কোকা-কোলা ও কেওক্রাডং মিলিতভাবে পরিষ্কার করলো ১৮০০ কেজির অধিক সামুদ্রিক বর্জ্য

কোকা-কোলা সিস্টেম বাংলাদেশ এবং কেওক্রাডং বাংলাদেশ যৌথ উদ্যোগে সেন্ট মার্টিন দ্বীপের সমুদ্রসৈকতে কোস্টাল ক্লিনআপ কর্মসূচির আয়োজন করে। ইন্টারন্যাশনাল কোস্টাল ক্লিনআপ ও কোকা-কোলার ২০৩০ সালের মধ্যে ‘বর্জ্যমুক্ত পৃথিবী’ অর্জনের লক্ষ্য পূরণের অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠান দু’টি গত ১২ বছর ধরে মিলিতভাবে বার্ষিক আন্তর্জাতিক কোস্টাল ক্লিনআপের আয়োজন করে আসছে। ওশান কনজারভেন্সি-র হয়ে বাংলাদেশে সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করে কেওক্রাডং বাংলাদেশ। ওশান কনজারভেন্সি নামক আন্তর্জাতিক অলাভজনক সংগঠনটি সামুদ্রিক দূষণ রোধে কাজ করে থাকে।

১২তম বছরের এই আয়োজনে ৪৫০ জনের অধিক স্বেচ্ছাসেবক এই ক্লিনআপ প্রকল্পে অংশগ্রহণ করেন। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিলেন সেন্ট মার্টিনের স্থানীয়সহ সারা দেশের বিভিন্ন পেশার পেশাজীবী এবং বিভিন্ন স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ৩৬তম বার্ষিক আন্তর্জাতিক কোস্টাল ক্লিনআপের সাথে সমন্বয় করে এই আয়োজন করা হয়। সেন্ট মার্টিনের সমুদ্রসৈকত থেকে স্বেচ্ছাসেবকরা এ বছর ১৮০০ কেজির অধিক সামুদ্রিক বর্জ্য পরিষ্কার করেন। এই সামুদ্রিক বর্জ্যের বেশিরভাগই ছিল খাদ্যের প্ল্যাস্টিক মোড়ক, প্ল্যাস্টিক বোতল, বোতলের প্ল্যাস্টিক ঢাকনা, প্ল্যাস্টিক ব্যাগ ইত্যাদি ।

কোকা-কোলা বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তা জি তুং বলেন, “প্লাস্টিক দূষণ একটি বৈশ্বিক সমস্যা এবং আমরাই এই সমস্যা সৃষ্টির জন্য দায়ী। আমাদের প্রতিষ্ঠান প্লাস্টিক দূষণের বিষয়টি বেশ গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে। প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আমাদের নানা ধরনের উদ্যোগ আছে, তার মধ্যে এই কোস্টাল ক্লিনআপ অন্যতম। সেন্ট মার্টিনকে প্লাস্টিকমুক্ত রাখতে কেওক্রাডং বাংলাদেশ ও স্বেচ্ছাসেবীরা নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন, তাদের আমরা ধন্যবাদ জানাই। কিন্তু এই দায়িত্ব আমাদের সবার। সেন্ট মার্টিনে বেড়াতে আসা প্রত্যেকেরই এই এলাকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য রক্ষার ক্ষেত্রে সতর্ক হওয়া উচিত। এই আয়োজনের মধ্য দিয়ে মানুষ আরও সচেতন হয়ে উঠবে এবং আমরা একটি বর্জ্যমুক্ত পৃথিবী অর্জন করতে পারবো বলে আমি আশাবাদী।”

ওশান কনজারভেন্সি-র বাংলাদেশ অঞ্চলের সমন্বয়ক মুনতাসির মামুন বলেন, “প্রতি বছর লাখো মানুষ সেন্ট মার্টিন দ্বীপে বেড়াতে আসেন। কাজেই এই দ্বীপকে পরিষ্কার রাখা এবং এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সংরক্ষণ করা আমাদের সবার দায়িত্ব। কোকা-কোলার সহায়তায় আমরা গত ১২ বছর ধরে এই উদ্যোগ পরিচালনা করে আসছি। কিন্তু আমাদের প্রত্যেকের নিজের নিজের জায়গা থেকে কাজ করে যেতে হবে, যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এই দ্বীপকে পরিচ্ছন্ন রাখতে পারি। একসাথে কাজ করার মাধ্যমেই আমরা একটি পরিষ্কার ও বাসযোগ্য পৃথিবী অর্জন করতে পারবো।”

সেন্ট মার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, মোঃ মজিবর রাহমান বলেন, “আমরা জানি, সেন্ট মার্টিন দেশের অন্যতম বৃহৎ পর্যটন কেন্দ্র। এর কারণে দ্বীপে প্রচুর বর্জ্য জমা হয়। এই সমস্যা হ্রাসের জন্য সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করছেন, কিন্তু এর পাশাপাশি বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণও গুরুত্বপূর্ণ। কোকা-কোলা ও কেওক্রাডং বাংলাদেশের এই প্রশংসনীয় উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই।”

২০১১ সাল থেকে কোকা-কোলা বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক কোস্টাল ক্লিনআপ উদ্যোগে সহায়তা করে আসছে। বিগত ১২ বছরে ৫,৫০০ এর বেশি সংখ্যক মানুষ একত্রিত হয়ে ১২,৪৫০ কিলোগ্রামের বেশি সামুদ্রিক বর্জ্য সংগ্রহ করেছেন। এই পার্টনারশিপের মাধ্যমে সারা বিশ্বের সমুদ্রগুলোকে দূষণমুক্ত করতে কাজ করছে কোকা-কোলা। এছাড়াও, প্লাস্টিক দূষণ মোকাবেলায় সরকারকে সহযোগিতা করতে বিভিন্ন উদ্যোগ হাতে নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। সম্প্রতি, ঢাকায় প্লাস্টিক দূষণ কমানোর লক্ষ্যে এসআর এশিয়া এবং কর্ডএইড বাংলাদেশকে দু’টি ভিন্ন প্রকল্পে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছে দ্য কোকা-কোলা ফাউন্ডেশন।

জাতিসংঘের নির্ধারিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা পূরণে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে কোকা-কোলা সিস্টেম বাংলাদেশ এবং দ্য কোকা-কোলা ফাউন্ডেশন। এ লক্ষ্যে ওয়াটার স্টুয়ার্ডশিপ ও উইমেন বিজনেস সেন্টার এর মতো কোম্পানিটির বৈশ্বিক উদ্যোগের দেশীয় সংস্করণগুলো দেশজুড়ে সমাজ উন্নয়নে কাজ করছে।