খাগড়াছড়িতে টানা ভারী বর্ষণের ফলে বেড়েছে আরও পাহাড় ধসের ঘটনা

টানা বৃষ্টিতে খাগড়াছড়িতে পাহাড় ধসের ঘটনা বেড়েছে। ঝুঁকি জেনেও শুধু পৌর এলাকায় পাহাড় ধসের ঝুঁকিতে বসবাস করছে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার এর বেশি পরিবার। বৃষ্টি বাড়লে বাড়বে পাহাড় ধসের ঘটনা। স্থানীয়রা বলছে বাধ্য হয়েই ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে। সে সাথে থামছে না পাহাড় কেটে বসতি স্থাপন। ফলে এ বর্ষা মৌসুসে খাগড়াছড়িতে আবারও পাহাড় ধসে জানমালের ক্ষতির শংকা প্রবল হয়ে উঠেছে। এ অবস্থায় ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে কাজ করছে প্রশাসন। আর ধস রোধে পাহাড় কাটা বন্ধে জিরো টলারেন্স এর কথা বলছে জেলা প্রশাসন।

গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণে খাগড়াছড়ি জেলায় দেখা দিয়েছে পাহাড় ধস। সে সাথে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারী এ সব পরিবারের মাঝে দেখা দিয়েছে উদ্বেগ-উৎকন্ঠা।গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণে খাগড়াছড়ি শহরের সবুজবাগ,শালবাগান,কুমিল্লটিলা,কলাবাগানসহ শহরতলীর বিভিন্ন এলাকায় পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে। পাহাড় ধসে ২টি পাঁকা ঘর বাড়িও ভেঙে গেছে। এছাড়া বেশকিছু ঘরবাড়ি ধসে গেলেও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। বৃষ্টি বাড়লে এসব জায়গায় ধসের শঙ্কা করছে প্রশাসন। তবে মাইকিং করেও বসবাসকারীতে সরানো যাচ্ছে না। জেলার বিভিন্ন এলাকায় পাহাড়ের ঢালে ঢালে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাস করছে ৩৫ হাজার পরিবার। বিগত বছরগুলোতে পাহাড় ধসে প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে। এদিকে শহরের বেশ কয়েকটি স্পটে পাহাড় কেটে বা পাহাড়ের পাদদেশে অপরিকল্পিতভাবে বাড়িঘর নির্মাণ বেড়ে চললেও পাহাড় কেটে বাড়িঘর নির্মাণ বন্ধে প্রশাসন কোন পদক্ষেপ দেখা যায়নি। অপর দিকে পাহাড়ে পাদদেশে বসবাসকারীরা বলছে, থাকার জায়গা নাই তাই জীবনের ঝুকিঁ নিয়ে তারা পাহাড়ের পাদদেশে বসবাস করতে বাধ্য হচ্ছে।

পাহাড়ের পাদদেশে বাসবাসকারীরা জানান আমরা গরীব মানুষ কাজ কাম করে থাকি। এখানে পাহাড়ে ঘর করে থাকি। বৃষ্টি আসলে মাটি ভাঙা শুরু হয়। আমরা ঝুঁকি নিয়েই আছি। বৃষ্টি বাড়লে পাহাড় ধসের ভয়ে আমাদের রাতে ঘুম হয় না। ছেলে মেয়ে নিয়ে আতংকে বসে থাকি।

খাগড়াছড়ি পরিবেশ সুরক্ষা আন্দোলন এর সভাপতি প্রদীপ চৌধুরী জানান, পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারীদের অন্যত্র পুনর্বাসনের উদ্যোগ না নিয়ে ভয়াবহ প্রাণহাণির আশংকা রয়েছে। খাগড়াছড়ি পৌরসভার মেয়র মো: রফিকুল আলম বলেন পৌর সভা ও জেলা প্রশাসন ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসকারীদের সরিয়ে নিতে কাজ করছে । এ ছাড়া আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে।সচেতনতা মূলক পৌর এলাকায় মাইকিং করা হচ্ছে।

এদিকে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস জানান ,পাহাড় ধস রোধে স্থায়ী পদক্ষেপ হিসেবে পাহাড় কাটা বন্ধের উপর জোর দিয়েছে জেলা প্রশাসন। পাহাড় কেটে কেউ রক্ষা পাবে না ।পাহাড় কাটা বন্ধে প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন জেলার এ শীর্ষ কর্মকর্তা। এদের প্রতি জিরো টলারেন্স দেখানো হবে। জেলা প্রশাসনের তথ্য মতে পৌর এলাকায় ৩০ টি ঝুঁকি পূর্ণ স্থানে ৩ হাজার পরিবারসহ পুরো জেলায় ঝুঁকিতে বসবাস করছে প্রায় ৩৫ হাজার পরিবার। খবর-বাসস

আজকের বাজার/আখনূর রহমান