করোনায় চট্টগ্রামের সর্বোচ্চ ৫৪১ জন আক্রান্ত ও ৭ রোগীর মৃত্যু

চট্টগ্রামে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় করোনাকালের সর্বোচ্চ ৫৪১ জন আক্রান্ত এবং ৭ রোগীর মৃত্যু হয়েছে। সংক্রমণ হার ২০ দশমিক ৭৮ শতাংশ। এর আগে একদিনে জেলায় সর্বোচ্চ সংক্রমিত শনাক্ত হয় ৫২৩ জন এবং সর্বোচ্চ মৃত্যু হয় ৯ জনের।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের রিপোর্টে বলা হয়, নগরীর আট ল্যাবে গতকাল রোববার চট্টগ্রামের ২ হাজার ৬০৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করে নতুন ৫৪১ জন পজিটিভ শনাক্ত হন। এর মধ্যে শহরের বাসিন্দা ৪৫২ জন ও এগারো উপজেলার ৮৯ জন। উপজেলায় আক্রান্তদের মধ্যে হাটহাজারীতে সর্বোচ্চ ২৫ জন, আনোয়ারা, রাউজান ও ফটিকছড়িতে ১৪ জন করে, বোয়ালখালীতে ৮ জন, রাঙ্গুনিয়ায় ৫ জন, সীতাকু- ও লোহাগাড়ায় ৩ জন করে এবং মিরসরাই, বাঁশখালী ও চন্দনাইশে ১ জন করে রয়েছেন। জেলায় করোনাভাইরাসে মোট শনাক্ত ব্যক্তির সংখ্যা এখন ৪৪ হাজার ৮৬০ জন। এর মধ্যে শহরের বাসিন্দা ৩৫ হাজার ৯৮৩ জন ও গ্রামের ৮ হাজার ৮৭৭ জন।
গতকাল করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে ৭ জনের মৃত্যু হয়। মৃতের সংখ্যা বেড়ে এখন ৪৩০ জন। এতে শহরের বাসিন্দা ৩১৫ জন ও গ্রামের ১১৫ জন। সুস্থতার ছাড়পত্র পেয়েছেন নতুন ৬৭ জন। মোট আরোগ্যলাভকারীর সংখ্যা ৩৪ হাজার ৮৩০ জনে উন্নীত হয়েছে। এর মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন ৪ হাজার ৭৪০ জন ও বাসায় থেকে চিকিৎসায় সুস্থ হন ৩০ হাজার ৯০ জন। হোম কোয়ারেন্টাইন বা আইসোলেশনে নতুন যুক্ত হন ৩০ জন ও ছাড়পত্র নেন ১৭ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ১ হাজার ৩৪৪ জন।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৩ এপ্রিল চট্টগ্রামে করোনার প্রথম ভাইরাসবাহক শনাক্ত হওয়ার পর গতকাল শনাক্ত জীবাণুবাহকের সংখ্যা এ পর্যন্ত একদিনের সর্বোচ্চ। এর আগে, ৯ এপ্রিল ৫২৩ জনের নমুনায় সংক্রমণ শনাক্ত হয়, যা তখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ। সংক্রমণের হার ছিল ১৮ দশমিক ৭৪ শতাংশ। এদিন মারা গেছেন ৫ করোনা রোগী। ১ এপ্রিল ভাইরাস শনাক্ত হয়েছিল ৫১৮ জনের নমুনায়। সংক্রমণ হার ২০ দশমিক ৪৩ শতাংশ। এ সময়ে এক করোনা রোগীর মৃত্যু হয়। করোনার প্রথম প্রকোপের সময় গত বছর ৩০ জুন আক্রান্তের সংখ্যা ৪৪৫ জন পর্যন্ত ওঠেছিল। গতকাল মৃতের সংখ্যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৭ জন। এর আগের দিন ৯ রোগীর মৃত্যু হয়। করোনার সংক্রমণ শুরুর পর জেলায় একদিনে এটাই ছিল সর্বোচ্চ মৃত্যু। এ সময়ে ২২৮ জনের নমুনায় ভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয়। যা এ মাসের সর্বনি¤œ সংক্রমণ। সংক্রমণ হার ১২ দশমিক ২১ শতাংশ। এ নিয়ে চলতি মাসের প্রথম ১১ দিনে ৪১ জন মৃত্যুবরণ করেন। ২ এপ্রিল ছাড়া প্রতিদিনই এক বা একাধিক রোগীর মৃত্যু হয়।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস ল্যাবে ৭৫৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় গ্রামের ৪ জনসহ ৭৯ জন জীবাণুবাহক পাওয়া যায়। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ল্যাবে ৪৩৮ জনের নমুনার মধ্যে ২৮ জন করোনায় আক্রান্ত শনাক্ত হন। এরা সবাই শহরের বাসিন্দা। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ২৯৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হলে শহরের ৬৮ ও গ্রামের ৫৩ জনের শরীরে জীবাণু থাকার প্রমাণ মিলে। ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ২৮৯টি নমুনার মধ্যে গ্রামের ১৩টিসহ ৯৫টিতে ভাইরাস পাওয়া যায়। নগরীর একমাত্র বিশেষায়িত কোভিড চিকিৎসা কেন্দ্র আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের আরটিআরএল-এ পরীক্ষিত ১৬টি নমুনার ৪টির পজিটিভ রেজাল্ট আসে। চার জনই শহরের বাসিন্দা।
বেসরকারি ক্লিনিক্যাল ল্যাব শেভরনে ৪৩২ নমুনা পরীক্ষায় গ্রামের ১৫টিসহ ৮৮টি, ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ৩২১টি নমুনার মধ্যে গ্রামের ৩টিসহ ১০৩টি এবং মা ও শিশু হাসপাতাল ল্যাবে ৫১টি নমুনায় গ্রামের ১টিসহ ২৩ টিতে ভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। এদিন চট্টগ্রামের কোনো নমুনা কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে পাঠানো হয়নি।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট পর্যবেক্ষণে বিআইটিআইডি’তে ১০ দশমিক ৪১ শতাংশ, চমেকে ৬ দশমিক ৩৯, চবি’তে ৪০ দশমিক ৭৪, সিভাসু’তে ৩২ দশমিক ৮৭, শেভরনে ২০ দশমিক ৩৭, ইম্পেরিয়ালে ৩২ দশমিক ০৯ এবং মা ও শিশু হাসপাতালে ৪৫ দশমিক ১০ শতাংশ সংক্রমণ হার নির্ণিত হয়।