গাজার শরণার্থী শিবিরে ‘নির্মম বেদনাদায়ক’ ভয়ংকর হামলার নিন্দা জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কর্মীরা সোমবার গাজার একটি হাসপাতাল পরিদর্শন করেছেন যেখানে গাজার একটি শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি ভয়ংকর ও নৃশংস হামলায় হতাহতদের রাখা হয়েছে। তারা নিহতদের পুরো পরিবারের দুঃখজনক ঘটনার বর্ণনা শুনেছেন এবং মৃত শিশুদের দেখেছেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রিয়েসিস এক্স-এ বলেছেন, ‘ডাব্লিউএইচওর দল সেখানে স্বাস্থ্যকর্মী এবং নৃশংস হামলার শিকার লোকদের কাছ থেকে ভয়াবহ হামলার ঘটনা সম্পর্কে চরম বেদনাদায়ক বর্ণনা শুনেছেন।’

তিনি বলেন, ‘শরণার্থী শিবিরে হামলায় একটি শিশু তাদের পুরো পরিবারকে হারিয়েছে। হাসপাতালের একজন নার্সও একই ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।’
হামাস পরিচালিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, আল-মাগাজি শরণার্থী শিবিরের তিনটি বাড়িতে রোববার গভীর রাতে ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৭০ জন নিহত হয়েছে।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে, তারা ‘ঘটনাটি পর্যালোচনা করছে’ এবং ‘বেসামরিকদের ক্ষতি কমাতে সম্ভাব্য পদক্ষেপ গ্রহণসহ আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ’।
একটি গণ কবরে সমাহিত করার জন্য সাদা ব্যাগে ঢেকে রাখা নিহতদের লাশের সারি মধ্য গাজার দেইর আল-বালাহ-এর আল-আকসা হাসপাতালে রাখা হয়েছে।
টেড্রোস বলেন, ইসরায়েলি হামলায় বিস্ফোরণে প্রায় ১০০ জন নিহত হওয়ার কথা জানিয়েছেন আল-আকসা হাসপাতালের কর্মীরা।

তিনি বলেন, কর্মীরা পরিচালনা করতে পারে এমন সক্ষমতার বাইরে এবং হাসপাতালটির শয্যা ধারণ ক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি রোগী রয়েছে।
রোগীদের ‘অনেকেই মৃত্যুর অপেক্ষায় রয়েছে’ একথা উল্লেখ করে তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, গাজাবাসীদের ওপর সর্বশেষ এই হামলা প্রমাণ করে কেন আমরা একটি যুদ্ধ বিরতির  #ঈবধংবভরৎবঘঙড দাবী জানাচ্ছি। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, ইসরায়েলের অবিরাম হামলা ও স্থল অভিযানে কমপক্ষে ২০,৬৭০ জনকে হত্যা করেছে। এদের বেশিরভাগই মহিলা এবং শিশু।
ডব্লিউএইচওর ইমার্জেন্সি মেডিক্যাল টিমের সমন্বয়কারী শন ক্যাসি, যিনি সোমবার আল-আকসা হাসপাতালের মিশনে ছিলেন, ডাক্তাররা আহমেদ নামে গুরুতর আহত নয় বছর বয়সী একটি ছেলেকে ব্যথা উপশমের ব্যবস্থার বর্ণনা দিয়েছেন।

আল-আকসার ভিতরে একটি ভিডিওতে হাসপাতালে তার কান্নার স্বর শোনা যাচ্ছিলো। শিশুটি মারা যাওয়ার আগে তার কষ্ট লাঘবে চেষ্টা করা হচ্ছে। মূলত মৃত্যুর অবসাদ এই কষ্ঠ থেকে মুক্তি দেবে।
শন ক্যাসি বলেন, ‘শিশুটি আশ্রয়কেন্দ্রের সামনে রাস্তা পার হচ্ছিল যেখানে তার পরিবার থাকে এবং তার পাশের ভবনটি বিস্ফোরণে উড়িয়ে দেয়া হয়।’
বিষ্ফোরণের ধ্বংসস্তুপ থেকে ছিটকে আসা ধারালো বস্তুর আঘাতে শিশুটি গুরুতর আহত হয়েছে। তার মাথার মগজ দেখা যাচ্ছিলো। এখানে এর কোন চিকিৎসার সুযোগ নেই।
ডাব্লিউএইচও সতর্ক করেছে যে, গাজার মূল ৩৬টি হাসপাতালের মধ্যে মাত্র নয়টি আংশিকভাবে কার্যকর রয়েছে। (বাসস ডেস্ক)