কোটবাড়ীতে জঙ্গির দেখা মেলেনি : ডিআইজি শফিকুল

জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে তিন দিন ধরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ঘিরে রেখেছিল কুমিল্লার কোটবাড়ীর একটি বাড়ি। শুক্রবার (৩১ মার্চ) বাড়িটিতে অভিযান চালানো হয়েছে। তবে সেখানে কোনো জঙ্গির সন্ধান মেলেনি। পাওয়া গেছে কেবল গ্রেনেড, বোমা ও সুইসাইডাল ভেস্ট।

শুক্রবার সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মোহা. শফিকুল ইসলাম এসব তথ্য জানিয়েছেন। জেলা পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত ওই সংবাদ সম্মেলন থেকে জানানো হয়, কোটবাড়ীর অদূরে গন্ধমতি এলাকার তিন তলা বাড়িটির একটি কক্ষে এসব বিস্ফোরকের সন্ধান মেলে। ওই কক্ষে প্রচুর গ্যাস থাকায় শনিবার সকাল পর্যন্ত অভিযান স্থগিত রাখা হয়েছে।

ডিআইজি শফিকুল ইসলাম বলেছেন, ‘আমাদের নিকট তথ্য ছিল ওই কক্ষে নোয়াখালীর আনিস কিংবা আনাস (২৩) এবং রাজশাহীর রনি (২২) অবস্থান করছে। কিন্তু গত বুধবার দুপুরে র‌্যাব-পুলিশ ওই ভবন ঘিরে ফেলার আগেই হয়তো জঙ্গিরা পালিয়ে যায়। তাই তাদের আটক করা সম্ভব হয়নি।’

তিনি আরও বলেছেন, ‘ওই কক্ষে ৪টি গ্রেনেড, ৫ কেজি ওজনের দুটি বোমা এবং দুটি সুইসাইডাল ভেস্ট পাওয়া গেছে। কিন্তু ওই কক্ষে প্রচুর গ্যাস থাকায় এগুলো উদ্ধার কিংবা নিষ্ক্রিয় করা যায়নি। শনিবার সকালে বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের সদস্যরা এসব বোমা ও গ্রেনেড নিষ্ক্রিয় করবেন।’

এর আগে শুক্রবার সকাল থেকে সোয়াট, র‌্যাব, ক্রাইম সিন ইউনিট, বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা সেখানে পৌঁছে জঙ্গিদের অচেতন করতে পাইপের মাধ্যমে কক্ষে গ্যাস প্রবেশ করান এবং কয়েক রাউন্ড টিয়ার সেল ও প্রায় ১০০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষণ করেন।

সকাল থেকে ঘটনাস্থলের পাশের প্রায় ২ কিলোমিটার এলাকায় নিরাপত্তার স্বার্থে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। এলাকার গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির লাইন বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। দিনভর অভিযান পরিচালনা করে সন্ধ্যায় এই অভিযানের তথ্য জানাতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত ডিআইজি মো. সাখাওয়াত হোসেন ও কুমিল্লার পুলিশ সুপার মো. শাহ আবিদ হোসেনসহ অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, আটক এক জঙ্গির দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গত বুধবার দুপুরের দিকে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে কোটবাড়ীর গন্ধমতিতে ওই তিন তলা বাড়িটি ঘিরে রাখে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। সেখানকার একটি কক্ষে তালা ঝুলিয়ে এবং সকল ভাড়াটিয়াদের বের করে এনে ভবনটির নিয়ন্ত্রণ নেয় র‌্যাব-পুলিশ। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, কুমিল্লার সিটি করপোরেশন (কুসিক) নির্বাচনের (বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত) কারণে বৃহস্পতিবার অভিযান না চালিয়ে পরদিন চালানো হবে। সেই সিদ্ধান্ত মোতাবেক শুক্রবার অভিযান চালানো হয়।