একনেকে নগর উন্নয়ন ও অবকাঠামো উন্নয়নসহ ১২ প্রকল্পের অনুমোদন

নগর পরিচালনা ও অবকাঠামো উন্নতিকরণ প্রকল্পসহ ১২টি উন্নয়ন প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে আজ জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১০ হাজার ১৪৭ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে যোগান দেওয়া হবে ৬ হাজার ২৮০ কোটি ৬৪ লাখ টাকা, বাস্তবায়নকারী সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে ২৩৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে পাওয়া যাবে ৩ হাজার ৬৩১ কোটি ৩৪ লাখ টাকা।

মঙ্গলবার রাজধানীর শেরে বাংলানগরে এনইসি সম্মেলনকক্ষে একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। এ সময় পরিকল্পনা বিভাগের সচিব জিয়াউল ইসলাম, ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য জুয়েনা আজিজ এবং সাধারন অর্থনীতি বিভাগের সদস্য ড. শামসুল আলম উপস্থিত ছিলেন।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, নগর পরিচালনা ও অবকাঠামো উন্নতিকরণ প্রকল্পটি একটি সংশোধিত প্রকল্প। এটি বাস্তবায়ন হলে দেশের ৩৬টি পৌরসভায় প্রয়োজনীয় যাতায়াত ব্যবস্থা, পানি নিস্কাশন ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং সেনিটেশনসহ ভৌত সুবিধাদির টেকসই উন্নয়ন হবে, যা দরিদ্র জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক অবস্থার পরিবর্তন আনবে।

তিনি জানান, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী প্রকল্পের মূল এলাকায় ইনসিনারেটর (বর্জ্য পোড়ানোর যন্ত্র) বসানোর নির্দেশ দিয়েছেন। কৃষি জমি ও বাড়ী ঘর এড়িয়ে গিয়ে পতিত জমি ও শহর থেকে দুরে ইনসিনারেটর বসানোর নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।
ঢাকার মাতুয়াইলে ল্যান্ডফিল প্রকল্পের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী ল্যান্ডফিলের পাশে খাল ও জলাধার রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বলে পরিকল্পনামন্ত্রী জানান। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী দেশের সব মহাসড়কগুলো প্রশস্তকরণ এবং মান উন্নয়নের নির্দেশ দিয়েছেন।

‘তৃতীয় নগর পরিচালনা ও অবকাঠামো উন্নতিকরণ (সেক্টার) (১ম সংশোধিত) (ইউজিআইআইপ)’ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৪ হাজার ৪৬ কোটি ১৭ লাখ টাকা। এটি জুলাই ২০১৪ থেকে জুন ২০২১ মেয়াদকালে বাস্তবায়ন হবে। পরিকল্পনা মন্ত্রী জানান, চলতি অর্থবছরে এর আগে ২১টি একনেক সভায় ৪ লাখ ১২ হাজার ১৪৯ কোটি টাকার ১৭৪টি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

আজকের সভায় অনুমোদন পাওয়া অন্য প্রকল্পসমূহ হলো, মাতুয়াইল স্যানিটারী ল্যান্ডফিল সম্প্রসারণসহ ভূমি উন্নয়ন প্রকল্প, এতে ব্যয় হবে ৭২৪ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। গাবতলী সিটি পল্লীতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ক্লিনারবাসীদের জন্য বহুতলা বিশিষ্ট আবাসিক ভবন নির্মাণ প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ১৭৭ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্থতায় উন্নীতকরণ প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৯১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।

এছাড়া নড়াইল-কালিয়া জেলা মহাসড়কের ২১তম কিলোমিটার কালিয়া নামক স্থানে নবগঙ্গা নদীর উপর কালিয়া সেতু নির্মাণ প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৫ কোটি টাকা। হেমায়েতপুর- সিংগাইর-মানিকগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়ক যথাযথভাবে ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ২৫৫ কোটি ৩০ লাখ টাকা। সাইবার থ্রেট ডিটেকশন ও রেসপন্স প্রকল্প, এতে ব্যয় হবে ১৪৯ কোটি ৫২ লাখ টাকা। টেকসই ক্ষুদ্রকার পানি সম্পদ উন্নয়ন প্রকল্প, এ প্রকল্পে ব্যয় হবে ৮৯৮ কোটি ৯১ লাখ টাকা।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব মেরিন সাইন্সেস ও ফিশারিজের গবেষণা ও সক্ষমতা বৃদ্ধি প্রকল্প, এতে ব্যয় হবে ৭২ কোটি ১০ লাখ টাকা। নির্মল বায়ু এবং টেকসই পরিবেশ প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৮০২ কোটি ৫২ লাখ টাকা। সার সংরক্ষণ ও বিতরণ সুবিধার জন্য দেশের বিভিন্ন জেলায় ১৩টি বাফার গোডাউন নির্মাণ প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৮২ কোটি ৪ লাখ টাকা। মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ২৭২ কোটি ৪ লাখ টাকা। বৈঠকে মন্ত্রীবর্গ, প্রতিমন্ত্রী, সংশ্লিষ্ট সচিবগণ ও উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।