বাংলাদেশের রেলপথ, নতুন বগি, ইঞ্জিন ক্রয়সহ নানাবিধ উন্নয়ন কার্য সম্পাদনে ৩৬ কোটি ডলারের ঋণ অনুমোদন করেছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক-এডিবি। এডিবি জানায়, এই অর্থ আধুনিক কোচ, ওয়াগন ও লোকোমোটিভ সংযোজনে ব্যয় হবে।
এডিবির জ্যেষ্ঠ পরিবহন বিশেষজ্ঞ সুনেয়ুকি সাকায়ি বুধবার এক বিবৃতিতে বলেন, রেলওয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশে সুলভে, নিরপাদে এবং তুলনামূলকভাবে কম জ্বালানি খরচে পণ্য ও যাত্রী পরিবহনের সুযোগ সৃষ্টির ভালো সম্ভাবনা থাকলেও বিনিয়োগের অভাব আর জরাজীর্ণ বাহনের কারণে তা সম্ভব হয়নি।
তিনি জানান, এডিবির রেলওয়ে রোলিং স্টক অপারেশনস ইম্প্রুভমেন্ট প্রোজেক্টের আওতায় নতুন প্রযুক্তি ও যন্ত্রপাতি সংযোজন এবং পরিবেশবান্ধব কর্মপদ্ধতি প্রবর্তনের মাধ্যমে বাংলাদেশ রেলওয়ের কর্মদক্ষতা বাড়ানো সম্ভব হবে।
বাংলাদেশ সরকারের সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় রেলওয়ের উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ওই পরিকল্পনায় ২০২০ সালের মধ্যে রেলের মাধ্যমে পণ্য পরিবহন দেশের মোট পণ্য পরিবহনের ১৫ শতাংশে এবং যাত্রী পরিবহন ১০ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে।
এডিবির সহযোগিতায় সরকার রেলের উন্নয়নের যে পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে, তাতে যাত্রী ও পণ্য পরিবহনে আয় বাড়িয়ে লোকসান কমিয়ে আনার লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে।
এই সহযোগীতার ফলে বাংলাদেশ রেলওয়ের বহরে যুক্ত হবে ৪০টি নতুন ব্রডগেজ লোকোমোটিভ (ইঞ্জিন), ১২৫টি লাগেজ ভ্যান এবং মালবাহী ট্রেনের জন্য এক হাজার ওয়াগন। এই ঋণে রক্ষণাবেক্ষণ ব্যবস্থার উন্নয়ন, চালকদের জন্য প্রশিক্ষণ এবং তথ্যপ্রযু্ক্িতর ব্যবহার বাড়ানোরও উদ্যোগে নেওয়া হবে। মোট ৪৫ কোটি ৩৩ লাখ ডলার ব্যয়ের এই প্রকল্পের জন্য ৯ কোটি ৩৩ লাখ ডলারের যোগান দেবে বাংলাদেশ সরকার। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে ২০২২ সালের জুনে।
২০০৬ সালে রেলওয়ে ইম্প্রুভমেন্ট প্রোজেক্ট চালু করার পর এডিবি এ পর্যন্ত চার দফায় ২৮১ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে বাংলাদেশকে। ওই অর্থ বাংলাদেশে রেলপথের উন্নয়ন এবং প্রতিবেশীদের সঙ্গে আঞ্চলিক যোগাযোগ তৈরির কাজে ব্যয় হয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, পণ্য ও যাত্রী পরিবহনে এক সময় একচেটিয়াভাবে রেলওয়ের প্রাধান্য থাকলেও অবকাঠামো উন্নয়নে বিনিয়োগ না হওয়ায় এবং বহু পুরনো বাহনের কারণে বাংলাদেশে রেলের ব্যবসা পড়ে যাচ্ছে।