ব্যবসায়ী ও জনগণের কাছে নতুন ভ্যাটের বার্তা সহজভাবে পৌঁছে দিতে সকল আয়কর, ভ্যাট ও কাস্টমস হাউজে ‘ভ্যাট হেল্প ডেস্ক’ খোলার নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এ হেল্প খোলার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ হেল্প ডেস্ককে দৃষ্টিনন্দন করতে ‘সিলেট আয়কর অফিস’ মডেল অনুসরণের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
গতকাল বুধবার এনবিআর সম্মেলন কক্ষে ৩৬তম বাজেট বাস্তবায়ন সভায় ‘ভ্যাট হেল্প ডেস্ক’ খোলার সিদ্ধান্ত মোতাবেক এনবিআর চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান এ নির্দেশ দেন। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এ নির্দেশনা বাস্তবায়নের অগ্রগতি জানাতে সকল কমিশনার ও মহাপরিচালককে চিঠি দিয়েছে এনবিআরের প্রথম সচিব (মূসক) ড. মো. আব্দুর রউফ।
সকল ভ্যাট কমিশনারেট, ভ্যাট ডিভিশন, সকল আয়কর কমিশনারেট ও সকল কাস্টম হাউসে ‘ভ্যাট হেল্প ডেস্ক’ স্থাপন ছাড়াও ভ্যাট অনলাইন প্রকল্প থেকে ১২টি সার্ভিস সেন্টার খোলা হবে। আগামী ১ জুলাই বাস্তবায়িত হবে অনলাইনভিত্তিক নতুন ‘মূল্য সংযোজন ও সম্পূরক শুল্ক আইন-২০১২’। এ আইন বাস্তবায়নে এনবিআর সব প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন করেছে।
‘ভ্যাট হেল্প ডেস্ক’ নতুন ভ্যাট আইন সম্পর্কিত সকল তথ্য ও সেবার পাশাপাশি অনলাইনে ই-বিআইএন (ইলেকট্রনিক ভ্যাট আইডেন্টিফিকেশন নম্বর) নিবন্ধন করা যাবে। সূত্র জানায়, এনবিআর চেয়ারম্যানের নির্দেশ ও সিলেট কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের সহায়তায় সিলেট বিভাগীয় আয়কর অফিস একটি দৃষ্টিনন্দন ‘ভ্যাট হেল্প ডেস্ক’ স্থাপন করে।
সম্প্রতি সিলেট আয়কর কমিশনার সৈয়দ মোহাম্মদ আবু দাউদ তা উদ্বোধন করেন। আয়কর অফিসের সার্ভিস সেন্টারে ব্যতিক্রমী ‘ভ্যাট হেল্প ডেস্ক’ ব্যবসায়ী ও সেবা প্রত্যাশীদের দৃষ্টি কাড়ে। সভায় উদ্ভাবনী এ উদ্যোগ আলোচিত হয়। ব্যবসায়ী, ভোক্তাসহ সকলকে সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে সারাদেশে এ হেল্প ডেস্ক খোলার সিদ্ধান্ত হয়।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, এনবিআর চেয়ারম্যান মাঠ পর্যায়ে ‘ভ্যাট হেল্প ডেস্ক’ স্থাপনের নির্দেশনা দিয়েছেন। এ বিষয়ে সিলেটের আয়কর কমিশনার সৈয়দ মোহাম্মদ আবু দাউদ এর মডেল অনুসরণ করা যেতে পারে। সকল ভ্যাট কমিশনারেট, ভ্যাট ডিভিশন, সকল আয়কর কমিশনারেট এবং সকল কাস্টম হাউসে ‘ভ্যাট হেল্প ডেস্ক’ স্থাপন করতে হবে। নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়নে ‘ভ্যাট হেল্প ডেস্ক’ ফ্যাসিলিটেশন সেন্টার হিসেবে কাজ করবে।
চিঠিতে আরো বলা হয়, ‘ভ্যাট হেল্প ডেস্ক’ হবে একটি দৃষ্টিনন্দন বুথ। যেখানে বিনয়ী, মার্জিত ব্যবহার সম্পন্ন, আইন বিষয়ে অভিজ্ঞ কর্মকর্তা বসবেন। ভ্যাট বিষয়ে প্রকাশিত বই, বুকলেট, বরুশিয়ার, লিফলেট, ম্যাগাজিন ইত্যাদি সেখানে সাজানো থাকবে। স্থানীয়ভাবে তা ব্যাপক ভিত্তিতে প্রচার করতে হবে।
৩০ নভেম্বর ভ্যাট অনলাইন কলসেন্টার চালু করা হয়। ভ্যাট অনলাইন ও নতুন ভ্যাট আইন সম্পর্কে ইতোমধ্যে কয়েক হাজার ফোন এসেছে। এছাড়া কলসেন্টারে নতুন আইনের বিভিন্ন দিক নিয়ে ১৫৩টি বড় প্রশ্নের লিখিত জবাব দেয়া হয়েছে। লিখিত উত্তরগুলো সুন্দর ডিজাইন করে কমপেনডিয়াম আকারে বাঁধিয়ে ‘ভ্যাট হেল্প ডেস্ক’ রাখতে অনুরোধ করা হয়েছে। ‘ভ্যাট হেল্প ডেস্ক’ এর জন্য বুকলেট, বরুশিয়ার, লিফলেট ইত্যাদি ভ্যাট অনলাইন প্রকল্পের সাথে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
চিঠিতে আরো বলা হয়, নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়নের প্রাক্কালে জরুরি ভিত্তিতে ভ্যাট হেল্প ডেস্ক স্থাপন করতে হবে। জনগণের কাছে নতুন ভ্যাটের বার্তা সহজভাবে পেশ করতে হবে। বিভ্রান্তি থাকলে তা দূরীভূত করতে হবে। জনগণকে চলমান সংস্কার কাজের সাথে একীভূত করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান বলেন, আমরা সকলকে নিয়ে নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন করতে চাই। এ আইনের সেবা যাতে সকলের দোরগোড়ায় পৌঁছায়, সকলে যেন এ আইনের বিভিন্ন দিক সহজে জানতে পারে সেজন্য এনবিআরের অধীনে মাঠ পর্যায়ে সকল আয়কর, কাস্টমস হাউজ, ভ্যাট কমিশনারেট, ভ্যাট ও কাস্টমস প্রশিক্ষণ একাডেমির মহাপরিচালকের কার্যালয়ে এ হেল্প ডেস্ক স্থাপনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
আজকের বাজার:এসএ/এলকে/ ০৪ মে ১৭