আইসিটি খাতের রফতানিকারকদের জন্য বিশেষ সুবিধা

তথ্য যোগাযোগ ও প্রযুক্তি (আইসিটি) খাতের রফতানিকারকদের জন্য বিশেষ সুবিধা ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন থেকে আইসিটি খাতের রফতানিকারকরা রফতানির মাধ্যমে যে পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আয় করবেন তার ৭০ শতাংশ এক্সপোর্টার্স রিটেইনশন কোটা (ইআরকিউ) একাউন্টে রাখতে পারবেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় শাখা রবিবার (২ এপ্রিল) এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করেছে। আইসিটি খাতের রফতানি বৃদ্ধির লক্ষ্যে এ সুবিধা দেওয়া হয়েছে বলে সার্কুলারে বলা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটে সার্কুলারটি প্রকাশ করা হয়েছে।

২০১৫ সালের ২৭ মে এ সংক্রান্ত জারি করা সার্কুলার অনুযায়ী, ইআরকিউ একাউন্টে রফতানি আয়ের ৬০ শতাংশ রাখতে হতো রফতানিকারকদের।

নতুন সার্কুলারের ফলে আইসিটি খাতের রফতানিকারকরা আগের তুলনায় তার রফতানি আয়ের ১০ শতাংশ বেশি ইআরকিউ একাউন্টে রাখতে পারবেন।

সংশ্লিষ্টরা জানান, কোন রফতানিকারক রফতানির মাধ্যমে যে বৈদেশিক মুদ্রা (ডলার, পাউন্ড বা ইউরো) আয় করেন তা ওই একই মুদ্রায় (ডলার, পাউন্ড বা ইউরো) ইআরকিউ একাউন্টে জমা রাখতে পারেন। তবে এই একাউন্ট থেকে অর্থ উত্তোলন করতে হলে তা টাকায় রূপান্তর করতে হয়।

আবার বিদেশ থেকে কোন পণ্য আমদানি করতে হলে তা বৈদেশিক মুদ্রায় পরিশোধ করতে হয়।

কোন রফতানিকারক রফতানির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করলেও তিনি বিনিময়মূল্য হিসাবে সমপরিমাণ দেশিয় মুদ্রা (টাকা) পেয়ে থাকেন। সেই রফতানিকারকে যদি বিদেশ থেকে কোন পণ্য বা সেবা আমদানি বা গ্রহণ করতে হয় তাহলে তাকে টাকাকে আবার বৈদেশিক মুদ্রায় রূপান্তর করতে হয়। মুদ্রার এ ধরনের রূপান্তরজনিত কারণে আর্থিক লোকসানের মুখে পড়তে হয় তাকে।

উদাহরণস্বরূপ ধরা যাক, একজন রফতানিকারক রফতানির মাধ্যমে কিছু ডলার অর্জন করলেন। এখন বাংলাদেশি মুদ্রায় রূপান্তরের সময় দেখা যায় বাজারমূল্যের চেয়ে কিছুটা কম দামেই তাকে ডলার বিক্রি করতে হচ্ছে। আবার বাংলাদেশি মুদ্রাকে ডলারে রূপান্তরের সময় কিছুটা বেশি দামেই তাকে কিনতে হচ্ছে। এভাবে ডলারকে একবার টাকায় এবং টাকাকে আবার ডলারে রূপান্তরের কারণে তার কিছু অর্থের লোকসান ঘটছে।

একটি বেসকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা জানান, মুদ্রার রূপান্তরের কারণে ডলার প্রতি দেড় টাকা থেকে ২ টাকা পর্যন্ত লোকসানের মুখে পড়তে হয়।

এখন ইআরকিউ একাউন্টে বৈদেশিক মুদ্রায় আগের তুলনায় ১০ শতাংশ বেশি অর্থ রাখতে সুযোগ দেওয়ার কারণে রূপান্তরজনিত লোকসানের পরিমাণ কমবে। এতে রফতানিকারকরা বাড়তি সুবিধা পাবেন বলে জানান ওই ব্যাংক কর্মকর্তা।

তিনি আরও জানান, বৈদেশিক মুদ্রা আয় যতটা সহজ, বিদেশে পাঠানো ততটাই কঠিন। বৈদেশিক মুদ্রা পাঠানোর ক্ষেত্রে নানা ধরনের কৈফিয়ত দিতে হয়। তবে ইআরকিউ একাউন্টে কোন অর্থ জমা থাকলে সে অর্থ রফতানির মাধ্যমে আয় হয়েছে, এটি নিশ্চিত করে বলা যায়। ফলে এ একাউন্ট থেকে বিদেশে কোন অর্থ পরিশোধ করতে হলে তেমন কোন প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় না। আগের তুলনায় ইআরকিউ একাউন্টে ১০ শতাংশ অর্থ বেশি রাখতে পারার কারণেও বাড়তি সুবিধা পাবেন রফতানিকারকরা।