কোটা বাতিল নয়, যৌক্তিক সংস্কার চায় সংসদীয় কমিটি

ফাইল ছবি

সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান কোটা ব্যবস্থা বাতিল নয়, বরং যৌক্তিক সংস্কার চায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি।

রোববার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে কোটা এসব বিষয় নিয়েই আলোচনা হয়।

এ কমিটি মনে করছে, দেশ ও ইতিহাসের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকেই কোটা পদ্ধতি পুরোপুরি তুলে না দিয়ে সহজীকরণ করতে হবে।

জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোটা বাতিলের যে ঘোষণা দিয়েছেন, তা উল্লেখ করে বৈঠকে জন প্রশাসন সচিব  জানান, মন্ত্রণালয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের অপেক্ষায় রয়েছে । তার কাছ থেকে নির্দেশনা পাওয়ার পরেই কাজ শুরু করা হবে।

কমিটির সভাপতি এইচ এন আশিফুর রহমানের সভাপতিত্বে সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে আরও অংশ নেন কমিটি সদস্য ও জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেক, এ. বি. এম ফজলে করিম চৌধুরী, র. আ. ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, মুস্তফা লুৎফুল্লাহ, জয়া সেন গুপ্তা ও খোরশেদ আরা হক।

সংশ্নিষ্টরা জানিয়েছেন, এজেন্ডায় না থাকলেও রোববারের বৈঠকের বেশিরভাগ সময়জুড়েই কোটা পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা হয়। এতে কমিটির অধিকাংশ সদস্য কোটা বাতিল না করে সংস্কারের পক্ষে মত দেন।

বৈঠক শেষে এ বিষয়ে জানতে চাইলে কমিটি সভাপতি আশিকুর রহমান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী কোটা বাতিলের ঘোষণা দিয়েছেন ঠিকই, কিন্তু দেশ, ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধ, আঞ্চলিকতা ও পিছিয়ে পড়া ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ওপর আমাদের দায় আছে।’

তিনি বলেন, সংবিধানে সমতার কথা বলা আছে। পিছিয়ে পড়া গোষ্ঠির সুযোগ সুবিধার কথা বলা হয়েছে। এসব বিবেচনায় নিয়েই কমিটির পক্ষ থেকে কোটা পদ্ধতি সহজিকরণের সুপারিশ করা হয়েছে।

সূত্র জানায়, বৈঠকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোঃ মোজাম্মেল হক খান জানান, কোটা পদ্ধতি নিয়ে তারা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার অপেক্ষায় রয়েছেন।

 

বৈঠক শেষে সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান হয়, বৈঠকে শিক্ষা মন্ত্রাণালয়ের অধীনে বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র প্রণয়ন পদ্ধতি, গোপনীয়তা ও সুরক্ষা বিষয় এবং সরকারি কর্ম কমিশনের দক্ষতা ও মানোন্নয়নের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। পাশাপাশি ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরের বাজেটে দেশের ৪৮২টি থানায় স্বাস্থ্য খাতে এক কোটি টাকা করে বরাদ্দ, উপজেলা পর্যায়ে সরকারি স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রের ডেলিভারি রুমে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা নেওয়া এবং উন্নতমানের এ্যাম্বুলেন্স সরবরাহ করার জন্য স্বাস্থ্য ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করা হয়।

বৈঠকে বলা হয়, পাবলিক পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস ও নকল বন্ধ, পরীক্ষা পদ্ধতি ও পরীক্ষা কেন্দ্র কমানো এবং শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা যুগপোযোগী করার বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়।

এছাড়াও আগামী অর্থ বছরে প্রতিটি উপজেলায় একটি করে কলেজ সরকারিকরণ এবং এমপিওভূক্ত প্রক্রিয়া বিষয়টি ত্বরান্বিত করার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করা হয়। জেলা শহরে অনেক অনুমোদনহীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হচ্ছে সে গুলোর বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসককে একটি নীতিমালার আওতায় আনার বিষয়ে কমিটি সুপারিশ করে।

রাসেল/