গুলশানে হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলা মামলায় ৮ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেছেন আদালত। এ চার্জ গঠনের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়েছে।
সোমবার, ২৬ নভেম্বর সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমান এ চার্জ গঠনের আদেশ দেন। একই সঙ্গে বিচারক আগামী ৩ ডিসেম্বর সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ ধার্য করেছেন।
আসামিরা হলেন-হামলার মূল সমন্বয়ক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডার নাগরিক তামিম চৌধুরীর সহযোগী আসলাম হোসেন ওরফে রাশেদ ওরফে আবু জাররা ওরফে র্যাশ, ঘটনায় অস্ত্র ও বিস্ফোরক সরবরাহকারী নব্য জেএমবি নেতা হাদিসুর রহমান সাগর, নব্য জেএমবির অস্ত্র ও বিস্ফোরক শাখার প্রধান মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান, রাকিবুল হাসান রিগ্যান, জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব ওরফে রাজীব গান্ধী, হামলার অন্যতম পরিকল্পনাকারী আব্দুস সবুর খান (হাসান) ওরফে সোহেল মাহফুজ, শরিফুল ইসলাম ও মামুনুর রশিদ।
আসামিদের মধ্যে প্রথম ৬ জন কারাগারে আছেন। অপর দুই আসামি পলাতক রয়েছেন। গত ৮ আগস্ট একই ট্রাইব্যুনাল পলাতক দুই আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
চার্জ শুনানিকালে কারাগারে থাকা ৬ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর বিচারক তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ পড়া শোনান। তাদের কাছে জানতে চান তারা দোষী না নির্দোষ। এ সময় আসামিরা নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন।
এরপর বিচারক তাদের বিরুদ্ধে ২০০৯ সালের সন্ত্রাসবিরোধী আইনের (সংশোধনী ২০০৩) ৬(২)/৭/৮/৯/১০/১২/১৩ ধারায় চার্জ গঠন করে সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ওই তারিখ ঠিক করে দেন।
মামলাটিতে গত ৮ আগষ্ট আট আসামির বিরুদ্ধে দাখিল করা চার্জশিট গ্রহণ করে আদালত। চার্জশিটে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির প্রাক্তন শিক্ষক হাসনাত রেজা করিমের বিরুদ্ধে ওই ঘটনায় জড়িত থাকার বিষয়ে তথ্য-প্রমাণ না পাওয়ায় তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
এর আগে গত ২৩ জুলাই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাউন্টার টেররিজম বিভাগের পরিদর্শক হুমায়ূন কবির মামলাটিতে চার্জশিট দাখিল করেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা হামলা করে এবং দেশি-বিদেশি নাগরিকদের জিম্মি করে। এ সময় অভিযান চালাতে গিয়ে জঙ্গিদের গ্রেনেড হামলায় গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সহকারী কমিশনার রবিউল ইসলাম ও বনানী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সালাউদ্দিন খান নিহত হন। রাতের বিভিন্ন সময় তিন বাংলাদেশিসহ ২০ জন জিম্মিকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে হত্যা করে জঙ্গিরা। পরদিন সকালে যৌথ বাহিনী কমান্ডো অভিযান চালায়। এতে ছয় হামলাকারী নিহত হয়। জীবিত উদ্ধার করা হয় ১৩ জিম্মিকে। এ ঘটনায় ২ পুলিশ কর্মকর্তাসহ ২৮ জন নিহত হন।
২০১৬ সালের ৪ জুলাই নিহত ৫ জঙ্গিসহ অজ্ঞাতদের আসামি করে গুলশান থানায় সন্ত্রাস দমন আইনে মামলা দায়ের করা হয়।
আজকের বাজার/এমএইচ