শনিবার পূর্ব ও দক্ষিণ লেবাননে ইসরাইলি হামলায় কমপক্ষে ৩৩ জন নিহত হয়েছে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরাইল ইরান-সমর্থিত হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে বিমান হামলা জোরদার করেছে।
বৈরুত থেকে এএফপি এখবর জানায়।
হামলার বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দেশটির পূর্বদিকে যেখানে হিজবুল্লাহর প্রভাব রয়েছে সেই বালবেক-হেরমেল অঞ্চলকে লক্ষ্য করে ইসরাইলি হামলায় কানাইসেহ এলাকায় ১১ জনসহ মোট ২০ জন নিহত এবং আরো ১৪ জন আহত হয়েছে।
দক্ষিণে, যেখানে হিজবুল্লাহর শক্তিশালী উপস্থিতি রয়েছে সেখানে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ১৩ জন নিহত হয়েছে,যাদের মধ্যে এই গোষ্ঠী এবং তাদের শিয়া মিত্র আমালের সাথে জড়িত সাত উদ্ধারকারী রয়েছে।
মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দক্ষিণাঞ্চলীয় হ্যানউইয়েহ গ্রামে পাঁচজন নিহত হয়েছেন।
পৃথকভাবে,এটি আমাল-সংযুক্ত রিসালা স্কাউটস অ্যাসোসিয়েশনের ছয় উদ্ধারকারী এবং হিজবুল্লাহ-অধিভুক্ত ইসলামিক হেলথ কমিটির সাথে আরেকজন দেইর কানুন গ্রামে হামলায় নিহত হওয়ার খবর দিয়েছে।
ইসরাইলের সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে যে তাদের বিমান টায়ার এবং বালবেক এলাকায় “হিজবুল্লাহ সন্ত্রাসী অবকাঠামো সাইটগুলোতে আঘাত হেনেছে।
“হামলার লক্ষ্যবস্তুর মধ্যে ছিল হিজবুল্লাহ সদস্য,অপারেশনাল অ্যাপার্টমেন্ট এবং অস্ত্র স্টোরেজ সুবিধা।”
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দক্ষিণাঞ্চলীয় নাবাতিয়েহ শহরে ইসরাইলি বিমান হামলায় ১২ জন আহত হয়েছে।
দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর টায়ারে হামলায় দুই শিশুসহ সাতজন নিহত হওয়ার এক দিন পর শনিবারের হামলার ঘটনা ঘটে। উদ্ধারকারীরা ধ্বংসস্তূপের নীচে নিখোঁজদের সন্ধান করছে।
মন্ত্রণালয় বলেছে,”টায়ার শহরে ইসরাইলি হামলায় দুই মেয়েসহ সাতজন নিহত এবং ৪৬ জন আহত হয়েছে,”তাদের শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ পাওয়া গেছে এবং “ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে শনাক্ত করা হবে”।
শুক্রবার মন্ত্রনালয় প্রাথমিকভাবে তিনজন নিহত ও ৩০ জন আহত হওয়ার কথা জানিয়েছে।
এএফপি ফটোতে দেখা গেছে উদ্ধারকারীরা ধ্বংসস্তূপের মধ্যে স্ট্রেচারে মৃতদেহ নিয়ে যাচ্ছেন, কারণ রাস্তা জুড়ে ধ্বংসস্তূপ এবং পাকানো ধাতু ছড়িয়ে রয়েছে।
এনএনএ বলেছে, প্রাণঘাতী হামলাগুলো উপকূলীয় শহরের তিনটি বিল্ডিংকে লক্ষ্যবস্তু করেছিল, যার ফলে ডজনখানেক ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
শনিবার হিজবুল্লাহ ইসরাইলের উত্তরে রকেটের পাশাপাশি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার দাবি করেছে।
গোষ্ঠীটি বলেছে, তাদের যোদ্ধারা ইসরায়েলি সৈন্য এবং সামরিক সাইটগুলোকে লক্ষ্য করে একটি ঘাঁটি এবং হাইফার উত্তরে একটি এলাকাসহ দক্ষিণ লেবাননের একটি গ্রামের উপর ইসরাইলি হার্মিস ৪৫০ ড্রোন ভূপাতিত করেছে।
ইসরাইল ২৩ সেপ্টেম্বর লেবাননে বিমান হামলা জোরদার করে এবং এক সপ্তাহ পরে স্থল সেনা পাঠায়।
গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের উপর হামাসের আক্রমণের ফলে গাজা যুদ্ধের সূত্রপাত হয়। পরে ফিলিস্তিনি মিত্রদের সমর্থনে হিজবুল্লাহর প্রায় এক বছর ধরে আন্তঃসীমান্ত আক্রমণ পাল্টা আক্রমণের এই বৃদ্ধি ঘটে।
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় অনুসারে, আন্তঃসীমান্ত গুলিবিনিময় শুরু হওয়ার পর থেকে লেবাননে ৩,১১০ জনেরও বেশি লোক নিহত হয়েছে, তাদের বেশিরভাগই- অন্তত ২,৭০০ ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে চলা ইসরাইলি হামলায় নিহত হয়েছে। (বাসস)