ইরানের সর্বোচ্চ নেতা শুক্রবার এক ব্যতিক্রমী ভাষণে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলেছেন,এই অঞ্চলের চারপাশে তাদের মিত্ররা ইসরাইলের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাবে। কারণ, তিনি তার শত্রুর বিরুদ্ধে তাদের দেশের ক্ষেপণাস্ত্র হামলাকে রক্ষা করেছেন। ইসরাইলের ওপর ইরানের দ্বিতীয়বারের মতো সরাসরি হামলার পর তেহরানে আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি এই ভাষণ দেন। তেহরান সমর্থিত হিজবুল্লাহ যোদ্ধা এবং ইসরাইলি সৈন্যদের মধ্যে গুলি বিনিময় লেবাননে সর্বাত্মক যুদ্ধে পরিণত হওয়ার পর এটিও তার প্রথম ভাষণ। বৈরুত থেকে এএফপি জানায়
গাজা উপত্যকায় চলমান যুদ্ধের সূচনাকারী ইসরাইলের ওপর হামাসের গত বছরের ৭ অক্টোবরের হামলার প্রথম বার্ষিকীর আগে দেওয়া বক্তৃতায় খামেনি ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী হামাস যোদ্ধাদের ‘যৌক্তিক এবং আইনি’ পদক্ষেপের পক্ষে রয়েছেন এবং ইসরাইলি বাহিনীর বিরুদ্ধে তার ‘ভয়ঙ্কর প্রতিরক্ষা’র প্রশংসা করেছেন।
হামাসের নজিরবিহীন হামলার ফলে ১,২০৫ জন ইসরাইলি নিহত হয়। হামাসের এই হামলা বিশ্বব্যাপী নিন্দার ঝড় ওঠে কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যের চারপাশে ইরান-সমর্থিত গোষ্ঠীগুলো বিশেষ করে লেবাননের হিজবুল্লাহ এবং ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের সমর্থন আদায় করেছে।
হিজবুল্লাহ শনিবার দিনের প্রথম দিকে বলেছে,তারা লেবানন সীমান্ত এলাকায় ইসরাইলি সৈন্যদের সাথে চলমান সংঘর্ষে জড়িত ছিল এবং ইসরাইলি সৈন্যদের পিছু হটতে বাধ্য করেছে। ইসরাইলি সেনাবাহিনীর আরবি-ভাষার মুখপাত্র আভিচায় আদ্রাই এলাকার বুর্জ আল-বারাজনেহ্র আশপাশের কিছু অংশের বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়ার জন্য সতর্ক করার পর এএফপি সংবাদদাতারা শনিবার ভোরে বৈরুত শহরের দক্ষিণ শহরতলিতে ধারাবাহিক বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন।
জর্ডান ও বাহরাইন হামাস এবং হিজবুল্লাহর প্রতি সমর্থন প্রদর্শনের জন্য জুমার নামাজের পর ভিড় জমায়। যদিও উভয়ের সঙ্গে ইসরাইলের সম্পর্ক রয়েছে।
জর্ডানের রাজধানী আম্মানে বিক্ষোভকারীরা ৭ অক্টোবরের হামলার ‘গৌরব এবং মর্যাদা’র প্রশংসা করে পোস্টার বহন করে।
গাজা যুদ্ধের প্রায় এক বছর ধরে ইসরাইল উত্তর দিকে তাদের নজর সরিয়ে নিয়েছে। যার লক্ষ্য ছিল আন্তঃসীমান্তে হিজবুল্লাহ্র রকেট হামলায় বাস্তুচ্যুত হওয়া কয়েক হাজার ইসরাইলিকে দেশে ফিরে আনা।
গত ২৩ সেপ্টেম্বরের পর থেকে ইসরাইলি সামরিক বাহিনী লেবাননের আশপাশে হিজবুল্লাহর শক্তিশালী ঘাঁটিতে দফায় দফায় হামলা চালিয়েছে। এইসব হামলায় ১,১১০ জনেরও বেশি লোক নিহত হয়েছে এবং ইতোমধ্যেই অর্থনৈতিক সংকটে নিমজ্জিত দেশটির কয়েক হাজার মানুষকে তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছে।
হামলায় একজন ইরানি জেনারেলও হিজবুল্লাহ্র প্রধান হাসান নাসরুল্লাহ নিহত হয়েছেন।
খামেনি আরবি ভাষায় বলেন, ‘এই শাহাদাতের মাধ্যমে এই অঞ্চলের প্রতিরোধ পিছ পা হবে না বরং জয়ী হবে।’
তিনি অভিযোগ করেন, ইসরাইল একটি ‘বিদ্বেষপূর্ণ শাসন’ যা ‘দীর্ঘদিন স্থায়ী হবে না।’
ইসরাইলি নেতাদের কাছ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি কারণ, দেশের বেশিরভাগ ইহুদি নববর্ষ উদযাপন করেছে। (বাসস)