এই মহাবিপদে নিরবিচ্ছিন্ন খাদ্য সরবরাহে করনীয়

করোনাকালীন এই সময়ে কিভাবে নিরবিচ্ছিন্নভাবে খাদ্য সরবরাহ করা যায়, সে বিষয়ে আলোকপাত করতে গেলে প্রথমেই আমি বলতে চাই, আমাদের দেশের মানুষের খাদ্যাভ্যাস অনেক পুরনো। বেশিরভাগ মানুষের মধ্যে খাদ্যাভ্যাসে তেমন একটা পরিবর্তন আসেনি। তবে আমরা দেখছি, শহরে কিছু অল্প বয়সী ছেলেমেয়েরা প্যাকেট বা স্ন্যাকস ফুড খায় এবং তাও নিয়মিত খায় না, মাঝে মাঝে খায়। আমরা যেটা ঘরে প্রস্তুত করছি সেটা দুপুরে বা রাতে খাওয়া হয়। আর যেসব খাবার ফসল থেকে, পোল্ট্রি থেকে আহরণ করতে হয়, আমরা সেগুলো উৎপাদন করি এবং শেষ পর্যন্ত সেগুলোই আমাদের খাবার টেবিলে চলে আসে। এটা ইউরোপ বা অন্যান্য দেশের মতো না যে, আগে আমরা খাদ্য উৎপাদন করলাম, প্রসেস করলাম,তারপর প্যাকেটজাত করলাম এবং তারপর এগুলো ফ্রিজিং করে রেখে দিলাম, সেটা মাসের পর মাস চলবে। সে অবস্থাটা কিন্তু আমাদের দেশে নেই। আমাদের দেশে সাধারণত দুটো বা তিনটে ফসল হয়। তবে বলা যায় গড়ে দুটো ফসল হয়। এখন যা উৎপাদন হলো, পরবর্তী ফসল আসা না পর্যন্ত এই উৎপাদিত ফসলই আমরা খেয়ে থাকি। এটা গেলো ফসলের ক্ষেত্রে।

আর প্রাণীর ক্ষেত্রে, বিশেষ করে মুরগির ক্ষেত্রে যেটা হয়,একদিকে মুরগির বেবি চিকেন হচ্ছে,এই চিকেন আবার বড় হচ্ছে। সেখান থেকে আমরা মাংস হিসেবে খাচ্ছি। মুরগি ডিম দিচ্ছে, সেই ডিম আমরা খাবারের সাথে খাচ্ছি।

আমাদের দেশে বেশির ভাগ মাছ যেগুলো বাজারে দেখা যাচ্ছে, সবই চাষ করা মাছ। এই মাছগুলো খাবার হিসেবে আমাদের টেবিলে চলে আসছে। দুগ্ধ জাতীয় খাবার হিসেবে আমরা সাধারণত মিষ্টি এবং দই খাই। দেখা যাচ্ছে, আমরা যা উৎপাদন করি সেটাই আমরা কনজিউম করি। আমরা প্রসেস ফুড খেয়ে অভ্যস্ত না। যার ফলে আমাদের উৎপাদন প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখা, নিরবিচ্ছিন্ন খাদ্য সরবরাহের প্রধান শর্ত। মহামারীর এই সময়ে এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একদিকে আমরা বলছি বাড়িতে থাকো,বাইরে যেও না। আরেক দিকে আমরা বলছি এসো খাদ্য উৎপাদন করো,দেশের জন্য খাদ্য উৎপাদন লাগবে। আরেক দিকে বলছি পরিবহনে করে খাবার বাজারে নিয়ে যাও। এমন যদি হত উৎপাদিত খাবার ফ্রীজিং করে রাখার ব্যবস্থা আছে। ফ্রীজিং করা খাবার আমরা দুমাস ধরে খেলাম, তারপর যা হয় সেটা দেখা যাবে। মহামারীর এই সময়ে খাদ্য উৎপাদন চালিয়ে রাখতে হবে। এটাই হচ্ছে এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

উৎপাদন প্রক্রিয়া এমন না যে রান্না করতে হবে। ফসলের ক্ষেত্রে বীজ সংগ্রহ করতে হবে, মাঠে চাষ করতে হবে, ইরিগেশন করতে হবে, অন্যান্য এগ্রোনমিক প্রাক্টিস করতে হবে,হারভেস্ট করতে হবে। আবার চিকেনের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। চিকেনের বাচ্চা লাগবে,খাবার লাগবে, আবার উৎপাদিত চিকেন মার্কেটে নিয়ে আসতে হবে।

মাছের ক্ষেত্রে যা করতে হবে তা হলো, মাছের পোনা জোগাড় করতে হবে,পুকুরটা ঠিকমতো মেইন্টেন করতে হবে এবং খাবার দিতে হবে। একইভাবে গরুর ক্ষেত্রে,গরুকে খাবার দিতে হবে। গরুর দুধ সংগ্রহ করতে হবে,ফ্রিজিং করতে হবে,সে দুধ আবার শহরে আসবে। এভাবে আমাদের পদ্ধতিগুলোর একটার সাথে একটা লিংক আছে। আমি যেটা বলার চেষ্টা করছি,কিভাবে আমাদের এই উৎপাদন প্রক্রিয়াটাকে মোটিভেটেড রাখা যায় এবং এই উৎপাদন প্রক্রিয়ায় মানুষগুলোকে নিরাপদ রাখা যাবে। যারা উৎপাদন করল তারা যদি ভয় পেয়ে যায়,নিরুৎসাহিত হয়, তারা যদি মনে করে এটা করা ঠিক হচ্ছে না। উৎপাদিত ফসল, মুরগি, মাছ এটা করে কোনো লাভ হচ্ছে না,সে ক্ষেত্রে তারা খুব একটা উৎসাহ বোধ করবে না।

সে যদি পর্যাপ্ত সাপোর্ট না পায়, তাহলে উৎপাদন হবে না। শুধু সার্পোট হলে হবে না,উৎপাদনেও সাপোর্ট দরকার। উৎপাদনে সাপোর্ট ছাড়া সে যা উৎপাদন করবে,সেটা অর্থনৈতিকভাবে টেকসই হবে না। এসবকিছু মাথায় রেখে আমাদের নিরবিচ্ছিন্ন খাদ্য উৎপাদন,খাদ্য পরিবহন,নিরবিচ্ছিন্ন খাদ্য সরবরাহ এবং মার্কেটিংয়ের পুরো ব্যবস্থাটা করতে হবে।

অনাহারী মানুষের কাছে খাদ্য পৌঁছানোর জন্য,সরকার কৃষিক্ষেত্রে যে প্রণোদনা দিয়েছেন। এই প্রণোদনা কৃষিক্ষেত্রে কি কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারছে,এই ব্যাপারে বলতে গেলে বলতে হয়, আমাদের দেশের মানুষ একটু দয়ালু, যেটা অন্যান্য দেশে নাই। আমাদের দেশে যখন করোনার ঘোষণা হলো,সাথে সাথে দেখা গেল অনেক বড় মনের মানুষ,তারা নিজস্ব উদ্যোগে অথবা সমষ্টিগতভাবে,বিভিন্ন প্যাকেটজাত খাবার বিশেষ করে চাল,ডাল, আলু,লবণ,তেল প্রচুর পরিমাণে প্রথমদিকে সরবরাহ করেছে। ইদানীংকালে আমরা সেটা দেখতে পাই না। তখন করার কারণ হলো,আমাদের সবকিছু তখন লকডাউন ছিলো। এটা নতুন পরিস্থিতি,যেহেতু আমাদের কোনো পূর্ব অভিজ্ঞতা নাই। অনেকে যারা দিন আনে দিন খায়, তারা বেকার হয়ে গেল। যার ফলে, এদেরকে খাদ্য না দিলে একটা হাহাকার পড়ে যেতো।

সরকারিভাবে যে সাহায্যের কথা বলা হয়েছিল সেটা আংশিকভাবে সাধারণ মানুষের হাতে পৌঁছেছে এবং এটাই স্বাভাবিক। কারণ সরকার সাহায্য দিয়ে চার পাঁচ কোটি মানুষ,যারা দিন আনে দিন খায়, তাদেরকে বাঁচিয়ে রাখতে পারতো না। এটা আমাদের মাথায় রাখতে হবে। প্রণোদনার ক্ষেত্রে, গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রি থেকে আমরা দেখেছি, যারা গার্মেন্টসে কাজ করতো, যাদের আইডি নাম্বার ছিল,বিকাশ একাউন্ট ছিল। তারা তাদের বেতন কিছু কিছু পেয়েছে। কিন্তু কৃষক এ পর্যন্ত তেমন কিছু পায়নি। উপজেলা পর্যায়ে কিছু কিছু কৃষককে বীজ দেওয়া হয়েছে,সার দেওয়া হয়েছে। এই সমস্ত কিছু প্রণোদনা আংশিকভাবে দেয়া হয়েছে। আমাদের দেশের প্রায় এক কোটি ৭০ লক্ষ কৃষক পরিবার। সব জায়গাতে কিন্তু প্রণোদনা তেমন একটা পৌঁছায়নি।

আমি প্রথমে বলেছি যে, আমাদের দেশে খাদ্য উৎপাদন করে কিন্তু টেবিলে নিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিলেন,এক ইঞ্চি জায়গাও অনাবাদি যেন না থাকে। আমাদের দেশে যারা কৃষি কাজ করে,কৃষিতে যারা সরবরাহ করে এবং কৃষিতে যারা রেগুলেট করে,এই ঘোষণা তাদের জন্য প্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে। যার ফলে আমরা দেখতে পেলাম যে, আমাদের দেশে যারা কৃষক তারা নড়েচড়ে বসল। প্রথমদিকে তারা ফসলের প্রাপ্য দাম না পেয়ে, কৃষির ব্যাপারে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিল।

 

আমাদের মাননীয় কৃষিমন্ত্রী ড. রাজ্জাকের সহযোগিতায় পরিবহন খুলে দেয়া হলো। সার,বীজ,কীটনাশ,কৃষি যন্ত্রপাতি,মুরগির খাবার এগুলো নিয়ে রাস্তায় চলাচল করতে পারবে। ফলে কৃষকরা যে সমস্ত পণ্য কম দামে বিক্রি করছিল, সেপণ্যগুলো শহরে পাঠাতে সুবিধা হলো।

অদ্যাবধি আমরা দেখছি, সবজির দাম ভালো,ধানের দাম ভালো,ডিম, মাছ,মাংস মুরগি সবকিছুরই দাম নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রয়েছে। যার জন্য কৃষক উৎসাহ বোধ করছে। তারা ফসল উৎপাদন করছে। আর উৎপাদনের জন্য দরকার সার,বীজ,কীটনাশক ও কৃষি যন্ত্রপাতি,মুরগির খাবার,মাছের খাবার, গরুর খাবার।

বিভিন্ন কোম্পানি নিরবিচ্ছিন্নভাবে সরবরাহ চালু রেখেছে। সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ রয়ে গেলো,নিরবিচ্ছিন্ন খাবারের ব্যাপার। আমরা এতদিন জানতাম যে,বিভিন্ন এনজিও বা সরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে কৃষক লোন নেয়। এই লোনগুলো দিয়ে তারা প্রয়োজনীয় জিনিস কিনে এবং ফসল উৎপাদন করে। কিন্তু এখন বাস্তব অবস্থাটা হলো,দশ পনেরো বছর থেকে বাংলাদেশে কৃষি ইনপুট সরবরাহের জন্য একটা বিপণন ব্যবস্থা তৈরি হয়েছে কোম্পানির মাধ্যমে।

আমাদের দেশে কৃষি কিন্তু ৯০% বেসরকারি। যার ফলে এই প্রাইভেট কোম্পানিগুলো,সিজনের আগে বিভিন্ন ইনপুট ক্রেডিটে ডিলার এবং রিটেলারের মাধ্যমে কৃষকের কাছে সরবরাহ করে। সরবরাহকৃত ইনপুটগুলো নিয়ে কৃষক ফসল উৎপাদন করে এবং টাকা ফেরত দেয়।

করোনাকালীন অবস্থায় গত তিনমাস,আমরা এই কাজটা করেছি ব্যাপক আকারে। আমাদের ফসল উৎপাদনে কোনো রকমের ঝামেলা হয়নি। কৃষক নিরবিচ্ছিন্নভাবে ফসল উৎপাদন করেছে।

সেজন্য এখন যে ব্যাংকের মাধ্যমে কৃষককে লোন দেয়া হচ্ছে,সেটা না করে যদি কোম্পানিকে ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল দিয়ে ইনপুট সরবরাহ করা হয়,তাহলে নিরবিচ্ছিন্নভাবে খাদ্য উৎপাদন করে সরবরাহ করা নিশ্চিত হবে। এটাকেই এখন সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দিতে হবে। এই বিষয়টা নিয়ে অনেকেই কথা বলছে না বা অনেকেরই জানা নেই। কিন্তু এই জিনিসটা জানা দরকার। এটাকে অনুপ্রাণিত করতে হবে। তাহলে খাদ্য উৎপাদনে আমাদের কোনো সমস্যা হবে না।

সরকারের পক্ষ থেকে কোম্পানিগুলোকে লোন প্রোভাইড করা বা সক্ষমতা দেয়ার ব্যাপারে বলবো, একজন কৃষকের কোনো সমস্যা হলে,সে পার্শ্ববর্তী ডিলারের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় জিনিস নেয় এবং উপদেশও পায়। এটা একটা শক্তিশালী নেটওয়ার্ক হয়ে গেছে এবং সফলতাও পেয়েছে। এক্ষেত্রে সরকার যেন টেকসই খাদ্য সুরক্ষার কথা ভাবে। তাহলে কোম্পানিগুলোকে কম সুদে লোন দেওয়া উচিত,পরিপূর্ণ নিরাপত্তার মাধ্যমে। তাহলে কৃষকের জন্য সুবিধা হবে,তাদের বেশি সুদ দিতে হবে না। খাদ্যের ঘাটতিও থাকবে না,চ্যালেঞ্জও হবে না।

আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে কৃষিমন্ত্রী মহোদয়কে এই বিষয়ে এখনো অবহিত করা হয়নি। এটা নিয়ে কেউ কোনো কথা বলেনি। আমি দুইএকটা চ্যানেলে এ বিষয়ে কথা বলেছি। গত কয়েকদিন আগে একটি অনুষ্ঠানে কৃষি ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ছিলেন,তাকে আমি এই প্রস্তাবটা দিয়েছিলাম। আমার মনে হচ্ছে,আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হলে এটা আরও গুরুত্ব পাবে।

কোরবানির ঈদে গরু বিক্রি প্রসঙ্গে বলবো, অনেকে গরু পালন করেছেন। হঠাৎ করেই করোনা চলে আসায় তারা বিপাকে পড়েছেন। এইসব মানুষগুলোর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় আমার পরামর্শ হলো,এখন তো আমরা বলছি যে সোশ্যাল ডিস্টেন্স মানতে হবে,পাশাপাশি বসা যাবে না। মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। এটা একটা অভিজ্ঞতা। রোজার ঈদে মানুষ বাড়ি গিয়েছে এবং বাড়ি থেকে ফিরেছে। কেউ এগুলো মানেনি এবং বুঝেনি।

বস্তিতে যে সমস্ত লোক আছে, তারা এসব বোঝেনা এবং মানেও না। আমি মনে করি, কোরবানির হাঁট এখন ভাগ ভাগ করে দেয়া উচিত। আগে যেমন এক জায়গায় সব মিলিত করা ছিল,প্রচুর লোক এক সাথে হতো। সেটাকে যদি একটু বড় করে দেওয়া যায়, তাহলে সুবিধা হবে যে,এত মানুষের একসাথে সমাগম হবে না। আর কোরবানির যেটা উদ্দেশ্য,এটা যদি আমরা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি এবং ধর্মীয় কারণে যদি কোরবানি করি। এই মাংস নিয়ে আমরা কেউ যেন টানাটানি না করি। আমাদের উচিত হবে, কোনো সংস্থাকে বলে দেয়া। যেমনটা সৌদি আরবে হয় যে, আমার জন্য একটা গরু,ভেড়া অথবা দুম্বা কোরবানি দিয়ে দিও। তাহলে একই কাজ এখানে যদি করে কোরবানী দেয়া হয়, তাহলে করোনার এই ঝুঁকি থাকবে না। আমাদের দেশে যে সমস্ত গরিব মানুষ মাংস খেতে পায় না, তারা এই মাংসটা পাবে। একদিকে ধর্ম পালন হলো,আরেকদিকে সাধারণ মানুষকে সাহায্য করা হলো। কোরবানির চামড়ার একটা ব্যাপার আছে, এটা দেশীয় সম্পদ। এটা বিদেশে যাবে এবং কাজে লাগবে। কুরবানির পুরো ব্যাপারটা বিরাট একটা অর্থনৈতিক চক্র।

করোনাকালীন এই সময়ে কিভাবে নিরবিচ্ছিন্নভাবে খাদ্য সরবরাহ করা যায়, সে বিষয়ে আলচনা করতে গেলে প্রথমেই আমি বলতে চাই, সারাবিশ্বে যা ঘটেছে এখানেও তাই হবে। কৃষিতে আমাদের একবার ফসল ফলে, পরের তিন মাস সে উৎপাদিত ফসল আমরা ভোগ করি এভাবেই সাইক্লিং হয়। এবং আমাদের খরচ বাড়ছে। আমরা প্রচুর পরিমাণে আলু খেয়েছি,সেজন্য আলুর দাম বেড়ে গেছে। প্রচুর পরিমাণে ভাত খেয়েছি, তাই চালের দাম বেড়ে গেছে। এগুলো সাপ্লাই এবং ডিমান্ডের সাথে জড়িত।

সেজন্য আমাদের উৎপাদন ঠিক রাখতে হবে। এটা ঠিক রাখতে হলে কৃষিতে প্রযুক্তি দিতে হবে। তাহলেই উৎপাদনে উন্নতি করবে অর্থাৎ ইল্ড বেড়ে যাবে। উৎপাদন খরচ কমে যাবে। কৃষক তার পণ্য বিক্রি করতে পারবে ন্যায্য দামে। তখন কৃষক স্বাবলম্বী হবে এবং তাদের ইনকাম বাড়বে। এটা করতে হলে সরকারের উদ্যোগ নিতে হবে।

আমরা গত বোরো সিজনে দেখেছি,মানুষ খুবই হতাশায় ভুগছিল যে, এবার ধান উঠবে কিনা ঘরে। আমাদের কম্বাইন্ড হারভেস্টার দিয়েই সেই ধান কিন্তু ঠিকমত কৃষকের ঘরে উঠে গেছে। সামনে আমন সিজন আছে, একই চ্যালেঞ্জ সামনে। আমি মনে করি, সরকার এবার বাজেটে যে ৩ হাজার ১৯৮ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে,সেটা খুব তাড়াতাড়ি ছাড় দেয়া উচিত। যাতে করে, পরবর্তী মৌসুমে আরও কম্বাইন্ড হারভেস্টার নির্বিঘ্নে সরবরাহ করা যায়। কৃষক যেন ঝাঁপিয়ে পড়তে পারে ফসল কাটার ক্ষেত্রে। ধান লাগানোর ব্যাপারটাকে নিয়ে কাজ করতে হবে। তাহলে মধ্যমেয়াদে এবং দীর্ঘমেয়াদে কৃষি ও কৃষক উভয়েই টিকে থাকবে।

ড. এফ এইচ আনসারী
ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী, এসিআই এগ্রিবিজনেসস