অর্থ পাচারের সত্যতা পেলে ব্যবস্থা:আইনমন্ত্রী

বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচারের যে তথ্য গ্লোবাল ফাইনানশিয়াল ইন্টিগ্রিটি (জিএফআই) প্রকাশ করেছে তার সত্যতা মিললে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। বুধবার,৩রা মে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের একথা জানান তিনি।

মন্ত্রী বলেন, দেশে এন্টি মানি লন্ডারিং অ্যাক্ট আছে। এই রিপোর্টের সত্যতা পাওয়ার পরে তার মধ্যে যদি এ আইনে কোনো অপরাধ পাওয়া যায় তাহলে আইন অনুযায়ী নিশ্চয়ই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি (জিএফআই) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, গত ১০ বছরে বাংলাদেশ থেকে তিন লাখ ৫৭ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে। সোমবার,১ মে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে ২০০৪ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ১৪৯টি দেশের অর্থ পাচারের তথ্য উঠে এসেছে।

জিএফআই ২০১৩ সালে যে প্রতিবেদন প্রকাশ করে সেটা থেকে জানা যায়, ২০১৩ সাল পর্যন্ত হিসাবে প্রতিবছর গড়ে ৫৫৮ কোটি ডলার সমপরিমাণ অর্থ বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়েছে। ২০০৪ সালে বাংলাদেশ থেকে পাচার হয় ৩৩৪ কোটি ডলার। ২০০৫ সালে পাচার হয় ৪২৬ কোটি ডলার। ২০০৬ সালে পাচার হয় ৩৩৭ কোটি ডলার। তবে ২০০৭ সালে হয় ৪০৯ কোটি ডলার। ২০০৮ সালে পাচার ৬৪৪ কোটি ডলারে পৌঁছায়। ২০০৯ সালে বাংলাদেশ থেকে পাচার হয় ৬১২ কোটি টাকার বেশি। আর ২০১০ সালে হয় ৫৪০ কোটি ডলার। ২০১১ সালে হয় ৫৯২ কোটি ডলার। এর পরের বছর ২০১২ সালে পাচার হয় ৭২২ কোটি ডলার। আর ২০১৩ সালে সর্বোচ্চ ৯৬৬ কোটি ডলার।

‘নতুন গবেষণা: উন্নয়নশীল দেশগুলোতে বড় এবং স্থায়ী অবৈধ আর্থিক প্রবাহ’ বিষয়ক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পণ্য বা সেবা আমদানিতে ওভার ইনভয়েসিং এবং রপ্তানিতে আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে এসব অর্থ পাচার করা হচ্ছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ওই ১০ বছরের গড় হিসাবে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভারত থেকে ৫৫ হাজার ৭ কোটি ডলার পাচার হয়েছে। এছাড়া ওই সময়ে শ্রীলঙ্কা থেকে দুই হাজার ৩২৩ কোটি, নেপাল থেকে ৫২৫ কোটি, পাকিস্তান থেকে পাঁচ হাজার ৮৯৫ কোটি ডলার পাচার হয়েছে। এছাড়া আফগানিস্তান থেকে পাচার হয়েছে ১১ হাজার ৭৯৬ কোটি ডলার।

উল্লেখ, জিএফআই একটি অলাভজনক সংস্থা, যারা উন্নয়নশীল দেশগুলোর অবৈধ আর্থিক প্রবাহ বা মুদ্রাপাচার নিয়ে গবেষণা ও বিশ্লেষণ করে থাকে। একইসঙ্গে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সরকারের নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের সঙ্গে অর্থপাচার রোধে বিভিন্ন রকম পরামর্শের মাধ্যমে নীতিগত সহায়তা দিয়ে থাকে।

আজকের বাজার:এলকে/এলকে/৩রা মে,২০১৭