কোটালীপাড়ায় ১ হাজার ৫০০ বিঘা জলাবদ্ধ জমি চাষাবাদের আওতায় আসছে

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় জলাবদ্ধ ১ হাজার ৫০০ বিঘা জমি চাষাবাদের আওতায় আনতে কৃষি বিভাগ ব্যাপক কর্মযজ্ঞ চালিয়ে যচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিজ নির্বাচনী এলাকা কোটালীপাড়া উপজেলার কান্দি ইউনিয়নের প্রায় ৮ হাজার বিঘা জমি জলাবদ্ধ। এরমধ্যে ১ হাজার ৫০০ বিঘা জমিকে এ বছর বোরো ধান আবাদের আওতায় আনা হচ্ছে।

কোটালীপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিটুল রায় বলেন, জলাবদ্ধ ১ হাজার ৫০০ বিঘা জমি চাষাবাদের আওতায় আনতে কান্দি ইউনিয়নের ধারাবাশাইল বাজার হতে তরুরবাজার খালের ১০ কি.মি কচুরীপানা পরিস্কারসহ নাব্যতা ফিরিয়ে এনে পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থার কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। এসকাভেটরের সাথে স্থানীয়ভাবে উদ্ভাবনকৃত লোহার আচড়া সংযোজন করা হয়েছে। এ দিয়ে কচুরিপানা পরিস্কার করা হচ্ছে। এতে ১০ জন শ্রমিকের কাজ এসকাভেটর দিয়েই সম্ভব হচ্ছে।

খালের একপাশ দিয়ে ৩ কিমি পর্যন্ত কচুরিপানার ভাসমান বেড তৈরি করা হয়েছে। এখানে বিভিন্ন প্রকার শাকসবজি আবাদ করা হবচ্ছ ।এখনে কৃষক অন্তত ২৭ লাখ টাকার শাক সবজি উৎপাদন করবেন।

ওই কর্মকর্তা আরো জানান, জমি থেকে পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথেই স্থানীয় চাষিদের মাঝে বোরো ধানের চারা সরবরাহ করা হবে। এ চারা দিয়ে তারা তাদের জমিতে বোরো ধনের চাষাবাদ করবেন। চাষাবাদে শ্রমিক সংকট দেখা দিলে অন্য স্থান হতে শ্রমিক এনে দ্রুত জমি পরিস্কার ও ধানের চারা রোপণে কৃষি বিভাগ সহায়তা করবে।

কৃষিবিদ নিটুল রায় আরো বলেন,কান্দি ইউনিয়নের কৃষকদের চাষাবাদে উদ্ভুদ্ধ করনের লক্ষ্য নিয়মিত “কৃষি বৈঠক” করা হচ্ছে। এতে সকল শ্রেণি পেশার মানুষের মধ্য জাগরন তৈরি হয়েছে। এ সমস্ত কাযক্রম প্রধানমন্ত্রীর মনোনীত উন্নয়ন প্রতিনিধি মোঃ শহীদ উল্লাা খন্দকার ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস সার্বক্ষণিক মনিটরিং ও পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। এ কার্যক্রমে কোটালীপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফেরদৌস ওয়াহেদ, কৃষি অফিস, সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান ও সাধারণ জনগণের সমন্বয়ে এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, ১ হাজার ৫০০ বিঘা জমিতে বোরোধানের চাষাবাদ করা হবে। এখানে অন্তত ৬ কোটি টাকা মূল্যের ধান উৎপাদিত হবে। এতে কোটালীপাড়া উপজেলায় ধানের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। পাশাপাশি ভাসমান বেডে সবজির চাষাবাদ করে শাক-সবজির উৎপাদন বৃদ্ধিতে কাজ শুরু হয়ে গেছে।

কান্দি ইউপি চেয়ারম্যান তুষার মধু বলেন, আমাদের এলাকার জমিগুলো চাষাবাদের আওতায় আনতে কৃষি বিভাগ ব্যাপক কর্মকান্ড শুরু করেছে। তারা খালের কচুরি পানা পরিস্কার, খাল খনন করে জলাবদ্ধ জমি থেকে পানি নামিয়ে দিচ্ছে। এতে অন্তত ১ হাজার ৫০০ বিঘা জমি চাষাবাদের আওতায় চলে আসছে। কচুরিপানা দিয়ে খালের একপাশে ৩ কিঃমিঃ জুড়ে ভাসমান বেড তৈরী করে দিয়েছে। এখানে সবজির চাষাবাদ শুরু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা মোতাবেক কৃষি বিভাগ নিরলসভাবে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছে।

কান্দি ইউনিয়নের মাচারতারা গ্রামের কৃষক হরেকৃষ্ণ সিকদার (৫৬) বলেন,বছরের পর বছর আমাদের জমি জলাবদ্ধ থাকত। তাই চাষাবাদ করতে পারতাম না। এখন প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় খাল পরিস্কার ও খনন করা হচ্ছে। আমাদের জমি থেকে পানি নেমে যাচ্ছে। এই বছর চাষাবাদ করতে পারব। এছাড়া খালের কচুরিপানার ভাসমান বেডে আমরা সবজি চাষাবাদ শুরু করেছি। এ বছর আমরা অধিক ধান, শাক-সবজি পাবো। খবর-বাসস

আজকের বাজার/আখনূর রহমান