কুমিল্লায় স্কুলের শিশুরা নতুন বইয়ের উৎসবে মেতেছে

নতুন বইয়ের গন্ধ শুঁকে/ফুলের মতো ফুটব/বর্ণমালার গরব নিয়ে/আকাশজুড়ে উঠব কামাল চৌধুরী রচিত ছড়া-স্লোগান সূত্র ধরে আজ রোববার কুমিল্লার প্রতিটি স্কুলে পাঠ্যপুস্তক উৎসব উদযাপন করা হয়েছে। শুধু কুমিল্লা জেলা সদরে নয়, নতুন বছরের প্রথম দিন জেলার ১৭ টি উপজেলার স্কুলের শিশুরা একসাথে মেতেছে নতুন বইয়ের উৎসবে। এ এক অনাবিল আনন্দ। উৎসবে শিশু-কিশোরেরা যোগ দিয়ে নতুন বই হাতে বাড়ি ফিরেছেন।

বছরের প্রথম দিন আজ রোববার কুমিল্লার সব স্কুলে এ উৎসবের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীর হাতে বিনামূল্যে বই তুলে দেয়া হয়েছে। সকাল ১০টায় শুরু হওয়া বই উৎসবে যোগ দেয়া শিক্ষার্থীরা নতুন ক্লাসের নতুন বই পেয়ে আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে ওঠে। নতুন বই হাতে পেয়েই শিক্ষার্থীরা পাতা উল্টে নতুন গন্ধ নিতে শুরু করে। বিভিন্ন স্কুল ঘুরে দেখা গেছে, আজ সকাল থেকেই স্কুলের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন গ্রুপে ভাগ হয়ে আনন্দ করছে। প্রত্যেকের মুখে আনন্দের ছাপ।

উৎসবমঞ্চ ছিল লাল-সবুজে মোড়ানো। ছাত্রছাত্রী আর অতিথিদের ক্যাপেও ছিল জাতীয় পতাকার রঙ। হাতে পাওয়া বই তুলে ধরে উৎসবের রঙে মিশে যায় শিশুরা। স্কুল আর মাদ্রাসায় নতুন বই পাওয়া শিক্ষার্থীদের সাথে উৎসবে মেতে উঠেন শিক্ষক-অভিভাবকরাও।
এরকম উৎসাহ ও উৎসবের মধ্য দিয়ে আজ কুমিল্লার প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীর হাতে বই পৌঁছে দিচ্ছে। ২০২৩ সালের প্রথম দিনে কুমিল্লায় প্রায় ১ কোটি ২৬ লক্ষ ১২ হাজার ৫শত ৭১টি বই বিতরণ করা হবে।

জেলা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, রোববার আনন্দ উৎসবের মধ্য দিয়ে কুমিল্লার সরকারি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসা, নিম্ন মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের হাতে এ নতুন বই তুলে দেওয়া হবে। ইতোমধ্যে প্রত্যেক উপজেলা শিক্ষা অফিসের মাধ্যমে বিভিন্ন স্কুলে আগেই বই পৌঁছে গেছে।

কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম বাসসকে বলেন, উৎসবের মধ্যদিয়ে আজ কুমিল্লার সকল শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেয়া হচ্ছে। কুমিল্লা জেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলায় মাদ্রাসা, নিম্ন মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের ৯৮৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য ৯৬ লাখ ৯০ হাজার ৬১৩টি বইয়ের চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে ৮০ লাখ বই ইতোমধ্যে কুমিল্লায় পৌঁছেছে। এছাড়া জেলার ২ হাজার ১১০ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ১ হাজার ৭শত ৪৬টি বেসরকারি কিন্ডার গার্টেনের ৭ লাখ ৩৩ হাজার ৭৪১ জন ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে ২৯ লক্ষ ২১হাজার ৯৫৮টি বই বিতরণ করা হবে।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান বাসসকে বলেন, প্রাক, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সব বই পাবেন। এছাড়া তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নতুন বই দেওয়া হবে। অবশিষ্ট বই আগামী ৫ জানুয়ারির মধ্যে শিক্ষার্থীদের পৌঁছে দেওয়া হবে।

কুমিল্লায় জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ ইউনুছ ফারুকী বলেন, মাদরাসা, নিম্ন মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ইতোমধ্যে আমরা প্রায় ৮০ লাখ বই পেয়েছি। শিক্ষার্থী চাহিদা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে বই পৌঁছে গেছে। আজ সকাল থেকে আনন্দ উৎসবের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বই বিতরণ শুরু হয়েছে। খবর-বাসস

আজকের বাজার/আখনূর রহমান