ক্রেতার ঘাড়ে পেঁয়াজ রপ্তানিতে ভারতের নিষেধাজ্ঞার বোঝা

পেঁয়াজের দাম পাইকারি বাজারে কেজি প্রতি ২৫-৩৫ টাকা কমলেও, খুচরা পর্যায়ে এর তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি।

পেঁয়াজ রপ্তানিতে ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক সপ্তাহ পর সোমবার ঢাকার বিভিন্ন বাজার ও দোকানে দেশি জাতের পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৯০-১০০ টাকা এবং আমদানিকৃত পেঁয়াজ ৫০-৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

নিষেধাজ্ঞার আগে ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ এখন দেশে আসায় এবং টিসিবির মাধ্যমে বিক্রয় করা সত্ত্বেও, খুচরা বাজার ও অনলাইনে এখনও দাম একই রয়েছে।

চালডাল ডটকম, মীনাক্লিক, স্বপ্ন এবং অন্যান্য অনলাইন বাজারে দেশি পেঁয়াজ কেজি প্রতি ৮০-১০২ টাকা এবং ভারতীয় পেঁয়াজ ৬০-৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

মৌমি খন্দকার নামে একজন ব্যাংকার ইউএনবিকে জানান, এক সপ্তাহের ব্যবধানে ৩০ টাকা বেড়ে সোমবার পেঁয়াজের দাম ছিল ৯০ টাকা প্রতি কেজি।

শনির আখড়ার ব্যবসায়ী শাহ আলম জানান, বাজারে পেঁয়াজের দাম কমার কোনো লক্ষণ নেই।

সুমন পাটোয়ারী নামে চালডাল ডটকমের নিয়মিত এক গ্রাহক ইউএনবিকে জানান, তিনি এক কেজি পেঁয়াজ ৯০ টাকায় কিনেছেন, যা এক সপ্তাহ আগে ৫৮ টাকা ছিল।

তিনি বলেন, ‘কোনো কারণ ছাড়াই কেন দাম এত বেশি তা আমরা বুঝতে পারি না। আমাদের দেশের ব্যবসায়ীরা অনেক দুর্নীতিগ্রস্ত। সরকার প্রতিবারই বাজার নজরদারি করতে ব্যর্থ হয়।’

ঢাকা শহরে ৪০টিসহ ২৭৫টি ট্রাক পয়েন্টের মাধ্যমে ওএমএস কার্যক্রম অব্যহত রেখেছে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)।

টিসিবি ভর্তুকি দিয়ে ৩০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি করছে এবং অনলাইন শপের মাধ্যমেও পেঁয়াজ বিক্রি করবে ৩৬ টাকা করে।

দেশের পেঁয়াজের বাজার স্বাভাবিক করতে সরকার পেঁয়াজ আমদানিতে পাঁচ শতাংশ শুল্ক প্রত্যাহার করে নিয়েছে।

সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এ সিদ্ধান্ত ২০২১ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলছে, দেশে বর্তমানে মাসিক ২ লাখ টন পেঁয়াজের চাহিদার বিপরীতে মজুদ রয়েছে ৫ লাখ টন।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, বাংলাদেশে পেঁয়াজের বার্ষিক চাহিদা ২২ থেকে ২৫ লাখ টনের মধ্যে থাকে। গত এক দশকে দেশের নিজস্ব বার্ষিক উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি পেঁয়াজ আমদানিও বেড়েছে।

ভারতের রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার পরপরই স্থানীয় বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করতে একাধিক উৎস থেকে পেঁয়াজ আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ।

সরকার ইতোমধ্যে তুরস্ক ও মিশর থেকে পেঁয়াজ আমদানির পদক্ষেপ নিয়েছে বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

চালানগুলো আগামী মাসের প্রথম দিকে চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি নিরবচ্ছিন্ন রাখেতে দিল্লিকে যত দ্রুত সম্ভব নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের অনুরোধ জানিয়েছে ঢাকা।