নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানির জন্য ভারতের পাশাপাশি মিয়ানমারের সঙ্গে একটি চুক্তি সই হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) এই চুক্তি সই করবে। বুধবার সচিবালয়ের গণমাধ্যম কেন্দ্রে ‘বিএসআরএফ সংলাপ’ অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী এ কথা বলেন। বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) এ সংলাপের আয়োজন করে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, নিত্যপণ্য জিনিসগুলো আনতে এবং সেটার সরবরাহ যেন নিরবচ্ছিন্ন থাকে সেজন্য ভারতের সঙ্গে একটি চুক্তি করতে যাচ্ছি। সীমান্তবর্তী আরেকটি দেশ মিয়ানমার। মিয়ানমার থেকেও যেন আমরা কৃষি উৎপাদিত পণ্যগুলো আনতে পারি, যেগুলো তাদের উদ্বৃত্ত আছে। অনেক বড় দেশ, তাদের অনেক উদ্বৃত্ত পণ্য আছে। এ বিষয়ে একটি চুক্তি আমরা প্রায় চূড়ান্ত করে ফেলেছি। আগামী জুলাই মাসে সেই চুক্তিটা সই করতে চেষ্টা করবো আমরা। এই চুক্তি হলে মিয়ানমার থেকেও আমরা পেঁয়াজ, ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আনা যাবে বলে জানান তিনি।
আহসানুল ইসলাম বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত নিত্যপণ্যের সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন রাখতে পেরেছি। বিশেষ করে আমদানিকৃত দুটি পণ্য চিনি এবং তেল, এ দুটোর সরবরাহ ও দাম গত ৫ থেকে ৬ মাস স্থিতিশীল আছে। শহরের নির্দিষ্ট আয়ের মানুষ মূল্যস্ফীতির কারণে চাপে আছে উল্লেখ করে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন,স্বল্প আয়ের মানুষকে স্বস্তি দিতে প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগে ১ কোটি পরিবারকে ভর্তুকি মূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য দেয়া হচ্ছে। যাতে তাঁরা স্বস্তিতে থাকে। তিনি বলেন, টিসিবির পণ্য বিক্রি নির্দিষ্ট স্থানে দোকানভিত্তিক কীভাবে করা যায়, সেটা নিয়ে আমরা কাজ করছি। দিনের শেষে লাইনে না দাঁড়িয়ে কার্ডটি দেখিয়ে একটি নির্দিষ্ট দোকান থেকে বাড়িতে যাওয়ার সময় যেন পণ্যটা নিয়ে যেতে পারেন। তিনি বলেন, সারাদেশে প্রায় আট হাজারের মতো ডিলার রয়েছে।তাদের একবারে নির্দিষ্ট দোকানে আনা কষ্টসাধ্য। সেটি আমরা পর্যায়ক্রমে করে যাচ্ছি। কার্ডটাকে আমরা স্মার্ট করে দিচ্ছি।
রপ্তানি বাণিজ্যের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, ২০২৬ সালে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার পর অগ্রাধিকারমূলক বাজারসুবিধা যেন অব্যাহত থাকে, সেজন্য বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) মাধ্যমে বিভিন্ন জোট ও দেশের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করা হচ্ছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নে কোটা ফ্রি, ডিউটি ফ্রি সুবিধা যেন অব্যাহত থাকে সেই ব্যাপারেও আমরা কাজ করছি। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘নরেন্দ্র মোদী ঘোষণা দিয়েছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে দ্রুত কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট বাংলাদেশের সঙ্গে করবেন। চীনের সঙ্গে আমাদের স্টাডি সম্পূর্ণ হয়েছে, চায়না একটি এফটিএ করার জন্য উদ্যোগী। আসিয়ান কান্ট্রিগুলোর সঙ্গেও আমরা যোগাযোগ বৃদ্ধি করেছি।’ চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের রপ্তানি বাড়াতে পোশাক শিল্পের ন্যায় এই শিল্পে প্রণোদনা দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ভোক্তারা যেন সাশ্রয়ী মূল্যে নিত্যপণ্য পায়, সেজন্য বাজার মনিটারিং জোরদার করা হয়েছে। এছাড়া বাজারের সরবরাহ কাঠামো যেন কোন গোষ্ঠির কাছে জিম্মি না থাকে, সেব্যাপারে সরকার তৎপর রয়েছে। (বাসস)