ কল্যাণের কাছে ২০১২-১৩, ২০১৩-১৪, ২০১৪-১৫, ২০১৫-১৬ ও ২০১৬-১৭ করবর্ষের  প্রদেয় কর দাবি ঘিরে গ্রামীণ কল্যাণ ২০১৭ সালে পৃথক রিট করে। সে রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুল দেন। সে রুল শুনানি শেষে রায় দেন হাইকোর্ট। ওই রায়ের বিরুদ্ধে এনবিআর পৃথক লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করে। পরবর্তীতে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ এই লিভ টু আপিল নিষ্পত্তি করে হাইকোর্টে মূল বিষয়বস্তুর ওপর শুনানির নির্দেশ দেন। এরপর শুনানি শেষে রুল খারিজ করে গত ৪ আগস্ট রায় দেন বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকার ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ। (বাসস)