করোনায় দেশের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে জানালেন প্রধানমন্ত্রী

বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস সংক্রমণে বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর কি ধরনের ও কতটুকু নেতিবাচক প্রভাব পড়বে সে সম্পর্কে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রবিবার প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে নেতিবাচক প্রভাবগুলো তুলে ধরেন তিনি।

যেসব নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে:

আমদানি ব্যয় ও রপ্তানি আয়ের পরিমাণ গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে এবং অর্থবছর শেষে এর পরিমাণ আরও কম হবে মর্মে আশংকা করা হচ্ছে। চলমান মেগা প্রকল্পসমূহ বাস্তবায়ন, অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা এবং ব্যাংক সুদের হার হ্রাসের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন বিলম্বের কারণে বেসরকারি বিনিয়োগ প্রত্যাশিত মাত্রায় অর্জিত না হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

সেবা খাত বিশেষত: হোটেল-রেস্টুরেন্ট, পরিবহন এবং এভিয়েশন সেক্টরের উপর বিরূপ প্রভাব পড়বে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশের শেয়ার বাজারের ওপরও বিরূপ প্রভাব পড়েছে। বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের চাহিদা হ্রাসের কারণে এর মূল্য ৫০ শতাংশের অধিক হ্রাস পেয়েছে; যার বিরূপ প্রভাব পড়বে প্রবাস আয়ের ওপর।

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ ৩.০২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হবে মর্মে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক প্রাক্কলন করেছে। কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটে মনে হচ্ছে এ ক্ষতির পরিমাণ আরও বেশি হতে পারে।

দীর্ঘ ছুটি বা কার্যত লক-ডাউনের ফলে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহের উৎপাদন বন্ধ এবং পরিবহন সেবা ব্যাহত হওয়ায় স্বল্প আয়ের মানুষের ক্রয় ক্ষমতা হ্রাস এবং সরবরাহ চেইনে সমস্যা হতে পারে।

চলতি অর্থবছরের রাজস্ব সংগ্রহের পরিমাণ বাজেটের লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় কম হবে, যার ফলে অর্থবছর শেষে বাজেট ঘাটতির পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে পারে। বিগত ৩ বছর ধরে ধারাবাহিক ৭ শতাংশের অধিক হারে প্রবৃদ্ধি অর্জন এবং ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৮.১৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনের প্রধান চালিকাশক্তি ছিল শক্তিশালী অভ্যন্তরীণ চাহিদা এবং সহায়ক রাজস্ব ও মুদ্রানীতি। সামষ্টিক চলকসমূহের নেতিবাচক প্রভাবের ফলে জিডিপি’র প্রবৃদ্ধি হ্রাস পেতে পারে।

সম্ভাব্য নেতিবাচক প্রভাবগুলো তুলে ধরে এ থেকে উত্তরণে সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমের আওতা বাড়ানোসহ চারটি কার্যক্রমে ৭২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী।

এ সময় তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের রয়েছে আশ্চর্য এক সহনশীল ক্ষমতা এবং ঘাত-প্রতিঘাত সহ্য করে দ্রুত ঘুরে দাঁড়ানোর সক্ষমতা। জাতির পিতার আহ্বানে সাড়া দিয়ে যে জাতি মাত্র ৯ মাসে স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছে- সে জাতিকে কোন কিছুই থামিয়ে রাখতে পারবে না।’ সূত্র-ইউএনবি

আজকের বাজার/শারমিন আক্তার