করোনায় চট্টগ্রামে ৪ জনের মৃত্যু

চট্টগ্রাম করোনাভাইরাসে গতকাল ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময়ে নতুন ১৯১ জনের শরীরে ভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়। সংক্রমণ হার ১৫ দশমিক ৪৬ শতাংশ।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের রিপোর্টে বলা হয়, নগরীর নয়টি ও কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে গতকাল রোববার চট্টগ্রামের ১ হাজার ২৩৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করে নতুন ১৯১ জন পজিটিভ শনাক্ত হন। এর মধ্যে শহরের বাসিন্দা ১৩৮ জন ও দশ উপজেলার ৫৩ জন। উপজেলায় আক্রান্তদের মধ্যে সর্বোচ্চ আনোয়ারায় ১৭ জন, রাউজানে ১০ জন, হাটহাজারীতে ৯ জন, ফটিকছড়িতে ৫ জন, বোয়ালখালী ও মিরসরাইয়ে ৩ জন করে, পটিয়া ও সাতকানিয়ায় ২ জন করে এবং সন্দ্বীপ ও সীতাকু-ে ১ জন করে রয়েছেন। জেলায় করোনাভাইরাসে মোট শনাক্ত ব্যক্তির সংখ্যা এখন ৫১ হাজার ২৮৪ জন। এর মধ্যে শহরের বাসিন্দা ৪১ হাজার ৪৯ জন ও গ্রামের ১০ হাজার ২৩৫ জন।
গতকাল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ৪ রোগীর মৃত্যু হয়। চারজনই শহরের বাসিন্দা। ফলে জেলায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫৬৭ জন হয়েছে। এতে শহরের বাসিন্দা ৪২০ জন ও গ্রামের ১৪৭ জন। সুস্থতার ছাড়পত্র পেয়েছেন নতুন ১০৯ জন। ফলে মোট আরোগ্যলাভকারীর সংখ্যা ৩৭ হাজার ২৭৭ জনে উন্নীত হয়েছে। এর মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ৫ হাজার ২৩২ জন এবং বাসায় থেকে চিকিৎসায় সুস্থ হন ৩২ হাজার ৪৫ জন। হোম কোয়ারেন্টাইন বা আইসোলেশনে নতুন যুক্ত হন ৩৮ জন, ছাড়পত্র নেন ৩৬ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ১ হাজার ৫৩০ জন।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রামে গতকালের ৪ জনসহ চলতি মে মাসের প্রথম নয় দিনে ৪৩ করোনা রোগীর মৃত্যু হলো। এর আগের ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমলেও আবার বেড়েছে। শনিবার ১ হাজার ১৯৭ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৭৪ জন পজিটিভ চিহ্নিত হন, যা ছিল ৩৮ দিনের মধ্যে সর্বনি¤œ। সংক্রমণ হার ৬ দশমিক ১৮ শতাংশ। কিন্তু গতকাল সংক্রমিতের সংখ্যা ও সংক্রমণ হার দু’টোই অনেক বেড়েছে।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ল্যাবে গতকাল সবচেয়ে বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এখানে ৪১০ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হলে ১৩ জন করোনায় আক্রান্ত শনাক্ত হন। এরা সবাই শহরের বাসিন্দা। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ১৯০ জনের নমুনা পরীক্ষায় শহরের ৩৬ ও গ্রামের ৩৫ জন জীবাণুবাহক বলে চিহ্নিত হন। ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস ল্যাবে ১৭২ জনের নমুনার মধ্যে গ্রামের ১ জনসহ ৬ জনের দেহে ভাইরাস থাকার প্রমাণ মিলে। ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ১১৬টি নমুনায় গ্রামের ৭টিসহ ৩০টি জীবাণুবাহক শনাক্ত হয়। নগরীর একমাত্র বিশেষায়িত কোভিড চিকিৎসা কেন্দ্র আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের আরটিআরএল-এ ৮৩টি নমুনা পরীক্ষায় গ্রামের ১টিসহ ২৯টির পজিটিভ রেজাল্ট আসে।
বেসরকারি চার ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরির মধ্যে শেভরনে ১৮৩টি নমুনা পরীক্ষা করে গ্রামের ৪টিসহ ১৬টি, ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ৫১টি নমুনার মধ্যে গ্রামের ৪টিসহ ১৭টি, আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতাল ল্যাবে ১৯টি নমুনায় গ্রামের ১টিসহ ৭টিতে এবং মেডিকেল সেন্টারে ৬টি নমুনার ২টিতে ভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। এ দু’জনই শহরের বাসিন্দা।
চট্টগ্রামের ৫ জনের নমুনা কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে পরীক্ষা করা হয়। পাঁচটিরই ফলাফল নেগেটিভ আসে।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট বিশ্লেষণে চমেকে ৩ দশমিক ১৭ শতাংশ, চবিতে ৩৭ দশমিক ৩৬, বিআইটিআইডি’তে ৩ দশমিক ৪৮, সিভাসু’তে ২৫ দশমিক ৮৬, আরটিআরএলে ৩৪ দশমিক ৯৪, শেভরনে ৮ দশমিক ৭৪, ইম্পেরিয়ালে ৩৩ দশমিক ৩৩, মা ও শিশু হাসপাতালে ৩৬ দশমিক ৮৪, মেডিকেল সেন্টারে ৩৩ দশমিক ৩৩ এবং কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে ০ শতাংশ সংক্রমণ হার নির্ণিত হয়।