জেলার একমাত্র আধুনিক সদর হাসপাতালসহ উপজেলা পর্যায়ের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে স্বাস্থ্য সেবার বেহালদশা। মোট ১৭০ টি চিকিৎসকের পদ থাকলেও বর্তমানে কর্মরত আছেন ৪৪ জন চিকিৎসক।
পঞ্চগড় সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, সিভিল সার্জন অফিসে চিকিৎসকের পদ ৩ জন থাকলেও সেখানে কর্মরত রয়েছেন একজন। পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ৩৭ জন চিকিৎসকের মধ্যে রয়েছেন ১১ জন। সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ে ১৪ জনের বিপরীতে রয়েছেন ছয়জন চিকিৎসক ।
তেতুঁলিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২৮ জনের মধ্যে রয়েছেন ছয়জন চিকিৎসক। বোদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩০ জনের মধ্যে রয়েছে ১২ জন চিকিৎসক। দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩২ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও রয়েছেন চারজন চিকিৎসক। আটোয়ারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২৯ জনের মধ্যে রয়েছে চারজন চিকিৎসক। এর মধ্যে প্রেষনে অন্যত্র রয়েছে তিনজন চিকিৎসক।
অর্থাৎ বর্তমানে এ জেলায় মোট ১৭০টি চিকিৎসকের মধ্যে ১২৬ জন চিকিৎসকের পদ শূন্য রয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, জেলা সদর ও উপজেলা হাসপাতালগুলোতে সার্জারী, মেডিসিন, এ্যানেসথেসিয়া, চক্ষু, অর্থোপেডিক্স, ইএনটি, কার্ডিওলজি, গাইনী, শিশু, ডেন্টাল, প্যাথলজিষ্ট, আল্টা মেডিসিনসহ বিভিন্ন বিভাগের চিকিৎসকের পদ শূন্য রয়েছে।
প্রায় ১০ লাখ মানুষের একমাত্র ভরসা পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতাল। তবে একশ’ শয্যার এ হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ভর্তি হচ্ছেন প্রায় দেড়শ’ রোগী। রোগীর চাপে খোলা বারান্দায় চলছে চিকিৎসা সেবা। এতে সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা। পাশাপাশি ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন রোগীরা।
সংশ্লিষ্টরা জানান, নতুন করে কোন চিকিৎসককে পঞ্চগড় জেলায় বদলী করা হলেও তারা কয়েকমাস থেকে অন্যত্র বদলী নিয়ে চলে যাচ্ছেন। ফলে স্বাস্থ্য সেবা থেক বঞ্চিত হন স্থানীয় বাসিন্দারা।
চিকিৎসার সমস্যা নিরসনে বর্তমান হাসপাতালের পাশেই নির্মাণ করা হয়েছে আড়াইশ’ শয্যার নতুন ভবন। সেটি এখন চালুর অপেক্ষায়।
পঞ্চগড় গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মনিরুজ্জামান সরকার জানান, ৫৭ কোটি ৩৮ লাখ টাকা অর্থায়নে বিগত ২০১৮ সালে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের একশ’ শয্যার হাসপাতালের পরিবর্তে নতুন আড়াইশ’ শয্যা নতুন ভবনের কাজ শুরু করে গণপূর্ত বিভাগ। পাঁচটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শেষ করে তিনমাস পূর্বে ভবনটি স্বাস্থ্য বিভাগকে হস্তান্তর করা করেছে।
হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. এস আই এম রেজাউল করিম জানান, তবে নতুন হাসপাতাল ভবন চালু হলে পর্যাপ্ত জনবল ও বেড সংকট দূর হবে।
এ বিষয়ে পঞ্চগড় সিভিল সার্জন ডা. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, পঞ্চগড়ে চিকিৎসক সংকট বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে চাহিদা জানানো হয়েছে। শিগগিরই এ সমস্যা দূর হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। (বাসস)