করোনা: অক্সফোর্ডের তৈরি ৩ কোটি টিকা আনতে চুক্তি

করোনাভাইরাসের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের তৈরি তিন কোটি ডোজ টিকা আনতে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেড এবং বাংলাদেশের বেক্সিমকো ফার্মাসিটিক্যালস লিমিটেডের সাথে সমঝোতা স্মারক সই করেছে বাংলাদেশ সরকার।

বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের উপস্থিতে এ সমঝোতা স্মারক সই হয়।

সই করেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোস্তফা কামাল এবং সিরাম ইনস্টিটিউট ও বেক্সিমকো ফার্মাসিটিক্যালসের কর্মকর্তারা।

সমঝোতা অনুযায়ী, সিরাম ইনস্টিটিউট বেক্সিমকোকে অক্সফোর্ডের তৈরি সার্স-কোভ-২ এজেডডি ১২২২ (অক্সফোর্ড/অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকা) সরবরাহ করবে।

অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘টিকা তৈরি হলে প্রথম দফাতেই তিন কোটি ডোজ টিকা দেবে সিরাম ইনস্টিটিউট। এ টিকা বাংলাদেশে নিয়ে আসবে বেক্সিমকো ফার্মাসিটিক্যালস।’

তিনি বলেন, ‘আমরা দেড় কোটি মানুষকে এ টিকা দিতে পারব। কারণ, একজন মানুষের দুই ডোজ করে টিকার প্রয়োজন হবে।’

জাহিদ মালেক বলেন, ‘স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে বেক্সিমকো ও ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে বাংলাদেশে করোনার টিকা আনা হচ্ছে। আগামী বছরের জানুয়ারি থেকে এ টিকা বাংলাদেশে আসা শুরু হতে পারে। প্রথমে তিন কোটি ডোজ আনা হবে। টিকা রাখা হবে বেক্সিমকোর গোডাউনে। ভারত যে দামে টিকা পাবে সিরাম ইনস্টিটিউট বাংলাদেশকেও একই দামে তা দেবে বলে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’

তিনি বলেন, এ টিকা অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করেছে। ইংল্যান্ডের বিভিন্ন স্থানে এটি পরীক্ষামূলক প্রয়োগে সফল হয়েছে। বর্তমানে এটি তৃতীয় ধাপে প্রয়োগ শুরু হয়েছে, যার কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই বলে প্রমাণিত হয়েছে। এটি প্রতিটি মানুষের জন্য দুটি করে ডোজ দেয়া হবে। দেড় কোটি মানুষকে ২৮ দিন পর পর এ ডোজ দেয়া হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন সাপেক্ষে বাংলাদেশে আমদানি করতে চুক্তিতে শর্ত রয়েছে।

প্রতিটি ডোজের জন্য সরকারিভাবে ৫ ডলারের (৪৫০ টাকা) মতো ব্যয় হবে বলে জানান তিনি।

এক প্রশ্নের জবাবে জাহিদ মালেক বলেন, ‘করোনাকালীন কর্মরত সম্মুখ সারির যোদ্ধা, স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা, পুলিশ, করোনা আক্রান্ত রোগী, গণমাধ্যম কর্মী ও বয়স্ক ব্যক্তিদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে। তবে পর্যায়ক্রমে এটি দেশের সব মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়া হবে।’

স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. আব্দুল মান্নান বলেন, ‘আমাদের কাছে এ দিনটি স্মরণীয়। (টিকা তৈরি করা) বিশ্বের নয়টি প্রতিষ্ঠান তৃতীয় পর্যায়ে চূড়ান্ত পরীক্ষায় রয়েছে। এর মধ্যে ছয়টির সাথে যোগাযোগ রাখছে বাংলাদেশ। দ্রুত সময়ের মধ্যে করোনার টিকা পাওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।’

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বেক্সিমকো ফার্মার ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হাসান পাপন, স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সচিব আলী নুর ও ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী উপস্থিত ছিলেন।