আলাদা ট্রেড রুম ও ট্রেডারের দাবি নারী বিনিয়োগকারীদের

বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) হিসাবে দেশের পুঁজিবাজারে নারী বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বাড়ছে। আগে নারীদের নামে বিও অ্যাকাউন্ট খুলে পরিবারের পুরুষরা ব্যবসা করলেও এখন অনেক নারী নিজেরাই লেনদেনে অংশ নিচ্ছেন। নারীর অংশগ্রহণ বাড়লেও বাড়েনি তেমন সুযোগ সুবিধা।

নারী দিবসে (৮ মার্চ) শিল্প ও বন্দর নগরী খুলনার নারী বিনিয়োগকারীরা এমন অভিযোগ করে আলাদা ট্রেড রুম ও ট্রেডারের দাবি করেন। একই সাথে বিশেষ সুবিধায় নারীরা যাতে ব্যাংক ও সিকিউরিটিজ হাউজ থেকে লোন পান তার দাবি জানান, তাহলে পুঁজিবাজারে নারীর অংশগ্রহণ আরো বাড়বে বলে মনে করেন তারা।

মৌসুমী সুলতানা সুমি নামের এক নারী বিনিয়োগকারী বলেন, মেয়েদের জন্য আলাদা ট্রেডের জায়গা হলে ভালো হয়। ছেলেদের সাথে অনেকটা সময় থাকা আমাদের মেয়েদের কিছুটা আনইজি তো থেকেই যায়। সেক্ষেত্রে মেয়েদের জন্য আলাদা ট্রেডের জায়গা ও নারী ট্রেডার থাকলে ভালোই হয়। নারীদের জন্য সিকিউরিটিজ হাউজগুলোতে আলাদা লেনদেনের ব্যবস্থা ও সুযোগ-সুবিধা বাড়লে পুঁজিবাজারে নারীর সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

এ প্রসঙ্গে জাহানারা নামের এক বিনিয়োগকারী বলেন, শুরু দিকে আমি প্রাইমারী মার্কেটে বিনিয়োগ করতাম। এখন এর পাশাপাশি সেকেন্ডারি মার্কেটেও বিনিয়োগ করছি। আগে কালেভদ্রে নারী বিনিয়োগকারীদের পুঁজিবাজারে দেখা যেত। কিন্তু এখন প্রতিনিয়তই নারীদের পুঁজিবাজারে দেখা যাচ্ছে। যা খুবই ইতিবাচক।

তিনি বলেন, হাউজগুলোতে নারী বিনিয়োগকারীদের আলাদা লেনদেন করার ব্যবস্থা থাকলে বিনিয়োগকারীর সংখ্যা আরও বাড়বে। খুলনার ১৭ টি সিকিউরিটজ হাউজে খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, প্রাইমারি মার্কেট শুধু নয় সেকেন্ডারি মার্কেটেও নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ছে।

এসোসিয়েট ক্যাপিটাল সিকিউরিটিজ হাউজের খুলনা শাখা ব্যবস্থাপক মাহফুজুর রহমান অর্থসূচককে বলেন, নারীর জন্য আলাদা ট্রেডের জায়গা দরকার। সে রকম পরিবেশ করা দরকার। আমাদের এখানে সব পুরুষ এক জায়গা বসছে নারী আসছে ট্রেড করছে আসলে এগুলো নারীরা ভালো ফিল করেন না। এ রকম যদি হয় একটা হাউজে আলাদা জায়গা ও মহিলা ট্রেডার দেওয়া যায় তাহলে ভালো হয়।

তিনি আরও বলেন, আমাদের হাউজে প্রায় ১০ ভাগ নারী বিনিয়োগকারী। বেশির ভাগ মোবাইলে বিনিয়োগ করলেও অনেকে হাউজে আসেন। আইল্যান্ড সিকিউরিটিজ হাউজের খুলনা শাখা কর্মকর্তা তাপস কুমার সাহা বলেন, আমাদের হাউজে নারীদের জন্য আলাদা স্থান ও নারী ট্রেডার রয়েছে। সব হাউজে এ রকম হলে ভালো হতো।

তিনি জানান, নারীরা এখন সচেতন হচ্ছেন। সে কারণে তারা পুঁজিবাজারমুখী হচ্ছেন। এটি দেশের অর্থনীতির জন্য ভাল লক্ষণ। নারীরা এগিয়ে গেলে দেশ এগিয়ে যাবে। ভবিষ্যতে নারী বিনিয়োগকারীদের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে মনে করেন তিনি।

এদিকে বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য দুটো বিষয় খুব জরুরি। প্রথমটি আর্থিক সক্ষমতা, দ্বিতীয়টি মেধা। দুটোই এ দেশে অনেক নারীর আছে তবুও বিশেষ সুযোগ সুবিধা না থাকায় অনেকে বাজারের প্রতি আগ্রহী হচ্ছেন না।

সুত্র: অর্থসূচক