কিশোরগঞ্জের নারীকে সিলেটে এনে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ আর গ্রেপ্তার করা হয় ৪ জনকে

প্রেম ও বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে কিশোরগঞ্জ থেকে এক নারীকে (২৫) সিলেটে এনে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে নয় জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এ পর্যন্ত পুলিশ চার জনকে আটক করেছে। সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (মিডিয়া এন্ড কমিউনিটি সার্ভিস) বিএম আশরাফ উল্লাহ তাহের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আটককৃতরা হচ্ছে- এসএমপির এয়ারপোর্ট থানাধীন লাউগুল গ্রামের মৃত হামিদ মিয়ার ছেলে জামেদ আহমদ ওরফে জাবেদ (৩৬), ফড়িংউরার মৃত ফুল মিয়ার ছেলে মোশাহিদ আহমদ (২৭), একই গ্রামের মৃত ইউনুছ আলীর ছেলে ফয়সল আহমদ (২২) ও বাজারতল গ্রামের ইসরা হালিমের ছেলে রাসেল আহমদ (২৪)।

অভিযোগ থেকে জানা যায়, কিশোরগঞ্জের ভৈরবের ওই নারীর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ হয় সিলেটের জামেদ আহমদ জাবেদের। আলাপের এক পর্যায়ে জাবেদ তাকে প্রেম ও বিয়ের প্রস্তাব দেন। এতে প্রথমে ওই নারী আপত্তি জানালেও পরে জাবেদের কথায় বিশ্বাস করে রাজী হন।

গত ১০ জুলই সন্ধ্যায় ওই নারী বাড়ি ছেড়ে সিলেটের দক্ষিণ সুরমার হুমায়ুন রশিদ চত্বরে আসেন। সেখান থেকে নিজের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে জাবেদ তাকে খাদিমনগর বুরজান চা-বাগানের মরাকোণা টিলার ওপর একটি ছাউনির ভিতরে নিয়ে যান। সেখানে আগে থেকেই ছিলেন তার সহযোগী ফয়সল আহমদ, রাসেল আহমদ, জামিল আহমদ নামে তিনজন। এই চারজন ভয় দেখিয়ে ওই নারীকে টানা তিন দিন ধর্ষণ করেন। এক পর্যায়ে জাবেদ ওই নারীর মোবাইল ফোনসহ ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়।

এজাহারে ওই নারী আরও অভিযোগ করেন, গত মঙ্গলবার ভোর অনুমানানিক ৬ টার দিকে রুবেল (২৫), ইমাম (২৫), ফারুক (২৩), মো. মোশাহিদ আহমদ (২৭) ও আবুল (২৬) নামে পাঁচ ব্যক্তি সেখানে যান। তখন জাবেদসহ অন্যরা ওই পাঁচ জনের কাছে তাকে রেখে চলে যায়। এরপর ওই পাঁচ ব্যক্তি পালাক্রমে তাকে ধর্ষণ করে।

ধর্ষণের পর মঙ্গলবার সকাল ১১ টার দিকে তাকে ফেলে সবাই চলে গেলে চা বাগানের ওই নির্জন স্থান থেকে বেরিয়ে আসেন ওই নারী। এরপর রাস্তায় একজন লোকের সহায়তায় নিজের খালাতো বোনকে ফোন দিয়ে বিস্তারিত জানান। গত মঙ্গলবার বিকেলে বিমানবন্দর থানায় এসে ওই নারী মৌখিক অভিযোগ জানান। তার অভিযোগের ভিত্তিতে বুরজান চা বাগান এলাকা থেকে জামেদ আহমদ জাবেদ ও মোশাহিদ আহমদকে আটক করা হয়। এরপর তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ফয়সল আহমদ ও রাসেল আহমদকে আটক করা হয়।

ওই নারীর অভিযোগ পেয়েই পুলিশ অভিযানে নামে বলে জানিয়েছেন বিমানবন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ খান মোহাম্মদ মাইনুল জাকির। বুধবার বিমানবন্দর থানায় ভিকটিমের অভিযোগটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। বুধবারই ওই মামলায় আটক ৪ জনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্ত বাকী ৫ জনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। অভিযোগকারী নারীকে চিকিৎসার জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। খবর-ইউএনবি

আজকের বাজার/আখনূর রহমান