উত্তরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিরাপদ কর্মস্থলের দাবি

উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল (ইউএএমসিএইচ)-এর শিক্ষক, চিকিৎসক এবং কর্মকর্তা-কর্মচারিরা হয়রানিমুক্ত নিরাপদ কর্মস্থলের দাবি জানিয়েছে।
সম্প্রতি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক শিশুর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে রোগীর লোকজনের সাথে বহিরাগত ব্যক্তির হামলা ও অব্যাহত হুমকির প্রেক্ষিতে ইউএএমসিএইচ-এর শিক্ষক-চিকিৎসক ও কর্মকর্তা-কর্মচারিরা এই দাবি জানায়।
বুধবার হাসপাতাল চত্বরে আয়োজিত এক মানববন্ধনে ইউএএমসিএইচ-এর অধ্যক্ষ এবং ইউএএমসিএইচ ডক্টরস এন্ড টিচার্স ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. সাব্বির আহমেদ খান সভাপতিত্ব করেন। এসময় হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) খাদেমুল ইনসান মো. ইকবাল উপস্থিত ছিলেন।
কলেজের মেডিসিন বিভাগের সহযোগি অধ্যাপক ডা. মারুফ বিন হাবিব অভিযোগ করেন, ৮ জানুয়ারি হাসপাতালের শিশুরোগ বিভাগে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সুহাইমা নামের আড়াই মাস বয়সী এক শিশুর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে হাসপাতালটির বিরুদ্ধে একটি মহল নানাবিধ অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত ৬ জানুয়ারি পাতলা পায়খানা বমি ও কাশি নিয়ে সুহাইমা হাসপাতালে ভর্তি হয়। ৯ জানুয়ারি বেলা ১২ টা ৪৫ মিনিট নাগাদ একিউট গ্যাস্ট্রোনইনস্ট্রিস উইথ সেপটিসেমিয়া উইথ চোকিং অ্যাটাক উইথ কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়ে শিশুটি মৃত্যুবরণ করে।
ডা. মারুফ জানান, শিশু মৃত্যুর ঘটনার পরপরই রোগীর স্বজনদের সাথে মিলে কিছু বহিরাগত ব্যক্তি শিশুরোগ বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য সেবাদানকারীদের অবরুদ্ধ করে রাখে এবং অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে। তারা এসিড দিয়ে মুখ ঝলসে দেয়াসহ প্রাণনাশের হুমকি দিতে থাকে। কর্তব্যরত সিকিউরিটি গার্ডকে তারা বেধড়ক মারধর করে। পরবর্তীতে হাসপাতালে অন্যান্য চিকিৎসক, সিকিউরিটি গার্ড এবং অন্যান্য লোকজন কর্তব্যরত চিকিৎসক এবং সংশ্লিষ্টদের উদ্ধার করলেও এরই মধ্যে রোগীর লোকজন ও তাদের উচ্ছৃংখল বহিরাগত সহযোগীরা হাসপাতালে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়।
ডা. মারুফ বিন হাবিব বলেন, এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে হাসপাতালের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কিন্তু প্রকৃত সত্য প্রকাশের আগেই একটি মহল সোশ্যাল মিডিয়া এবং অন্যান্য অনলাইন মাধ্যমে অসত্য এবং বিভিন্ন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কথাবার্তা প্রচার করে হাসপাতাল এবং সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। এতে তাদের কাজের সমস্যা হচ্ছে এবং তার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
কর্মক্ষেত্রে চিকিৎসক ও সংশ্লিষ্টদের হয়রানি বন্ধ করা না গেলে হাসপাতালে রোগীদের স্বাস্থ্য সেবা ব্যাহত হবার আশঙ্কা রয়েছে বলে মানববন্ধনে বক্তারা মত প্রকাশ করেন।