একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য প্রাথমিকভাবে মনোনীতদের চিঠি দেয়া শুরু করেছে বিএনপি।
সোমবার, ২৬ নভেম্বর বিকালে দলের চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে চিঠি দেয়া শুরু করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিকাল সোয়া ৩টায় বগুড়া-৬ আসনের প্রার্থী হিসেবে খালেদা জিয়ার মনোনয়নের চিঠি তুলে দেয়া হয় বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি সাইফুল ইসলামের হাতে। এছাড়া বগুড়া-৭ আসনে খালেদা জিয়ার আরেকটি মনোনয়নের চিঠি তার উপদেষ্টা হেলালুজ্জামান লালুর হাতে তুলে দেন মির্জা ফখরুল।
খালেদা জিয়ার মনোনয়নের চিঠি দেয়ার সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন দলের মহাসচিব। কাঁদতে থাকায় কিছু সময় তিনি কথা বলতে পারেননি।
বিএনপির একাধিক সিনিয়র নেতা রোববার রাতে জানান, সোমবার গুলশানের চেয়াপার্সনের কার্যালয় থেকে মনোনয়ন দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমেদ বলেন, আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে সোমবার থেকে মনোনয়ন দেয়া শুরু করবো।
দলের আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আমরা আমাদের প্রার্থীদের তালিকা চূড়ান্ত করেছি। এখন আমারা জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এবং আমাদের জোটের সাথে আলোচনা করছি।
প্রার্থীদের যোগ্যতা, সক্ষমতা এবং জনপ্রিয়তার ওপর ভিত্তি করে তালিকা চুড়ান্ত করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানায়, দলের কয়েকজন নেতা রবিবার রাতের মনোনয়ন পেয়েছেন এবং অন্যদের আজ মনোনয়ন দেয়া হবে। ফলে সারাদেশের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা মনোনয়ন নিতে রাজধানীতেই অবস্থান করছেন।
দূরের জেলাগুলো থেকে আগত প্রার্থীদের আজ সবার আগে মনোনয়ন দেয়া হতে পারে বলেও সূত্রটি জানিয়েছে।
সূত্রটি আরও জানান, প্রথম দিনে ১৫০ থেকে ২০০ আসনের মনোনয়ন চিঠি দেয়া হতে পারে এবং অন্য আসনগুলোতে পরবর্তীতে দেয়া হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থায়ী কমিটির এক নেতা বলেন, ২০০১ এবং ২০০৮ সালে বিএনপির হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে। এছাড়াও দলের অভ্যন্তরীণ জরিপ অনুযায়ী জনপ্রিয় প্রার্থীদের বিষয়টিও বিবেচনায় থাকবে।
অনেক পুরাতন প্রার্থীই এবার মনোনয়ন পাবে না জানিয়ে তিনি বলেন, রাজধানীতে অনেক আসনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলীয় জোট থেকে প্রার্থী আসতে পারে।
রাজধানীতে বিএনপির অনেক ‘হেভিওয়েট’ প্রার্থী বাদ পড়ার সম্ভাবনার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, দুই জোটকে রাজধানীতে ৫ থেকে ৭টি আসন ছেড়ে দিতে হবে।
তবে যেসব আনগুলোতে দুই জোটের সাথে ভাগাভাগি করা হবে, সেগুলোতে বিএনপির প্রার্থী শুধু মডেল হিসেবে থাকতে পারে বলেও ইঙ্গিত দেন ওই স্থায়ী কমিটির সদস্য।
এদিকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলের অন্য সিনিয়র নেতাদের সাথে দুই জোটের সঙ্গে আসন ভাগাভাগির বিষয় নিয়ে রবিবার রাতেও বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে আলোচনায় বসে ছিলেন বলে জানা যায়।
বিএনপি মহাসচিরে সাথে ঘনিষ্ঠ এমন এক নেতা বলেন, রবিবার রাতেই দলের ২০০ প্রার্থীর মনোনয়ন চিঠিতে স্বাক্ষর করা হয়ে গেছে।
গণফোরামের সাথে ১০টি আসন ভাগাভাগির কথা জানিয়ে ওই নেতা বলেন, এছাড়াও নাগরিক ঐক্য, জেএসডি এবং কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সাথে তিনটি করে আসন ভাগাভাগি করা হয়েছে।
এছাড়াও ২০ দলীয় জোটের প্রার্থীদের জন্যও ৪০টি আসন রাখা হয়েছে। তবে দুই জোটের পক্ষ থেকে আরও অনেক বেশী আসন দাবি করা হয়েছে বলেও জানান ওই নেতা।
২০ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে নিবন্ধন হারানো জামায়ত অন্তত ৩৫টি আসন চেয়েছে কিন্তু বিএনপি ইসলামিক এই দলটিকে ২৫টির বেশি আসন দিতে রাজি নয়।
এছাড়াও অলি আহমেদ নেতৃত্বাধীন দল এলডিপি বিএনপির কাছে ছয়টি আসন দাবি করলেও তাদের চারটি আসন দেয়ার ব্যাপারে সম্মত হয়েছে বিএনপি।তথ্য- ইউএনবি
আজকের বাজার/এমএইচ