কিমের মহড়া, এগিয়ে যাচ্ছে ট্রাম্প

‘কোরিয়ান পিপলস আর্মি’র ৮৫তম প্রতিষ্ঠা দিবস পালন করতে গিয়ে আজ,বুধবার বিরাট এক অস্ত্র মহড়াতে থামল কিম জং উনের সেনা। দক্ষিণ কোরিয়ার দাবি, ওনাসন প্রদেশের ওই মহড়ায় বেশ কয়েকটি দূরপল্লার কামানও ছুড়েছে পিয়ংইয়ং।
আর তাতেই খবর হয়েছে ওয়াশিংটনে। উত্তর কোরিয়ার পরিস্থিতি আলোচনায় গোটা সিনেটকেই ডেকে পাঠিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
পেন্টাগনের আশঙ্কা, দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ার আগেই হামলার জন্য তৈরি হচ্ছে পিয়ংইয়ং। তারই পাল্টা প্রস্তুতি হিসেবে আজ দক্ষিণ কোরিয়ায় বন্দরে এসে ভিড়েছে পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্রবাহী মার্কিন ডুবোজাহাজ ইউএসএস মিশিগান। দিন কয়েকের মধ্যে কোরীয় জলসীমায় ঢুকছে বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজ ইউএসএস কার্ল ভিনসন। সেই নৌবহরে যোগ দেওয়ার কথা ইউএসএস মিশিগানেরও। তার এতো তাড়াহুড়ো করার একটাই কারণ তা হলো কিমকে দেখিয়ে দেয়া। পুরো সিনেটকে বৈঠকে ডাকার একমাত্র কারণ এটাই বলে মনে করছেন কূটনীতিকরা।

হোয়াইট হাইস সূত্রের খবর, মার্কিন বিদেশসচিব রেক্স টিলারসন, প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেমস ম্যাটিস-সহ সে বৈঠকে থাকবেন সিনেটের ১০০ জন সদস্য। যদিও বৈঠকে শান্তিপূর্ণ সমাধান নিয়ে আলোচনা হবে কি না, তা স্পষ্ট নয়। কিমের বেপরোয়া পরমাণু কর্মসূচি ঠেকাতে দক্ষিণ কোরিয়া শুরু থেকেই আমেরিকার দোসর। কার্ল ভিনসন এসে পড়লে তারাও জাপানের সঙ্গে যৌথ মহড়ায় নামবে বলে জানিয়েছে সিউল।

যদিও চিন যুদ্ধ এড়াতে চাইছে। গত কাল আমেরিকাকে সংযত হওয়ার আর্জি জানিয়ে ট্রাম্পকে ফোন করেছিলেন চিনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং। কিন্তু তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইউএসএস মিশিগান কোরীয় জলসীমায় ঢুকে পড়ায় ব্যাপারটা আরো ঘোলাটে বলে মনে করছেন সবাই। হোয়াইট হাউসের দাবি, এটি কেবলই রুটিন মহড়ার একটি অংশ। যা মানতে নারাজ পিয়ংইয়ং। পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্র ছাড়াও ইউএসএস মিশিগানে ১৫৪টি টোমাহক ক্ষেপণাস্ত্র, ৬০ জন বিশেষ ভাবে প্রশিক্ষিত সেনা এবং বেশ কয়েকটি ছোট-ডুবোজাহাজ রয়েছে বলে জানিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার এক সংবাদমাধ্যম।

আর তাই যদি সত্যি হয় তা হলে পরিস্থিতি আরও জটিল হবে বলেই মনে করছেন আন্তর্জাতিক কূটনীতিক মহলের একাংশ। কিম এরই মধ্যে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ ডোবানোর হুমকি দিয়ে রেখেছেন। উত্তর কোরিয়া দখলের লক্ষ্যে আমেরিকা পরমাণু যুদ্ধের ছক কষছে বলেও অভিযোগ করেছে সে দেশের শাসক দল ওয়ার্কার্স পার্টির মুখপাত্র।
এদিকে কিমকে ‘শিক্ষা’ দিতে অনড় মার্কিন প্রেসিডেন্ট। গত কাল হোয়াইট হাউসে যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। সেখানে উত্তর কোরিয়ার উপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা চাপানোর প্রস্তাব রেখেছেন বলে বিভিন্ন সুত্রে জানা যায়।

ট্রাম্পের কথায়, ‘‘উত্তর কোরিয়া এই মুহূর্তে গোটা বিশ্বের কাছেই সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর একটা সমাধান আমাদের করতেই হবে।’’ শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্র নিরাপত্তা পরিষদের পররাষ্ট্র সচিবদের সঙ্গে বৈঠক করবেন মার্কিন পররাষ্ট্র প্রধান।যে ভাব ট্রাম্প প্রশাসন কোমর বেধে লেগেছে তাতে মনে হচ্ছে উত্তর কোরিয়ার উপর যে ভাবেই হোক আরও নিষেধাজ্ঞা চাপাতে মরিয়া ট্রাম্প।

সুত্র : আনন্দ বাজার
আজকের বাজার: সালি/এলকে/২৬ এপ্রিল ২০১৭