কমিশন প্রথা উঠে যাওয়ায় অনৈতিক প্রতিযোগিতা কমবে বীমাখাতে

বর্তমানে আমাদের ইন্স্যুরেন্স খাত একটা ভয়াবহ অবস্থার মধ্যে আছে। অস্বাস্থ্যকর প্রতিযোগীতা এবং অনিয়ন্ত্রীত কমিশন প্রথা নিয়ে আমরা অস্বস্তিতে রয়েছি। বিশেষ করে সাধারণ ইন্স্যুরেন্সের (নন লাইফ ইন্স্যুরেন্স) মধ্যে যারা আছে তাদের প্রায় সব প্রতিষ্ঠানই এই সমস্যার সম্মুখিন হচ্ছেন। কমিশনে যখন অস্বাস্থ্যকর প্রতিযোগীতা আসে তখন ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিগুলোর ফান্ড রেইজ হয় না এবং ক্লায়েন্ট পেমেন্টের ক্ষেত্রে অনেক সমস্যা দেখা দেয়।

অস্বাস্থ্যকর প্রতিযোগীতা বা অনিয়ন্ত্রীত কমিশন পেমেন্টের হার আমাদের সাধারণ বীমা সেক্টরকে একটা খাদের কিনারায় নিয়ে দাড় করিয়েছে। এটাকে রক্ষা করার জন্য আমাদের অনেক আগেই পদক্ষেপ নেওয়া উচিত ছিলো। যদিও কিছু কিছু পদক্ষেপ পূর্বে নেওয়া হয়েছিলো, কিন্তু সেটা তেমন ফলপ্রসূ হয়ে উঠেনি। সর্বশেষ গত ২৩ জুন আমাদের রেগুলেটরি বডি ‘আইডিআরএ’ এ সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য কতগুলো পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে ১০টি পদক্ষেপ রয়েছে, যা ইন্স্যুরেন্স সেক্টরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর এই পদক্ষেপগুলো আমরা সব ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি মেনে চলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছি। এই পদক্ষেপগুলো আমার যদি মেনে চলতে পারি তাহলে আমাদের ইন্স্যুরেন্স সেক্টরের ক্যান্সার কমিশন প্রথা থেকে মুক্তি পাবো বলে আমি আশা করি। আর আমরা যদি এই ১০টি পদক্ষেপের বাহিরে যাই, তবে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার হুশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে।

বাজেটের সঙ্গে ইন্স্যুরেন্স খাতের একটা গভীর সম্পর্ক রয়েছে। তবে এবারের বাজেটে ইন্স্যুরেন্স খাতে তেমন কোন পরিবর্তন আসবে বলে আমি মনে করি না। কারণ, এবারের বাজেটে ইন্স্যুরেন্স সেক্টরের উপর কোন প্রনোদনা নেই। আর ভ্যাটও গত বছর যা ছিলো সেটাই রাখা হয়েছে। সুতরাং বাজেটের কোন প্রভাব ইন্স্যুরেন্স খাতে পড়বে না।

আমি মনে করি, আমাদের দেশে সাধারণ ইন্স্যুরেন্সের অনেক ভালো একটা সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এখনও আমরা এটাকে সেই রকম পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারিনি। কারণ, এই সেক্টরে আমাদের যোগ্য লোকবলের অভাব রয়েছে। আর আমরা এর সুফল সম্পর্কে এখনও জনগণকে সচেতন করতে পারিনি, এটাও একটা ব্যর্থতা। আমরা যখন যোগ্য লোকবল নিয়ে জনগণের দোর গোড়ায় পৌছাতে পারবো তখন এই সেক্টরের একটা ভালো সম্ভাবনার পথ উম্মোচিত হবে বলে আমি মনে করি।

মো. শফিকুল ইসলাম
অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও সিএফও
প্রগতি ইন্সুরেন্স লিমিটেড