আমাদের পুঁজিবাজারকে সমৃদ্ধ করবে: ড. এম মোশাররফ হোসাইন,এফসিএ

‘ওয়ার্ল্ড ইনভেস্টর উইক’ এটা অ্যাওয়ারনেস বিল্ডিংয়ের একটা পদক্ষেপ। অবশ্যই এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীরা সচেতন হবেন। ক্যাপিটাল মার্কেটের প্রসপেক্ট, সেখান থেকে কী কী সুবিধা পাওয়া যেতে পারে, এসবের ব্যাপক প্রচারের একটা সুয়োগ হলো এই মেলা। যেহেতু এটা সারা বিশে^ হচ্ছে সেহেতু আমাদের দেশেও এটা করতে হবে। বলে রাখা ভালো, এটা একযোগে সারা বিশে^ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আমাদের রেগুলেটর যেহেতু কেটাগরাইজড রেগুলেটর সেহেতু এই ক্যাটাগরির মেম্বার আমরা। সে অনুযায়ী আমাদের এই আয়োজন করতে হবে। এর জন্য যতরকম সহযোগিতা বা উদ্যোগ নেয়ার প্রয়োজন তার সবটুকু আমরা ইতিমধ্যে নিয়েছি।

এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায় আমরা। উদ্বোধনের পর সপ্তাহব্যাপি এ মেলা চলবে। সেখানে স্টল থাকবে, যেখানে স্টক হোল্ডাররা তাদের প্রোডাক্ট নিয়ে সবার সামনে প্রদর্শন করবে। চুড়ান্তভাবে বললে, এর মাধ্যমে সবার উপকার হবে। সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন এই মেলা নিয়ে ব্যাপক কাজ করছে; উদ্দেশ্য আগের মতো না বুঝে যাতে কেউ আর বিনিয়োগে না আসে; সবাই জেনে বুঝে বিনিয়োগ করতে পারে। ‘এটা অনেক বড় ধরনের একটা ভ্যালু এডিশন, ইন আওয়ার ক্যাপিট্যাল মার্কেট’। এটা অনেক আগেই হওয়া দরকার ছিল, এর জন্য কমিশনকে ধন্যবাদ জানাই যে তারা দেরিতে হলেও এরকম একটা উদ্যোগ নিয়েছেন। এখন আমাদের কর্তব্য হলো একে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া ফর দা বেটারমেন্ট অফ ক্যাপিটেল মার্কেট। এ ছাড়া আসলে উপায়ও নেই। আসলে রিউমারের উপর নির্ভর করে বিনিয়োগ করে আমরা ক্ষতির মুখে পড়ি। আর এই লসের কারণে সামগ্রিকভাবে বাজে প্রভাব গিয়ে পড়ে সমাজে। উন্নয়নশীল দেশগুলোতে কিন্ত মেজর আয়ের সিংহভাগই আসে এই ক্যাপিট্যাল মার্কেট থেকে। করণ ক্যাপিট্যাল মার্কেট হলো বিনিয়োগের জন্য একটা উত্তম জায়গা। কিন্ত আমাদের দেশে আদৌ কি তা হচ্ছে?

আমাদের দেশের বর্তমান পরিস্থিতির উন্নয়নে, বিনিয়োগকারীদের কনফিডেন্স বিল্ডিং, সচেতনতা বাড়াতে এই উদ্যোগ কাজে আসবে। এটি চলমান প্রসেস, এর মাধ্যমে মার্কেটের ডেপথ তৈরি করবে। সবাইকে ফাইন্যান্সিয়াল মার্কে, রিস্ক কী, কিভাবে বিনিয়োগ করবেন, কোন শেয়ারে ইনভেস্ট করবেন বা কোনটাতে করবেন না, মেলায় আসলে আস্তে আস্তে এ ব্যাপারগুলো সবাই বুঝতে পারবে । এটাই হলো আমাদের উদ্যোগের মূল উদ্দেশ্য।

সপ্তাহব্যাপি এ অনুষ্ঠান চলবে, যদি একই সাথে সব ডিভিশনাল এরিয়ায়, সমান উদ্যোগ নেয়া হতো তাহলে অনেক ভালো হতো। আর এর ধারাবাহিকতা থাকলে একটা পজিটিভ ইমপ্যাক্ট তৈরি হবে সবার মাঝে। যেহেতু সারা বিশে^ একই সময়ে এই অনুষ্ঠান পালন করা হবে, তাদের সঙ্গে আমরাও একাত্ম হলাম। এর মাধ্যমে আমাদের যারা পলিসি মেকার তারাও ভাবছেন, কী করে মার্কেটটাকে আরো স্ট্যাবল করা যায়, কিভাবে বার্ডেন ফ্রি করা যায়, প্রব্লেম ফ্রি করা যায়। তো এমন আয়োজন মানে হলো, ব্রেইন স্ট্রর্মিং। কারণ এখানে অনেক ধরনের আইডিয়া শেয়ার করা হবে। যার মাধ্যমে সবাই পুঁজিবাজারের ব্যাপারে আরো বিশদ জানতে পারবে। এর পর যখন এই পলিসি ক্যাপিট্যাল মার্কেটে ইমপ্লিমেন্ট হবে তখন আমাদের মার্কেট আরো স্ট্যাবল হবে। এই উদ্যোগ সার্বিকভাবেই আমাদের ক্যাপিটাল মার্কেটকে সমৃদ্ধ করবে বলে আমি আশা করি।

মার্কেটের স্ট্যাবিলিটির জন্য প্রয়োজন বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যালেন্সড উদ্যোগ। এর জন্য আমাদের সবার কো-অর্ডিনেশন প্রয়োজন। কারণ ক্যাপিট্যাল মার্কেট আর মানি মার্কেট এই দুটোই হলো মুদ্রার এপিঠ আর ওপিঠ। একটাকে বাদ দিয়ে অন্যটা হবে না। আপনার মানি সার্কুলেশন করতে গেলে ক্যাপিটাল মার্কেটের কথা ভুলে গেলে চলবে না। আর এই ক্যাপিটাল মার্কেট থেকেই আমরা ক্যাপিটাল সার্ভিস দিচ্ছি, টুয়ার্ডস দা এন্টারপ্রেনিউর। কারণ তারা বাইরে যাচ্ছে, বিভিন্ন উদ্যোগ নিচ্ছে, কর্মক্ষেত্র তৈরি করছে, সেখানে এমপ্লয়ম্যান্ট তৈরি হচ্ছে, তারা মানি জেনারেট করছে, সেই মানি দিয়ে মানি মার্কেটে যাচ্ছে। তাহলে দেখেন, রুট বা মূল শুরুটা হলো কিন্ত ক্যাপিট্যাল মার্কেট থেকে। সে জন্য মানি মার্কেট রেগুলেট করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ক্যাপিটেল মার্কেট আবার রেগুলেট করছে সিকিউরিটি এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন। সুতরাং এই দুই প্রতিষ্ঠানের কর্তাদের আমরা কো-অর্ডিনেটেড দেখতে চাই। যার সঠিক প্রয়োগের মাধ্যমে আমরা একটি স্ট্যাবল স্টক মার্কেট দেখতে পাবো। আমরা দেখি যে, সেন্ট্রাল ব্যাংকের প্রেসারে জেনারেল ব্যাংকগুলো তাদের ইনভেস্ট মেন্ট প্রপারলি করতে পারছে না কিন্ত তাদের উইলিংনেস আছে। এটা আমরা বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় বা লোক-মুখে শুনতে পাই। ফলে এই জায়গায় আমরা চাই আরো শক্ত সমন্বয়। কারণ বাংলাদেশের অর্থনীতি হলো আমাদের। এর যদি দুটো ভাগ হয় এর একটা ভাগ হলো মানি মার্কেট আর অন্যটা হলো ক্যাপিট্যাল মার্কেট। তো ক্যাপিটেল মার্কেট বাদ দিয়ে কিন্ত মানি মার্কেট ভালো চলতে পারে না। পরিশেষে আমি একটা কথাই বলব, বাংলাদেশ যে কোন স্ট্যান্ডই নিক না কেন সেটা যেন সবার সাথে সমন্বিতভাবে একটি ব্যালেন্সড স্ট্যান্ড হয়।

ড. এম মোশাররফ হোসাইন,এফসিএ

ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিই্ও

প্রাইম ফাইন্যান্স ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিঃ