ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু হিসেবে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের মতই স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণেও বাংলাদেশের পাশে থাকবে ভারত।
আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সচিবালয়ে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের সাথে তার দপ্তরে বাংলাদেশে ভারতের হাই কমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মার সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এ কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী জানান, সাক্ষাতকালে তারা দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি বিশেষ করে, ডাক ও টেলিযোগাযোগ এবং তথ্য প্রযুক্তি খাত সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেছেন।
প্রতিবেশী বাংলাদেশ ও ভারত এই দু’টি বন্ধুপ্রতীম দেশের মধ্যকার ঐতিহাসিক সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে পলক বলেন, মহান মক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় ভারতের ভূমিকা জাতি চিরকাল স্মরণ করবে। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার বিদ্যমান চমৎকার সম্পর্ক আগামী দিনগুলোতে আরও সুদৃঢ় হবে।
টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে বিদ্যমান কার্যক্রম তুলে ধরে বলেন, ‘আর্কিটেক্ট অব ডিজিটাল বাংলাদেশ’র পায়ওনিয়ার সজীব ওয়াজেদ জয়ের পরামর্শে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টি সম্পন্ন নেতৃত্বে গত ১৫ বছরে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ কর্মসূচি বাস্তবায়নের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ বৈপ্লবিক পরিবর্তনের সূচনা করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪১ সাল নাগাদ ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার রূপকল্প দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের অভিযাত্রা শুরু করেছি’।
জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, সাইবার জগতকে নিরাপদ রাখতে বাংলাদেশ ও ভারত একসঙ্গে কাজ করবে। এ বিষয়ে আগামী তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে দুই দেশের মধ্যে চূড়ান্ত চুক্তি হতে পারে। সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে ৫ বছর আগে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হয়েছিল। ভারতের একটি সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ দল তিন মাস আগে বাংলাদেশ সফর আসলে তখন সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনায় বলা হয়, এ বিষয়ে দুই দেশের একসাথে কাজ করা জরুরী।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, কোনো দেশ এককভাবে সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে না। বাংলাদেশ ও ভারতের বিশেষজ্ঞরা এ নিয়ে একসঙ্গে কাজ করবে। নৌপথে, আকাশপথে দুই দেশ যেমন একসঙ্গে কাজ করে, তেমনি সাইবার জগত নিরাপদ রাখতেও একসঙ্গে কাজ করা জরুরী।
এ সময় পলক উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের ১২টি হাইটেক পার্ক নির্মাণে লাইন অব ক্রেডিটের (এলওসি) আওতায় ভারত ১৯ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে। এসব হাইটেক পার্ক আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে চালু হবে। ডিজিটাল বাংলাদেশের পাশাপাশি স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে দেশটি বাংলাদেশকে সহযোগিতা করবে। এতে মানুষের কর্মসংস্থান হবে। রপ্তানি বাড়বে।
তিনি বলেন, ‘প্রায় দেড়শত কোটি মানুষের দেশ ভারত একটি বিশাল বাজার। আমরা আমাদের উৎপাদিত সফটওয়্যার এবং হার্ডওয়্যার রপ্তানির মাধ্যমে বিশাল এ বাজার ডিজিটাল প্রযুক্তি খাতের অগ্রযাত্রার মাইলফলক হতে পারে।’
জুনাইদ আহমেদ পলক জানান, এছাড়াও ডেটা সেন্টার নির্মাণ, ডাক, টেলিকম ও আইসিটি’র বেসরকারি খাতে ভারতীয় বিনিয়োগ বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ-ভারত স্টার্টআপ সেতুবন্ধন ত্বরান্বিত করতে আরো মনোযোগ দেয়া হবে। বিপরীতে ডিজিটাল ভারত বিনির্মাণে বাংলাদেশ দেশটির পাশে থাকবে। আর ভারত স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বাংলাদেশের পাশে থাকবে।
বৈঠকের বিষয়ে ভারতের হাইকমিশনার বলেন, আইসিটি খাতের নানা বিষয়ে তাৎপর্যপূর্ণ আলোচনা হয়েছে। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে ভারত বাংলাদেশের পাশে থাকবে এবং সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে দুই দেশ একসঙ্গে কাজ করবে। তিনি বলেন, তরুণদের কিভাবে আরো প্রযুক্তি-নির্ভর ও কর্মমুখী করা যায় সে বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। ডিজিটাল পেমেন্ট কিভাবে হবে সেটিও আলোচনায় এসেছে।
হাই কমিশনার বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক বৃদ্ধির কারণে দু’দেশের মানুষ উপকৃত হয়েছে। ভবিষ্যতেও এ সম্পর্ক অব্যাহত থাকবে। (বাসস)