বৃক্ষ মেলায় বাড়ছে দর্শনার্থীদের ভিড়

শাহীন আলম : সারিসারি ইট-পাথর আর কংক্রিটের সুউচ্চ অট্টালিকা থেকে কিছুটা সময় খুঁজে নিতে মিরপুর থেকে বৃক্ষ মেলায় এসেছেন লাকি। যান্ত্রিক নগরের কোলাহল ভুলে ও প্রচণ্ড গরমেও শুধু প্রাকৃতিক এ পরিবেশের সঙ্গে কিছুটা সময় মিশবেন বলে মেলায় এসেছেন তিনি।

সরেজমিনে দেখা যায়, মেলার প্রধান গেট দিয়ে ঢুকলেই মনে হয় প্রকৃতির এক অন্য জগৎ। চারদিকে সবুজের সমাহার। সবুজের আড়ালেই দর্শনার্থীদের চোখ কেড়ে নিচ্ছে নানা ধরনের ফল ও ফুল। ছোট ছোট গাছে বড় ফল দেখলেই দর্শনার্থীরা ছুটে যাচ্ছেন সেদিকে। অনেকেই আবার দরদাম জিজ্ঞেস করে কিনে নিচ্ছেন পছন্দের গাছ।

রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে শুরু হওয়া জাতীয় বৃক্ষ মেলায় জমজমাট বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। মেলায় বিপুল ক্রেতা ও বৃক্ষপ্রেমীদের সমাগম থাকে প্রায় প্রতিদিনেই ।
অন্যদিকে, পরিবেশ সুরায় গাছ লাগানোর েেক্ষত্র মানুষের পাশাপাশি অন্যান্য প্রাণীকুলের বিষয়টিও চিন্তা করার পরামর্শ পরিবেশবিদদের। অধিক ঘনবসতির এই ব্যস্ত নগরী ঢাকার পরিবেশকে সুন্দর ও বসবাসের উপযোগী করে গড়ে তুলতে প্রতিবছর আয়োজন করা হয় জাতীয় বৃ মেলার। এতে বিভিন্ন প্রজাতির দেশি-বিদেশি ফলজ, বনজ ও ঔষধি গাছ নিয়ে অংশ নিয়েছে নার্সারিগুলো। আর এবারের মেলা বিস্তৃত জায়গা জুড়ে হওয়ায় নানা জাতের পছন্দের গাছগুলো বেশ দেখে শুনে কিনছেন গাছ প্রেমীরা।

বিভিন্ন প্রজাতির ফল ও ফুল গাছের পাশাপাশি অফিস ও বাসা-বাড়ির ছাদে শোভাবর্ধনে ক্রেতারা কিনছেন এসব ঝুলন্ত গাছগুলোও। দাম যতই হোক, সৌখিনতাকেই গুরুত্ব দিচ্ছেন তারা। গোল্ড ফিস ভাইন, লিপিস্ট, অর্কিড, ক্যাঙ্গারু পকেট সহ বিভিন্ন নামের এই গাছগুলো বিক্রি হচ্ছে তিনশ থেকে দু হাজার টাকা পর্যন্ত। শুধু অর্থ আর সৌখিনতার কথা চিন্তা না করে পরিবেশের ভারসাম্যে পশু-পাখিও উপকৃত হবে, এমন গাছ কেনার পরামর্শ পরিবেশবিদদের।

সংশ্লিষ্ট তথ্য কেন্দ্র থেকে জানা গেছে, সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর, ন্যাশনাল হারবেরিয়াম, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর, কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন ও বাংলাদেশ বন গবেষণা ইনস্টিটিউট। অপরদিকে বেসরকারি ও ব্যক্তিমালিকানা নার্সারির মধ্যে রয়েছে আনন্দ, দ্বীপ গার্ডেন, বরিশাল, রাশিদা,গ্রিনল্যান্ড, উত্তরা ভাই ভাই ও পুষ্পিতা।

মেলা প্রাঙ্গণে দেখা যায়, নানা বয়সী বৃপ্রেমীর আনাগোনায় প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছে মেলা প্রাঙ্গণ। পছন্দের গাছ কিনতে ছুটে আসছেন বৃ মেলায়। বিভিন্ন প্রজাতির ফলদ, বনজ, ঔষধি ও সৌন্দর্যবর্ধক গাছের মধ্যে ফলদ বৃরে চাহিদা সবচেয়ে বেশি। আর ফলদ বৃরে মধ্যে ক্রেতাদের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে নানা জাতের আম, পেয়ারা, সফেদা, লেবু, কড়মচা, আমড়া, জলপাই, আমলকি ইত্যাদি। মেলায় প্রতিটি আম্রপালীর চারা বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকায়, হাঁড়িভাঙ্গা ১৫০ টাকা, থাই কাঁচামিঠা ১৫০ টাকা, গোপালভোগ ১০০ টাকা। তবে ফলসহ আমগাছের দাম সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা। পেয়ারার মধ্যে রয়েছে মাধুরী পেয়ারার চারা ১৬০ টাকা, থাই পেয়ারা ১৫০ টাকা। তাছাড়া কাজী পেয়ারা সৈয়দা পেয়ারার সংস্করণে উৎপাদিত বীজহীন পেয়ারা চারা বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়।

আজকের বাজার: এসএ/ আরআর/ ০৮ জুন ২০১৭