কোটি টাকার স্মার্টফোন-ড্রোন জব্দ

????????????????????????????????????

রাজধানীর বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্স, গুলশান এভিনিউ মলি ক্যাপিটা সেন্টার, ধানমন্ডির অরচার্ড পয়েন্টসহ কয়েকটি মার্কেটে অভিযান চালিয়ে আইফোন, অত্যাধুনিক ড্রোনসহ বিপুল পরিমাণ চোরাই ফোন আটক করেছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর।

১৩ নভেম্বর বিকেলে এসব অভিযান চালানো হয়। শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্স, গুলশান এভিনিউ মলি ক্যাপিটা সেন্টার, ধানমন্ডির অরচার্ড পয়েন্টসহ কয়েকটি মার্কেটে অবৈধভাবে আমদানিকৃত মোবাইল ফোন সেট আটকে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়।

অভিযানে অত্যাধুনিক ড্রোনসহ বিপুল পরিমাণ মোবাইল ফোন আটক হয়েছে। এসময় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ ফোর্স এবং বিটিআরসি কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

শপিং কমপ্লেক্সে তাদের আসার খবর পেয়ে বসুন্ধরার ৬ তলা এবং নিচতলার মোবাইলে ফোনের অধিকাংশ দোকান বন্ধ করে ফেলেন দোকানিরা। এর মধ্যে ৩ টি দোকানে তারা ঢুকতে সমর্থ হন। এই দোকান ৩টি থেকেই শতাধিক মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।

ড. মইনুল খান বলেন, বসুন্ধরা মার্কেটের ৯টি দোকান, গুলশান এভিনিউর ১টি ও ধানমন্ডির অরচার্ড পয়েন্টে ১টিসহ মোট ১১টি দোকানে এই অভিযান পরিচালিত হয়।

এই অভিযানে চোরাইপথে আনীত আইফোন১০ সহ অন্যান্য মূল্যবান ব্র্যান্ডের প্রায় ২ শতাধিক মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। এইসব ব্র্যান্ডের মধ্যে আইফোন, স্যামসাং গ্যালাক্সি এস৮, নোকিয়া এক্স৩, ব্ল্যাকবেরি রয়েছে।

আটককৃত মোবাইল সেটগুলোর মধ্যে আইফোন১০ -১৫টি, অন্যান্য মডেলের আইফোন ১১৮টি, এপল আইপ্যাড ৮টি, স্যামসাং ৫৮টি, নোকিয়া ২টি, ভারটু ব্র্যান্ডের ১টি এবং ব্ল্যাকবেরি ২টি রয়েছে। আটক মোবাইলের মোট মূল্য প্রায় ১ কোটি টাকা।

দোকানগুলোর মধ্যে ফোনএক্সচেঞ্জ থেকে বেশি সংখ্যক চোরাই মোবাইল ফোনসেট উদ্ধার করা হয়। গুলশান ও বসুন্ধরা মার্কেটের ফোনএক্সচেঞ্জ এর দুটো শোরুম থেকে মোট ৮৮টি দামি সেট উদ্ধার করা হয়েছে।

বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, ফোনএক্সচেঞ্জ এর গুলশান শোরুম থেকে একটি অত্যাধুনিক ড্রোন উদ্ধার করা হয়েছে। ড্রোন বর্তমানে আমদানি নিষিদ্ধ পণ্য।

একইসাথে এই শোরুম থেকে ব্র্যান্ডের একটি এক্সক্লুসিভ মোবাইল ফোনসেট আটক করা হয়। এই সেটটি স্বর্ণ দিয়ে মোড়ানো এবং এর স্ক্রিনটি সলিড নীলকান্তমণির তৈরি। বাংলাদেশি টাকায় এই ফোনের মূল্য প্রায় ১৭ লাখ টাকা।

কাগজপত্র দেখাতে না পারায় ধারণা করা হচ্ছে এসব ফোনসেট অবৈধপথে এবং শুল্ক না দিয়ে আনা হয়েছে। বিটিআরসির কর্মকর্তারা আটককৃত সেটসমূহের আইএমইআই পরীক্ষা করে নিবন্ধিত নয় বলে নিশ্চিত করেন।

এ সেটগুলোতে শুধুমাত্র রাজস্ব ফাঁকি-ই দেয়া হয়নি, আইএমইআই নিবন্ধিত না থাকায় এগুলো রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। বিটিআরসির নিবন্ধন না থাকার কারণে এগুলো কোন সরকারি সংস্থা আইনগতভাবে ট্র্যাক করতে পারে না।

আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনির নজরদারি এড়িয়ে এই সেটগুলো ব্যবহার করে যেকোন ধরনের অপরাধমূলক কর্মকান্ড সংঘটিত হতে পারে।
আমদানি নীতি আদেশ, ২০১৫-১৮ অনুযায়ী, বাংলাদেশে যেকোন মোবাইল ফোনসেট বাণিজ্যিকভাবে আমদানি করতে হলে বিটিআরসি থেকে সেগুলোর আইএমইআই নম্বর পূর্বেই নিবন্ধিত করার বিধান রয়েছে।

উল্লেখ যে, আইফোন১০ মোবাইল সেটটির ব্যবহার এখনো বাংলাদেশে দাপ্তরিকভাবে উদ্বোধন করা হয়নি। বিটিআরসি থেকেও আইফোন১০ এর কোন নিবন্ধন প্রদান করা হয়নি। অথচ বাণিজ্যিক বিপণিবিতানগুলোতে এই সর্বশেষ ফোন অবাধে কেনাবেচা হচ্ছে।

একইসঙ্গে উল্লেখ্য, সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশন কর্তৃক রিট পিটিশন নং-৮৪১ (২০১৭) এর প্রদানকৃত নির্দেশনানুযায়ী চোরাইপথে এ অবৈধভাবে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে আনীত সকল মোবাইল ফোনসেট উদ্ধার ও আটকের বিষয়ে শুল্ক গোয়েন্দাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী আজ এই যৌথ উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।

অবৈধভাবে আনীত মোবাইল সেট আটকের বিরুদ্ধে শুল্ক গোয়েন্দার অভিযান শুরু হলো। আগামীতে এই ধরনের অভিযান নিয়মিতভাবে পরিচালনা করা হবে এবং আইন ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। আজকের অবৈধ মোবাইল ফোন ও ড্রোন আটকের ঘটনায় শুল্ক আইনে মামলা দায়ের করা হবে বলে জানান ড. মইনুল খান।

অভিযানে নেতৃত্ব দেন শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক জিয়া উদ্দিন, উপ পরিচালক এমইচএম শরিফুল হাসান ও সহকারী পরিচালক সহিদুজ্জামান সরকার।

আজকের বাজার:এলকে/এলকে ১৩ নভেম্বর ২০১৭