ক্রনিক মায়েলয়েড লিউকোমিয়া রোগ নিয়ে আতংক নয়: শারফুদ্দিন আহমেদ

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেছেন, দীর্ঘ মেয়াদী রক্তের ক্যান্সার ক্রনিক মায়েলয়েড লিউকেমিয়া বা সিএমএল রোগ নিয়ে আতংকের কিছু নেই। সুচিকিৎসার মাধ্যমে এই রোগ নিয়েও সুস্থ জীবন-যাপন সম্ভব। আজ বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘ মেয়াদী রক্তের ক্যান্সার আন্তর্জাতিক সিএমএল দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।

উপাচার্য বলেন, বিশ্বের ১৫১টি দেশে বাংলাদেশের ওষুধ রপ্তানি হচ্ছে। এটা স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নের একটি বিরাট অর্জন। ক্যান্সারসহ বিভিন্ন জটিল রোগের ওষুধ বর্তমানে দেশেই উৎপাদন হচ্ছে। বিএসএমএমইউয়ের হেমাটোলজি বিভাগ আয়োজিত র‌্যালি, সমাবেশসহ নানা আয়োজনের মাধ্যমে দিবসটি উদযাপিত হয়েছে।

হেমাটোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. সালাহউদ্দিন শাহের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. জাহিদ হোসেন, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. এ কে এম মোশাররফ হোসেন, মেডিসিন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মাসুদা বেগমসহ আরও অনেকে বক্তব্য রাখেন।

অধ্যাপক ডা. মো. সালাহউদ্দিন শাহ জানান, সাধারণত পঞ্চাশ বা ষাট বছরের পরে বেশি দেখা যায় এই রোগটি, তবে ত্রিশ বা চল্লিশের দশকেও অনেকে এই রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন। তুলনামূলকভাবে পুরুষরাই এ রোগে বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকে। সিএমএল রোগের ক্ষেত্রে রোগীদের দুর্বলতা, শেষ রাতে ঘাম হওয়া, ওজন হ্রাস পাওয়াসহ কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে।

পাশাপাশি অনেকের পেটের বামপাশে চাকা বা ভারী অনুভুতি থাকতে পারে যা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেতে থাকে। তিনি আরো জানান, ফলে অনেকেই খাবার খেতে না পারা বা অল্প খেলে পেট ভরে যাবার সমস্যায় পড়তে পারেন। অনেকের ক্ষেত্রে রোগ থাকা সত্ত্বেও রোগের কোনো প্রকার লক্ষণ প্রকাশ পায় না বরং রুটিন চেক আপ বা অন্য রোগের কারণে পরীক্ষা করতে গিয়ে এ রোগ ধরা পড়ে। নিয়মিত ওষুধ সেবন এবং যথাযথ মনিটরিং করা সম্ভব হলে অধিকাংশ রোগিই প্রায় স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারেন। তবে কিছু কিছু রোগির ক্ষেত্রে এলোজেনিক হেমাটোপয়েটিক স্টেম সেল বা বোনমেরো ট্রান্সপ্লান্টেশন এর মাধ্যমে রোগ নিরাময় সম্ভব। তিনি আরো বলেন, সিএমএল যেহেতু দীর্ঘ মেয়াদী রোগ, তাই অনেক ক্ষেত্রেই হতাশা, দুশ্চিন্তা দেখা দিতে পারে, কারো ক্ষেত্রে আর্থিক সমস্যাও থাকতে পারে। সে জন্য সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। জাতীয় পর্যায়ে সিএমএল রোগীদের রেজিস্ট্রি তৈরি করার মাধ্যমে তাদের সঠিক সংখ্যা নির্ণয় করা এবং তাদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করণে রাষ্ট্রীয় পরিকল্পনা প্রণয়ন অত্যন্ত জরুরি। তথ‌্য-বাসস

আজকের বাজার/আখনূর রহমান