জেসিকা পেগুলাকে হারিয়ে ইউএস ওপেনের শিরোপা জয় করেছে আরিনা সাবালেঙ্কা। বিশ্বের দুই নম্বর খেলোয়াড় সাবালেঙ্কার এটি ক্যারিয়ারের তৃতীয় গ্র্যান্ড স্ল্যাম ও ইউএস ওপেনের প্রথম শিরোপা।
শনিবার ফাইনালে বেলারুশের সাবালেঙ্কা ৭-৫, ৭-৫ গেমে সরাসরি সেটে পেগুলাকে পরাস্ত করে চ্যাম্পিয়ন হবার গৌরব অর্জণ করেন। এর আগে এ বছরের শুরুতে তিনি টানা দ্বিতীয়বারের মত অস্ট্রেলিয়ান শিরোপা জয় করেছিলেন।
ফাইনালে মার্কিন তারকা পেগুলা দ্বিতীয় সেটে ০-৩ গেমে পিছিয়ে থেকেও ৫-৩ গেমের লিড নিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সাবালেঙ্কার কাছে আর পেরে উঠেননি। ২৬ বছর বয়সী সাবালেঙ্কা ৪০টি উইনিং শট খেলেছেন। ২০১৬ সালে এ্যাঞ্জেলিক কারবারের পর প্রথম নারী খেলোয়াড় হিসেবে একই মৌসুমে হার্ড কোর্টের উভয় গ্র্যান্ড স্ল্যামের শিরোপা জয় করলেন সাবালেঙ্কা।
গত বছরের রানার্স-আপ ও ২০২২ ও ২০২৩ সালের সেমিফাইনালিস্ট সাবালেঙ্কা বলেছেন, ‘এখানে অতীতের সেই কষ্টকর পরাজয়গুলো আমার মনে আছে। বিষয়গুলো মোটেই সহজ নয়। স্বপ্ন দেখা কখনো থামিয়ে দেইনি। শুধুমাত্র সেগুলো অর্জনের জন্য কঠোর পরিশ্রম করে গেছি। এই মুহূর্তে কিছু বলার ভাষা আমার নেই। বেশ কয়েকবার ইউএস ওপেনের শিরোপা জয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গিয়েছিলাম। এটা সবসময়ই আমার স্বপ্ন ছিল। শেষ পর্যন্ত সুন্দর এই ট্রফিটি হাতে তুলতে পেরেছি। আমি নিজেকে নিয়ে দারুন গর্বিত। একইসাথে পুরো দলকে নিয়ে গর্বিত।’
টরেন্টোর শিরোপা নিয়ে পেগুলা নিউ ইয়র্কে খেলতে এসেছিলেন। সিনসিনাতি ওপেনের ফাইনালে সাবালেঙ্কার কাছে হেরে পেগুলাকে রানার্স-আপ শিরোপা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয়। উত্তর আমেরিকান গ্রীষ্ম মৌসুমে হার্ড কোর্টে পেগুলা ১৬টি ম্যাচের মধ্যে ১৫টিতেই জয়ী হয়েছেন।
কাল ফাইনাল শেষে হতাশ পেগুলা বলেছেন, ‘আশা করেছিলাম অন্তত একটি সেটে সে যেন পরাজিত হয়। কয়েক সপ্তাহ আগে সিনসিনাতি ওপেনে আমরা বেশ কঠিন ম্যাচ খেলেছি। সাবালেঙ্কা বিশ্বের অন্যতম সেরা একজন খেলোয়াড়। সে খুবই শক্তিশালী একজন খেলোয়াড় এবং প্রতিপক্ষকে কখনই কোন ছাড় দেয়না। তার সাথে খেলার সুযোগ পাওয়াও অনেক বড় বিষয়।’
পেগুলার মার্কিন সতীর্থ কোকো গফের কাছে ২০২৩ ইউএস ওপেনের ফাইনালে পরাজিত হয়েছিলেন সাবালেঙ্কা। শনিবারের ফাইনালেও শুরুতে নিজেকে সেভাবে মানাতে পারেননি। বেশ কিছু ভুল শট খেলে প্রতিপক্ষকে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে যাবার সুযোগ করে দিয়েছিলেন। কিন্তু শক্তিশালী সাবালেঙ্কা দ্রুতই ঘুরে দাঁড়িয়ে ম্যাচে সমতা ফেরান। পরবর্তীতে ব্রেক পয়েন্ট নিয়ে ৪-২ ব্যবধানে এগিয়ে যান। ৩০ বছর বয়সী পেগুলা শেষ পর্যন্ত সাবালেঙ্কার শক্তির কাছে পরাজিত হয়েছেন। আর্থার এ্যাশে স্টেডিয়াম ভর্তি দর্শকের সমর্থণও তাকে এগিয়ে যেতে দেয়নি।
ফাইনালের পথে পেগুলা শেষ আটে বিশ্বের এক নম্বর খেলোয়াড় ইগা সোয়াইটেকের পর সেমিফাইনালে ক্যারোলিনা মুচোভাকে পরাজিত করেছেন। ২-৫ ব্যবধানে পিছিয়ে থেকে পেগুলা ৫-৫’এ সমতা ফেরান। সাবালেঙ্কার সেট জয়ের সার্ভিস ব্রেক করেন পেগুলা। ১২তম গেমে পেগুলা চারটি সেট পয়েন্ট রক্ষা করেন। কিন্তু পঞ্চম পয়েন্টটি আর বাঁচাতে পারেননি। ৬০ মিনিটের প্রথম সেটে সাবালেঙ্কা ২৫টি উইনিং শট খেলেছেন।
দ্বিতীয় সেটে পেগুলার ডাবল ফল্টের সুবাদে সাবলেঙ্কা ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে যান। যদিও দ্রুতই ম্যাচে ফিরে এসে ৫-৩ ব্যবধানে লিড নেন ৩০ বছর বয়সী মার্কিন তারকা। ১০ম গেমে সাবালেঙ্কা ব্রেক পয়েন্ট আদায় করে সমতায় ফিরেন। শেষ পর্যন্ত পরের দুই গেম জিততে সাবালেঙ্কাকে আর কষ্ট করতে হয়নি। (বাসস/এএফপি)